এত রক্ত শুধু নির্বাচনের জন্য দেইনি: গণঅভ্যুত্থানের এক শহীদের বাবা
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেছেন, 'আমরা শুধু একটি নির্বাচনের জন্য এত রক্ত দেইনি।'
ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের (এফবিএস) আয়োজনে ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে 'ঐক্য কোন পথে' শীর্ষক এ সংলাপ শুরু হয়।
সংলাপে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্বজন ও আহত ব্যক্তিরা গণহত্যায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
আবুল হাসান ছেলের মৃত্যুর কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, 'ছেলের জানাজা এলাকায় করতে দেওয়া হয়নি।'
সংলাপের শুরুতে কথা বলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আবু বকর, নিহত ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল ইসলাম, উত্তরা চব্বিশের সংগঠক মনিশা মাফরুহা, নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান।
আবু বকর বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানের চার মাসের মধ্যেই সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করেন।' এটিকে জাতির জন্য ব্যর্থতা ও গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের জন্য অপমানজনক বলে দাবি করেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় আদৌ বিচার হবে কি না, প্রশ্ন তোলেন রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, 'একটি হত্যাকাণ্ডে একজন করে পুলিশ জড়িত থাকলে এক হাজার পুলিশ গ্রেপ্তার হতো। দুজন করে জড়িত থাকলে দুই হাজার পুলিশ গ্রেপ্তার হতো। কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে ২৩ জন পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের কতজন গ্রেপ্তার হয়েছে? তাহলে আমরা বিশ্বাস করব কীভাবে বিচার হবে?'
নিহত পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সহায়তার বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান মনিশা মাফরুহা।
সংলাপের উদ্বোধন করেন গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় নিহত নাফিসের বাবা গোলাম রহমান। সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গোলাম রহমান তার ছেলের নামে একটি রাস্তা ও মেট্রোরেলের স্টেশনের নামকরণের দাবি জানান।
এর আগে মঞ্চে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্বজন ও আহত ব্যক্তিদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।