আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার শেষ হবে: আসিফ নজরুল
আগামী বিজয় দিবসের আগেই জুলাই গণহত্যার বিচার শেষ হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজিত "একতা, সংস্কার, এবং নির্বাচন" শীর্ষক জাতীয় সংলাপের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি প্রধান কাজ আছে– গণহত্যার বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন।
তিনি বলেন, "আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমার প্রধান দায়িত্ব হলো, গণহত্যার মামলা পরিচালনা করা।" তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গঠনের শুরুতে কোনো বিচারক বা তদন্ত কর্মকর্তা ছিল না। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে একটি প্রসিকিউশন দল গঠন করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, "বিচারিক প্রক্রিয়া তাড়াহুড়ো করে বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। আইনি প্রক্রিয়ায় কোনো অবহেলা হবে না এবং বিচারিক কার্যক্রমে কোনো দেরি হবে না।"
এদিকে, সংলাপে উপস্থিত থাকা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম প্রধান অভিযুক্তদের বিচারকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং জোরপূর্বক গুমের বিচার করা। এই অপরাধগুলোর নির্দেশদাতা প্রধান অভিযুক্তদের বিচার করা আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা হাজার হাজার মানুষের বিচার করতে পারব না, এটি সম্ভব নয়। আমরা সে লক্ষ্যেও আগাচ্ছি না।"
তাজুল ইসলাম মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপক ও সুসংগঠিত প্রকৃতি তুলে ধরে বলেন, এই অপরাধগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সংযোগ এবং পুরো বাহিনীর সম্পৃক্ততা ছিল।
তিনি বলেন, "এখন যদি আমরা সারা দেশে সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে চাই, তা এই ট্রাইব্যুনালের পক্ষে সম্ভব নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত প্রধান অভিযুক্তদের বিচার করা হয়। তাই আমরা প্রথমে শেখ হাসিনাকে, যিনি এখানে প্রধান পরিচালক ছিলেন এবং তার অধীনস্থ কয়েকজনের বিচার করার চেষ্টা করছি।"
প্রধান প্রসিকিউটর আশা প্রকাশ করেন, প্রধান অভিযুক্তদের বিচার এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন হতে পারে।
তিনি বলেন, "আমরা তাদের বিচার যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে চাই। আমরা মনে করি, এটি সম্ভব হবে। তবে বিভিন্ন থানা ও আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর প্রক্রিয়া শেষ করতে কত সময় লাগবে, তা সংশ্লিষ্ট আদালতই বলতে পারবেন।"