২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১,৮৮০ কোটি টাকার ক্ষতি: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
২০২৪ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২১,৮৮০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আজ বুধবার তারা এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
২০১৪ সালে ৬,৯২৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় গত বছর ৭,২৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১২,০১৯ জন আহত হয়েছেন। নারীদের মধ্যে এ মৃত্যুর হার ১২ দশমিক দুই চার শতাংশ অর্থাৎ ৮৯৩ জন এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ১৫ দশমিক সাত নয় শতাংশ অর্থাৎ এক হাজার ১৫২ জন।
বিভিন্ন দৈনিক জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত এবং তাদের নিজস্ব গবেষণার ভিত্তিতে সংগঠনটি এই তথ্য প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক রোড অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম (আইআরএপি) পদ্ধতি অনুসরণ করে হিসাবের সাথে অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ যোগ করা হয়েছে, যা সংবাদ মাধ্যমে অপ্রকাশিত রয়েছে।
এমন সমন্বয়ের পরও সড়ক দুর্ঘটনার আরও অনেক তথ্য এখনও অপ্রকাশিত থেকে যায় বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন (আরএসএফ)।
এর ফলে আর্থিক ক্ষতি প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যের তুলনায় বেশি হতে পারে। পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ এই হিসাবের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে ২,৬০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ৩৫.৭৬ শতাংশ। এছাড়া ২১.০৪ শতাংশ পথচারীরা এবং ১৩.৪৯ শতাংশ চালক ও তাদের সহকারীরা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
এছাড়াও, তিন চাকার যানবাহন (ইজিবাইক, সিএনজি এবং অটোরিকশা) দুর্ঘটনায় ১,৩৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ১৯.০৮ শতাংশ।
এই সময়ে ১১৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৫২ জন নিহত, ১৬১ জন আহত এবং ৩৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩৪৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন নিহত এবং ২৭৭ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৩৫৭টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৭৩৬টি আঞ্চলিক সড়কে, ৯৭২টি গ্রামীণ সড়কে, ৭৮৪টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৭৮টি সংঘটিত হয়েছে।
এছাড়া দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে যাত্রীবাহী বাস ১৪৫৩, পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক- কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি- ট্রাক্টর-ড্রাম ট্রাক-আর্মি ট্রাক-তেলবাহী ট্যাংকার-কার্গো ট্রাক-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক) ৩১৪৫, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৬৪২, মোটরসাইকেল ২৯৭৮, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২১৮৫, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম ইত্যাদি) ৭৮২, বাইসাইকেল-রিকশা ২৯৪ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ৩১৭টি।
এছাড়া ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। ১৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১৮৪০ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৪৩৫টি দুর্ঘটনায় ৪৪৩ জন নিহত হয়েছেন।