জুলাই অভ্যুত্থানের ছবি ফুটিয়ে তুলতে ড্রোন শো আয়োজন করবে সরকার
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের আইকনিক ইমেজগুলো থ্রিডি'র মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে এবার 'ড্রোন শো' এর আয়োজন করতে যাচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। 'তারুণ্যের উৎসব ২০২৫' এর অংশ হিসেবে এই আয়োজন করা হচ্ছে।
২,৫০০ ড্রোনের মাধ্যমে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে এ আয়োজন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকতে পারে বলে জানা গেছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই আয়োজনের ব্যয় এখনও নির্ধারণ না হলেও চীন থেকে এসব ড্রোন আনা-নেওয়া বাবদ খরচ হবে প্রায় ৫ লাখ ডলার। চীনের কাছে ইতোমধ্যে সহায়তা হিসাবে এই অর্থ চাওয়া হয়েছে।
তবে পুরো আয়োজনে কিছু খরচ বাংলাদেশ সরকারকে বহন করতে হবে। চীন থেকে যেসব কর্মী আসবেন, তাদের থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, পারস্পরিক বন্ধুত্ব সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এ সময় ফারুকী চীনের কাছে এই প্রস্তাব দেন এবং চীনা দূতাবাসও এতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ মুখলেসুর রহমান আকন্দ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "এই ড্রোন শো'র জন্য প্রাথমিকভাবে সংসদ ভবন এলাকাকে বাছাই করা হয়েছে। তবে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার নিরাপত্তায় ওই এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করার বিষয়ে মতামত চেয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।"
এছাড়া ৫ সদস্যের চীনের একটি অগ্রগামী প্রতিনিধি দলও ভেনু পরিদর্শনে আগামী ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি। এরপরেই চূড়ান্ত হবে ভেনু।
তিনি জানান, এই ড্রোন শো করতে কত টাকা খরচ হবে তার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির হিসাবের পর পুরো খরচের বিষয়ে জানা যাবে। বাংলাদেশ ও চীনের ৫০ বছরের সম্পর্ক উদযাপনের অংশ হিসাবে চীন এ সহায়তা দেবে।
এই বিষয়ে কথা বলতে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "এ বিষয়ে এখনও মন্তব্য করার কিছু নেই।"
ড্রোন শো'র বিষয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, (সচিবের রুটিন দায়িত্বে) মো: মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ড্রোন শো'তে জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইকনিক ইমেজসমূহ থ্রিডি আকারে প্রদর্শন করতে হবে। এই শো'তে ড্রোনের পাশাপাশি মিউজিক এবং লাইটও ব্যবহার করা হবে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ ডিসেম্বর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠিতে ড্রোন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ড্রোন শো আয়োজনে বৈদেশিক সহায়তা নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানানো হয়।
ড্রোন শো আয়োজনের আগে ভেন্যু পরিদর্শনের জন্য চীন থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি টিম এবং পরবর্তীতে ১৬-২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিনের জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি টেকনিক্যাল টিম বাংলাদেশে আসবে।
বাংলাদেশ আয়োজক দেশ হিসেবে চীনের টেকনিক্যাল টিমের আবাসন, আপ্যায়ন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যাতায়াতের জন্য গাড়ি ও জ্বালানির ব্যয়ভার ইত্যাদি বহন করবে।
এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে ১৫ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্ট টিম চীনা টিমের সহায়তায় কাজ করবে বলে জানা গেছে।