চট্টগ্রামে বাণিজ্য মেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত ১
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় বিএনপি ও যুবদল নেতাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ১১টায় মিরসরাই স্টেডিয়াম ও মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে।
সংঘর্ষের ঘটনায় মো. মুন্না (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি মিরসরাই পৌরসভার উত্তর গোভানিয়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। এছাড়া, অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের তথ্যমতে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরসরাই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম ও সদস্য সচিব জাহিদ হোসেনের অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরে মেলার গেটে সিএনজি অটোরিকশার টোল আদায় নিয়ে জাহিদের অনুসারীদের ওপর কামরুলের অনুসারীরা হামলা চালায়।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে জাহিদের অনুসারীরা মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। রাত ১১টার দিকে কামরুলের অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় জাহিদের অনুসারী মুন্না তাদের সামনে পড়লে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
সেবা আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান সরকার জানিয়েছেন, মারামারিতে আহত ৮ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে মুন্নার ডান পায়ের ঊরুতে ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত ছিল, যা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও, পথেই তার মৃত্যু হয়।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, "পৌরসভা বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতার অনুসারীদের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের জেরেই এ সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।"
এদিকে, সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির পরিবার বাদি হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ্য করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পরবর্তীতে রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসান (৩৭), মো. নাজমুস সাকিব মারুফ (২২), মো. শাহ আলম (৪৭) এবং মো. আরমান (২৬)।