সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশনা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে পৌঁছেছে বলে সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত 'নিউজ আপডেট' থেকে জানা গেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট বিচারপতিদের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে ঠিক কতজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে, সে তথ্য এখনও জানা যায়নি।
এর আগে বিচারপতিদের আচরণ সম্পর্কিত কিছু তথ্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। গত ১৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিলেন, বিচারপতিদের অপসারণ সম্পর্কিত সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে এ তথ্য প্রেরণ করা হয়েছিল।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬ (৫) (বি) অনুসারে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুসারে, গত ৪ ডিসেম্বর বিচারপতিদের আচরণের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু হয়েছিল। রোববার জানানো হয়, সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতিদের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে তথ্য প্রেরণ করেছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।
১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ছিল জাতীয় সংসদের হাতে। ১৯৭৫ সালের সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরবর্তীকালে, জিয়াউর রহমানের শাসনামলে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা পায়। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা সংসদের কাছে পুনঃস্থাপন করা হয়।
এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার পর ২০১৬ সালে হাইকোর্ট ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন। ২০১৭ সালে আপিল বিভাগও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
এরপর ২০২৪ সালের অক্টোবরে আপিল বিভাগের রিভিউ পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি হয়। এ প্রক্রিয়ার পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয়।
বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যাচাই-বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণ করে। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতির সমন্বয়ে এ কাউন্সিল গঠিত হয়।
এর আগে, অন্তত ১৫ জন বিচারপতিকে বিচার কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিনজন পদত্যাগ করেছেন এবং একজন অবসরে গেছেন।