বাজার কারসাজি ঠেকাতে সরকারের খাদ্য মজুদ বাড়ানো হবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের খাদ্য পরিস্থিতি সন্তোষজনক হলেও বাজারে তার প্রতিফলন নেই। সরকারের হাতে পর্যাপ্ত মজুদ না থাকলে– ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ম্যানুপুলেট (বাজার কারসাজি) করতে চেষ্টা করে। সেজন্য আমদানির মাধ্যমে সরকারের খাদ্য মজুদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "সরকার যেসব খাতে খাদ্য সরবরাহ করে–- সেগুলোতে সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। তাই খাদ্য মজুদ করতে চাই। তা না থাকলে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেবার চেষ্টা করে। তাই আমদানি করে হলেও– সবসময় মজুদ যথাযথ রাখতে চাই।"
এসময় খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, অকাল বন্যার কারণে আউশ ও আমনের উৎপাদন– লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়নি। ফলে সরকারের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহে ঘাটতি আছে। আগামী বোরো মৌসুমে ভালো ফলন হলে ঘাটতি কমবে।
তিনি বলেন, সরকার বোরো মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করবে না। এজন্য চাল ও গম আমদানি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি করা গেলে খরচ কম হয়। কিন্তু অন্যান্য দেশ থেকেও আমদানি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি ঘাটতি হবে না।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, "চাল ও গম মিলিয়ে ১০ লাখ টন আমদানি পাইপলাইনে আছে। বোরো সংগ্রহ চাহিদা অনুযায়ী না হলে আমদানির পরিমাণ আরো বাড়বে। যে কোন ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছে সরকার। ভারত ছাড়া মিয়ানমার থেকে ১ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বেশিরভাগ চাল কেনা হচ্ছে। ভারতে দাম কম ও পরিবহন সহজ। তবে অন্য দেশ থেকেও আনা হবে। পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন ও ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ টন আমদানি করা হবে। আর বিশ্ববাজার থেকে ৩ লাখ টনের মতো গম আমদানি হবে। যার বেশিরভাগই রাশিয়া থেকে।"
তিনি বলেন, বাজারে চালের দামের অস্থিরতা কিছুটা কমেছে। যদিও ক্রমান্বয়ে দাম কমে আসছে।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "কারও প্রেসক্রিপশন বা মহার্ঘ ভাতার জন্য ভ্যাট বাড়ানো হয়নি। রাজস্ব আয় বাড়াতেই ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বা কর বাড়ানো হয়নি। যেসব পণ্যের ভ্যাট বেড়েছে— সেগুলো অত্যাবশ্যকীয় না। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের রাজস্ব আয় অন্যতম কম। এতো কম ট্যাক্স দিয়ে ভালো কিছু প্রত্যাশা করা ঠিক নয়।"
তিনি বলেন, "১২৫ টাকা দিয়ে পৃথিবীর কোন দেশে চশমা পাওয়া যায়? খাবেন ৬০০/৭০০ টাকা, কিন্তু ভ্যাট দিবেন না! গ্লোরিয়া জিন্স থেকে কফি খাবেন, ওখানে ১৫ টাকা দিতে বাধছে। এমন প্রবণতা হলে তো কঠিন।"