ব্যাংকে বিপুল দায়দেনা, বেক্সিমকোর কারখানাগুলো চালু করা সম্ভব না: শ্রম উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বেক্সিমকো শিল্পপার্কের কারখানাগুলো আবার চালু করা সম্ভব না। এসব কারখানার বিপরীতে এত দায়দেনা রয়েছে— যে চালানোর উপযুক্ততা হারিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আয়োজিত 'বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির' প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এবং শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সাখাওয়াত হোসেন বেক্সিমকো গ্রুপের দায়দেনা, শ্রমিকদের কর্মকাণ্ড ও সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গত ২১ জানুয়ারি বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কর্মচারী ও শ্রমিকরা গাজীপুরের শ্রীপুর মায়ানগর মাঠে জমায়েত হয়ে লে-অফ প্রত্যাহার করে ফ্যাক্টরিসমূহ খুলে দেওয়ার দাবি জানান। তারা ঘোষণা দেন, ২২ জানুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে কারখানাগুলো খুলে না দিলে— ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধসহ শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে। কিন্তু, তারা অগ্নিসংযোগের মত কর্মকাণ্ড করেছে। যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়, এবং এদের সকলকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
তিনি জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের মোট ৩২ কারখানার মধ্যে ১৬টির কোনো অস্তিত্ব নেই, কিন্তু উক্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। ১২টি কারখানার ব্যবস্থাপক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লে-অফ করা হয়েছে, যা সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নয়। মাত্র তিনটি ফ্যাক্টরি বর্তমানে চালু রয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আরও জানান, ৩২টি কারখানার বিপরীতে ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকাসহ বেক্সিমকো লিমিটেড এর মোট ব্যাংক ঋণ বর্তমানে ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে শুধুমাত্র জনতা ব্যাংকের পাওনা ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বকেয়া-বেতন ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন বেক্সিমকো শিল্প পার্কের শ্রমিকরা। এতে শিল্পাঞ্চলে শ্রম অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছিল। এই অবস্থায়, 'বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি' গঠন করে।
ইত্তোমধ্যে কমিটি পাঁচটি সভা করেছে। প্রথম সভা হয় গত বছরের ২৮ নভেম্বর। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংক ঋণ দিয়ে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের শ্রমিকদের তিন মাসের বকেয়া বেতনের অর্থ প্রদান করা হয়। সবশেষ চলতি জানুয়ারি মাসের বেতনও উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেওয়ার প্রস্তুতি আছে।
এছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে ৫০ কোটি টাকা এবং সরকারের কেন্দ্রীয় তহবিল হতে ১০ কোটি টাকা সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।