বাড়ার পর কতো বেতন হলো বাংলাদেশের আম্পায়ারদের
ক্রিকেটে টাকা থাকলেও আম্পায়ারিংয়ে সেটা নেই বলে অনেকেই এই পেশায় আসে না; বাংলাদেশের অনেক আম্পায়ারই এভাবে বলে থাকেন। তাদের বেতন কাঠামো দেখলে যে কারও কাছেই এমনটা মনে হবে। বিষয়টি নিয়ে বেশ আগে থেকেই কাজ করার কথা জানিয়ে আসছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ার্স কমিটি। তাদের সেই কাজের ফল এসেছে, বেতন বেড়েছে পে-রোলের অধীনে থাকা আম্পায়ারদের। বেতন বাড়ানো হয়েছে ম্যাচ রেফারি, স্কোরারদেরও।
গত ২৫ জানুয়ারির বোর্ড সভায় আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি ও স্কোরারদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন বেতন কাঠামোও তৈরি করা হয়েছে। এই কাঠামোতে পে-রোলের অধীনে থাকা ৩৩ জন আম্পায়ারের নতুন বেতন অনুমোদন দেওয়া হয়। আম্পায়ারদের মোট আটটি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। প্রথমবারের মতো বেতন কাঠামোতে নেওয়া হয়েছে স্কোরারদের।
এক বছরের চুক্তিতে নেওয়া হয়েছে আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি, স্কোরারদের। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর ধরা হয়েছে গত ১ জানুয়ারি থেকে। বেতনের বাইরে বাড়তি অর্থযোগ হবে তাদের। বিসিবির নিয়ম অনুযায়ী বছরে ২টি করে বোনাস দেওয়া হবে আম্পায়ার, স্কোরারদের। বিসিবির এমন পদক্ষেপে উচ্ছ্বসিত এক আম্পায়ার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'এতোদিনে বিসিবি আমাদের প্রতি সদয় হলো। এটা অনেক আগে করা উচিত ছিল। অবশেষে হয়েছে, এটার জন্য তাদের ধন্যবাদ।'
বিসিবির করা আম্পায়ারদের নতুন বেতন কাঠামোতে 'এ' প্লাস ক্যাটাগরিতে আছেন একজন আম্পায়ার। আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত এখন থেকে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা বেতন পাবেন। আগের তার বেতন ছিল ৬৫ হাজার। 'এ' গ্রেড ক্যাটাগরিতে আছেন আইসিসির চার ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলের আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল, গাজী আশরাফ হোসেন সোহেল, তানভীর আহমেদ ও মোর্শেদ আলী খান।
ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে বেড়েছে এই চার আম্পায়ারের বেতন। আগে ৫৫ হাজার টাকা বেতন পাওয়া মুকুল এখন থেকে পাবেন এক লাখ টাকা করে। সোহেল ও তানভীরের বেতন ৪৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৯০ হাজার করা হয়েছে। আইসিসির ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলে নতুন যুক্ত হওয়া মোর্শেদ আলীর বেতন ধরা হয়েছে ৭০ হাজার টাকা।
'বি' গ্রেড ক্যাটাগরিতে আছেন বিসিবির এলিট প্যানেলের চার আম্পায়ার। তারা ৪৫ থেকে ৫৫ হাজারের মধ্যে বেতন পাবেন। 'সি গ্রেড' ক্যাটাগরিতে থাকা আইসিসি ডেভেলপমেন্ট প্যানেল, ইমার্জিং প্যানেল ও প্রথম শ্রেণি প্যানেলের আম্পায়াররা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মাসে ২৫ থেকে ৩৫ হাজারের মধ্যে বেতন পাবেন। এই গ্রেডে আছেন ১৯ জন আম্পায়ার, এর মধ্যে চারজন নারী। আঞ্চলিক প্যানেলের পাঁচজন আম্পায়ারের বেতন বাড়িয়ে ২৫ হাজার করা হয়েছে। আগে তারা ১৫ থেকে ১৬ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে বেতন পেতেন।
ম্যাচ রেফারিদের দুটি ক্যাটাগরি করেছে বিসিবি। 'এ' গ্রেড ক্যাটাগরিতে আছেন রকিবুল হাসান, নিয়ামুর রশীদ রাতুল ও আখতার আহমেদ। বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি হিসেবে রকিবুল হাসান সবচেয়ে বেশি বেতন পাবেন। এক বছরের চুক্তিতে থাকা রকিবুলের বেতন ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
এই গ্রেডের বাকি দুই ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর ও আখতারের বেতন ৫৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে। 'বি' গ্রেডে থাকা নারী ম্যাচ রেফারি সুপ্রিয়া রানী দাস মাসে ৪৫ হাজার টাকা বেতন পাবেন। নিয়ামুর ও আখতারের মতো সুপ্রিয়াও আইসিসির ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলের সদস্য। এ ছাড়া, আটজন স্কোরারের বেতন ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার করা হয়েছে।