আমরা চাই সাদ অনুসারিরাও ইজতেমা আয়োজন করুক: আইজিপি
উভয়পক্ষের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
আইজিপি বলেন, "জুবায়ের পন্থিরা ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মধ্যে ইজতেমা করবেন, আর সাদ অনুসারীরা ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা করবেন। এর মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব কিংবা দ্বিধা নাই। আমরা আশা করি উভয় পক্ষের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবেই ইজতেমা সমাধান হবে ইনশাল্লাহ।"
আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ব ইজতেমা মাঠের জিএমপির কন্ট্রোল রুমের সামনে প্রেস ব্রিফিংকালে আইজিপি এসব কথা বলেন।
দ্বিতীয় পর্ব আয়োজনে ভারতের মৌলানা সাদ অনুসারীদের যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, এই শর্ত না মানলে তারা কি ইজতেমা করতে পারবে? এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, "আমরা চাই সাদ অনুসারীরা তাদের ইজতেমা আয়োজন করুক। এ বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমাদের হাতে আরো অনেক সময় রয়েছে।"
পরবর্তীতে, আইজিপি চলে যাবার পর জুবায়ের অনুসারীদের শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান বলেন, সাদ অনুসারীরা যদি শর্ত না মানে, তাহলে তাদেরকে কোন অবস্থাতেই ইজতেমা করতে দেওয়া হবে না। তাদেরকে বাংলার জনগণ এই ইজতেমা ময়দানে ঢুকতে দিবে না।
বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম আরো বলেছেন, এখন ইন্টারিম গভর্নমেন্ট চলছে। লুট হওয়া অনেক অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। সব কিছু মাথায় রেখেই কাজ করছি। দুই পক্ষ একমত হয়েছে, তাই সুন্দরভাবেই ইজতেমা হবে আশা করি।
আইজিপি সম্প্রতি ইজতেমা মাঠে একাধিক খুনের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, "নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হতে পারে, দুই পক্ষ একমত হওয়ায় আমরা আশা করি ইজতেমা সুন্দর হবে। ইজতেমায় আয়োজকদের ১০ হাজার সেচ্ছাসেবী আমাদের সাথে থাকবে। তাদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে।"
এসময় গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমূল করীম খান বলেন, এবারের ইজতেমায় ওয়াচ টাওয়ার থাকবে ১৬ টি। ৫ সেক্টরে ভাগ করে নিরাপত্তা ছক করা হয়েছে । পুরো ইজতেমা মাঠ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। ইজতেমা উপলক্ষ্যে ৩১ জানুয়ারি থোকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মহাসড়কে কোন পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক আকরাম হোসেন, জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান, জিএমবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদুল হাসান ও তাহেরুল হক চৌহান, জেলা পুলিশ সুপার ড. যাবের সাদেক, অতিরিক্ত ডিআইজি জাহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া, নৌ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মনজুরুল করিম রনি, ইজতেমার আয়োজকদের মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নানসহ সংশ্লিষ্টরা।
৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব দুই ভাগে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব আয়োজন করবে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী (শুরায়ে নেজামী) অংশ। প্রথমভাগে ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। পরদিন দ্বিতীয়ভাগে ৩ ফেব্রুয়ারি বাদ ফজর শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।
এরপর ভারতের মৌলানা সাদ অনুসারীরা দ্বিতীয় পর্ব ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা করবেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, ২৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা থেকে প্রকাশিত এক চিঠিতে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ১৪ ফেব্রুয়ারি এস এম আয়োজনের যে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের একটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তটি হচ্ছে সাদ অনুসারীরা এবারের পর ভবিষ্যতে আর কোনোদিন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে ইজতেমা আয়োজন করতে পারবে না। সরকারের দেওয়া এই শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন স্যার অনুসারীরা। সাত অনুসারীদের মুখপাত্র আবু সায়েম জানান, তারা সরকার নির্ধারিত সময়ে ইজতেমা আয়োজন করবেন তবে শর্ত মানবেন না।
অপরদিকে, জোবায়ের অনুসারীদের শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান, শর্ত না মানলে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজনের বিষয়টি এখনো অনিশ্চিতি রয়ে গেছে।