১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা
প্রতারণার মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে নাজমে নওরোজ নামক এক নারী ব্যবসায়ী মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন তার শ্বশুর আলী জহুর, শ্যালিকা জেসমিন আরশেদ, ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিন এবং ব্যাংকের প্রবর্তক মোড় শাখার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাকারিয়া।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী নাজমে নওরোজ ২০১৩ সাল থেকে নওরোজ এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় তার পরিচয় হয় সাইফুল আলম মাসুদের শ্বশুর আলী জহুর ও শ্যালিকা জেসমিন আরশেদের সঙ্গে। পরে তাদের মাধ্যমে সাইফুল আলম মাসুদের সঙ্গেও পরিচয় হয়।
বাদীর দাবি, সাইফুল আলম মাসুদের নির্দেশে তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৪৫ শতাংশ শেয়ার জেসমিন আরশেদ এবং ৪০ শতাংশ শেয়ার আলী জহুরের নামে দেন। নিজে ১৫ শতাংশ শেয়ার রেখে শীর্ষ নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর সাইফুল আলম মাসুদের নির্দেশে আলী জহুর ও জেসমিন আরশেদ নওরোজ এন্টারপ্রাইজকে বন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, প্রবর্তক মোড় শাখা থেকে ৪৭ কোটি টাকা ঋণ নেন। এর মধ্যে মাত্র ১৫ কোটি টাকা বাদীকে দেওয়া হয়, বাকি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধক রেখে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয় এবং তা আত্মসাৎ করা হয়। নওরোজের চেকে স্বাক্ষর জাল করে এসব টাকা উত্তোলন করা হয়।
২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এসব ঋণের টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ২০২৪ সালের ১৫ মে বাদী তার পাওনা টাকা চাইতে গেলে সাইফুল আলম মাসুদ তাকে গালাগালি করেন এবং ভবিষ্যতে টাকা চাইলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
বাদীর আইনজীবী শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, 'প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বাদীর প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। টাকা ফেরত চাইলে তাকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। আদালত মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।'
এদিকে, বাদীর তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তিন শাখার ২৩৪ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এস আলম গ্রুপের ঘনিষ্ঠতার ফলে এসব ঋণ অনুমোদিত হলেও ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পাওনাদার ব্যাংক ঋণ আদায়ে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে।
সম্পর্কিত খবর: ব্যাংকের কাছে রেস্তোরাঁ মালিকের দেনা ২৩৪ কোটি টাকা, এখন নিজেকেই ভিকটিম দাবি করছেন