শিক্ষার্থীকে মারধর: ছাত্রলীগ নেতাসহ খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/10/19/kuet_logo.png)
২০২২ সালে মোবাইল ফোনে সরকারবিরোধী চ্যাটিংয়ের অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনের বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি দুজনকে তিন বছর এবং একজনকে পাঁচ বছরের জন্য সনদ প্রদান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। আজ সোমবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
যারা বহিষ্কৃত হলেন
আজীবন বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, রায়হান আহমেদ, সাদ আহমেদ, সাজেদুল কবির, আদনান রাফি, রিজুয়ান ইসলাম রিজভী, ফায়াদুজ্জামান ফাহিম, মেহেদী হাসান মিঠু, সাফাত মোর্শেদ ও ফখরুল ইসলাম।
তাদের মধ্যে রায়হান, সাদ, সাজেদুল ও রাফির বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া মোস্তাক আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য এবং শুভেন্দু দাস ও ফারিয়ার জামিল নিহালকে তিন বছরের জন্য সনদ প্রদান না করার পাশাপাশি কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসাপত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সেদিন যা ঘটেছিল
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টির ড. এম এ রশিদ হলের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মোবাইল অ্যাপে সরকারবিরোধী চ্যাটিংয়ের অভিযোগে তুলে নিয়ে যান। পরে গেস্ট রুমে নিয়ে সারারাত তাকে মারধর করা হয়। ভোরে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। নির্যাতনের কারণে জাহিদুর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পরে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাহিদুর নির্যাতনের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
তবে সাদমান নাহিয়ান সেজানের দাবি- তারা কেউই জাহিদুরকে মারধর করেননি। তার ভাষ্যমতে- 'জাহিদুর হিজবুত তাহরিরের সদস্য—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাকে পুলিশে দিয়েছিল। এখন রাজনৈতিক উদ্দেশে আমাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'