সব জেলায় ‘স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স’ গঠনের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকদের
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/12/17/bd_govt_logo_job-ezgif.com-webp-to-jpg-converter.jpg)
প্রতিটি জেলায় বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে একটি 'স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স' গঠনের প্রস্তাব এসেছে জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে। এই ফোর্স জেলা প্রশাসকের অধীনে মোবাইল কোর্ট ও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা, ত্রাণ বিতরণ, দুর্যোগকালীন সেবা দেওয়াসহ জরুরি কার্যক্রমে অংশ নেবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুরু হতে যাওয়া তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে পাঠিয়েছেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মো: অহিদুল ইসলাম।
অহিদুল ইসলাম তার প্রস্তাবে বলেছেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিজে বা তার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্ট, উচ্ছেদ অভিযান, বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ ও দুর্যোগে তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়ার কাজ করেন। এসব কাজ প্রায়ই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। নিজস্ব সুরক্ষা ও এ ধরনের জরুরি সেবা কার্যক্রম দ্রুত করার জন্য জেলা প্রশাসকের অধীনে একটি 'স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স' গঠন করা যেতে পারে।
কারণ হিসেবে মাগুরার জেলা প্রশাসক বলেছেন, এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পর্যায়ে অবস্থিত বাহিনীগুলোর কার্যালয়ের দূরত্ব, প্রস্তুতিমূলক কারণে সময়ক্ষেপণ হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ও জনস্বার্থ বিঘ্নিত হয়।
তার এ প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মনে করছে, জেলা প্রশাসকের অধীনে ১৫ জনের এ ধরনের একটি ফোর্স থাকতে পারে।
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুরু হবে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। এই সম্মেলন উপলক্ষে দেশের সকল জেলা প্রশাসক তাদের মাঠ পর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং নিজ নিজ জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনাকে সামনে রেখে প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানা গেছে, বেশ কয়েকটি জেলার জেলা প্রশাসক কনস্টেবল নিয়োগ, বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন তৈরিসহ জেলা পর্যায়ে পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রমে জেলা প্রশাসক বা তাদের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছেন।
সাতক্ষীরা ও মাগুরার জেলা প্রশাকরা তাদের প্রস্তাবে বলেছেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হলেও মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর তাদের কোনো দাপ্তরিক নিয়ন্ত্রণ নেই। এর ফলে অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নই কঠিন হয়ে পড়ে। বাহিনীগুলোর ওপর জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা এসব সুপারিশ করেছেন।
পাশাপাশি সিলেটের জেলা প্রশাসক তার প্রস্তাবে পুলিশের মরণাস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা এবং ডিউটিকালীন সময়ে পুলিশের শরীরে বডি ক্যামেরা ব্যবহার করার প্রস্তাব করেছেন।
জুলাই-আগস্ট সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ প্রস্তাব করেছেন।
তিনি বলেন, "পুলিশের মরণাস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। ছররা গুলি মানবদেহে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।"
এছাড়া, জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে কেপিআই ঘোষণা করা, অপরাধ ডেটাবেজ ও ন্যাশনাল আইডি ডেটাবেজে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের এক্সেস দেওয়া, ইউএনওর বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য আনসার নিয়োগেরও প্রস্তাব করেছেন জেলা প্রশাসকরা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকদের এসব প্রস্তাব কর্তৃপক্ষ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। আগামী সম্মেলনে এসব প্রস্তাবের ওপর আরও আলোচনা করা হবে। এরপর তা বাস্তবায়ন করা হতে পারে।