সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছে: মির্জা ফখরুল
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/10/476816693_1252996709525100_2571630509726253956_n.jpg)
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে যারা আছেন, তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে অতি দ্রুত তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। প্রধান উপদেষ্টা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন। আমরা আশা করব-জনগণের যে প্রত্যাশা আছে, একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন তিনি। সেটার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য তাগাদা দিয়েছি। ন্যূনতম যে সংস্কার সেই কাজগুলো করে, রিফর্ম কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে, একমত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার বিষয় নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইস্যুতে আমরা কোনোভাবেই একমত হব না। খুব পরিষ্কার করে আগেও বলেছি, এখনও বলছি— জাতীয় সরকারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার দায় সরকার এড়াতে পারে না। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বাহিনীগুলোর সামনেই এসব ঘটনা একের পর এক ঘটেছে। যা সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতাকে যথেষ্টভাবে বিপন্ন করেছে। ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিয়েছে এ সম্পর্কে কথা বলার।
'এখনো প্রশাসনে যেসব ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা এবং প্রশাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি। যারা অর্থনীতির লুট করেছে, লুণ্ঠন করেছে তাদের টাকা ফিরিয়ে আনা এবং আইনের আওতায় আনার জন্য দাবি তুলেছি', যোগ করেন তিনি।
দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে হওয়া মামলাগুলোর কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে। তাদের মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা বলেছি। তারা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, 'দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে অত্যন্ত জোরালোভাবে বলেছি, এই সরকারের অন্যতম ব্যর্থতা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারা। এ বিষয়ে তারা বলেছেন, এটি নিয়ে সরকার কাজ করছেন।'
'অপারেশন ডেভিল হান্ট' প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সবশেষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তাদের বলেছি— অতীতেও অনেক অভিযান হয়েছে। অতীতের মতো যেন নির্দোষদের কিছু না হয়। এটা নিয়ে যেন সমস্যা না হয়।
বৈঠকের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ সমর্থন দিয়েছে। তারা বলেছেন যে তারা সরকারের পাশে আছেন।
তিনি আরও জানান, তাদের সাথে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তেমন কথা হয়নি, আপাতত জাতীয় নির্বাচন নিয়েই কথা হয়েছে। বিএনপি স্ট্যাবিলিটির দিকে জোড় দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাও এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, নির্বাচন যেন তাড়াতাড়ি হয়।
আজ সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
এর আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল যমুনায় পৌঁছায়।
প্রতিনিধি দলটিতে আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, 'পতিত স্বৈরাচারের' বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, আগামী নির্বাচন ও অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হবে বলে দলটির একটি সূত্র জানিয়েছে।