'গত সরকার সর্বক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করে গেছে, এটি তার একটি নমুনা': আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ইউনূস
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/477440872_29346053721652144_9004694888166585830_n.jpg)
'আয়নাঘর' নামে পরিচিত যৌথবাহিনীর গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার রাজধানীর তিনটি এলাকায় র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের টর্চার সেল পরিদর্শন করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, গোপন বন্দিশালাগুলো আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায় অবস্থিত।
পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে স্থানীয় ও বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আরও ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবে প্রেস উইং।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ইউনূস বলেন, আপনারা সবাই সঙ্গে ছিলেন, কাজেই আমার নতুন করে কিছু বলতে হবে না। এটার বর্ণনা যদি বলতে হয়, তাহলে বলব এটা বীভৎস দৃশ্য। নৃশংস অবস্থা—এখানে যা কিছু ঘটেছে, সবই ভয়াবহ। যতই শুনি, অবিশ্বাস্য মনে হয়। এটা কি আমাদের জগৎ? এটা কি আমাদের সমাজ? এটা কি আমরা করলাম?
তিনি বলেন, যারা নিগৃহীত হয়েছে, যারা এটার শিকার হয়েছেন, তারা আমাদের সঙ্গেই আছেন। তাদের মুখ থেকেই শুনলাম কী ঘটেছে। এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। এটা একদম বিনা কারণে—রাস্তা থেকে তুলে আনার মতো। বিনা দোষে কতগুলো স্বাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করে, কিছু এক্সপ্লোসিভ বহনকারীর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে বলছে—তুমি সন্ত্রাসী, তুমি জঙ্গি। এগুলো বলে বলে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/12/f1eaa920-4d66-4532-b549-988e385ad174.jpeg)
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/12/4445b6b2-7cc2-4228-b8bf-a8047f677034.jpeg)
তিনি আরও বলেন, এখন শুনছি এরকম টর্চার সেলের বিভিন্ন সংস্করণ নাকি সারা বাংলাদেশ জুড়ে আছে। কেউ বলে ৭০০, কেউ বলে ৮০০। এর সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি এ পর্যন্ত। কতটা জানা আছে, কতটা অজানা রয়ে গেছে। গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করে গেছে সর্বক্ষেত্রে, এটা তার একটা নমুনা।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের যে চূড়ান্ত রূপ দেখলাম, এটা তার একটা প্রতিচ্ছবি। এটা জাতির জন্য চূড়ান্ত রকমের একতা ডকুমেন্ট হয়ে থাকবে। আপনাদের সাথে রেখে, আপনাদের নিয়ে এসে। আমরাও শরিক হলাম এটাতে। ভুক্তভোগীদেরও কথা বললাম। ভুক্তভোগীদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত আমার জানামতে ১ হাজার ৭০৮ বা তার বেশি। অজানা কত এটা তো আমরা জানি না। কেউ কেউ বলে, এটা ৩ হাজারের বেশি হবে। কাজেই সেটাও আমরা ধরে নিলাম, যেহেতু একটা সীমারেখা দরকার।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/12/944ef1d1-dfe1-4759-9842-476ec97ad5dc.jpeg)
গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে 'আয়নাঘর' পরিদর্শনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আয়নাঘরে আটকে রাখা কক্ষ শনাক্ত করলেন নাহিদ ও আসিফ
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে ডিজিএফআইয়ের সেই দুই টর্চার সেল চিনতে পেরেছেন নাহিদ ও আসিফ।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/12/476584383_1034929888383027_4899869597673177933_n.jpg)
গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নাহিদ ও আসিফকে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
নাহিদ ইসলাম জানান, তুলে নেওয়ার পর তাকে ডিজিএফআইয়ের ওই টর্চার সেলে রাখা হয়েছিল। আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে তিনি কক্ষটি শনাক্ত করেন।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/12/475963289_9176687315740220_5541407923701399240_n.jpg)
তিনি আরও জানান, কক্ষটির একপাশে টয়লেটের মতো একটি বেসিন ছিল। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয় এবং দেয়ালে রং করা হয়।
আয়নাঘর পরিদর্শনের পর আসিফ জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের দেয়ালের উপরের অংশের খোপগুলোতে এক্সস্ট ফ্যান ছিল, এখন নেই।