১ লাখ টাকার কমে মালয়েশিয়া যাওয়া যাবে, জানুয়ারি থেকে শুরু
মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের খরচ এক লাখ টাকারও কম হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। পাশাপাশি নিবন্ধিত সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে; আগেরবারের মতো নিয়োগকারীদের কোনো সিন্ডিকেশন থাকবে না। সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য উভয় দেশ রোববার একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ ছিল।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, "চুক্তি অনুযায়ী কর্মীর আসা-যাওয়ার টিকিটসহ মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। এখানে কর্মীর খরচ বলতে পাসপোর্ট তৈরি, বিএমইটি ফি, কল্যাণ বোর্ডের সদস্য ফি, মেডিকেল ফি এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ।"
"আগে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০ বা ৬৫ হাজার যাই থাকুক না কেন, এখন তা থেকে অনেক কমে আসবে। দুই দেশের এজেন্সি যৌথভাবে কাজ করবে। ব্যয়ের বেশিরভাগ খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবেন," আরও যোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, "জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডাটাবেজ থেকেই কর্মী পাঠানো হবে। পাশাপাশি আগের মতো কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিই কর্মী পাঠাতে পারবেন। তবে এবার কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি জড়িত থাকছে, যা আগে ছিল না।"
মালয়েশিয়া যেতে দালালদের টাকা না দেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি। সেইসঙ্গে, নতুন বছরের জানুয়ারির মধ্যেই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। কোন কোন খাতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, "মালয়েশিয়া থেকে চাহিদা পত্র আসলেই সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে"
তিন বছরেরও বেশি সময় বিরতির পর, বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়া তার শ্রমবাজার পুনরায় চালু করেছে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বর, অর্থাৎ আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশটির শ্রমবাজার খোলা থাকবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য।
প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, "কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। কেউ যেন এখন কারো সঙ্গে টাকা-পয়সা লেনদেন না করেন। যখন প্রক্রিয়া শুরু হবে তখন সরকার জানাবে।" এখনও কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ে আলাপ বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় প্রায় আট লাখ বাংলাদেশি বসবাস করেন।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসদাচরণ ও উচ্চ নিয়োগ খরচের অভিযোগে দেশটি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ স্থগিত করে দেয়।
কোভিড-১৯ মহামারির পরে শ্রমিকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ সম্ভাব্য দেশগুলো থেকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পদক্ষেপেরই অংশ হিসেবে, মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।