সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে গণমাধ্যমকর্মী আইন উত্থাপনের আশাবাদ তথ্যমন্ত্রীর
আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া জাতীয় সংসদে উত্থাপনের আশা প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকা (চবিসাফ) এর মিলনমেলা ও দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, "গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়ায় ইতোমধ্যেই আইনমন্ত্রী স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। শীতকালীন অধিবেশনে আমরা সেটি সংসদে নিয়ে যেতে পারব বলে আশা করছি। এ আইন পাস হলে সম্প্রচার মাধ্যমের সাথে যুক্ত সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।"
হাছান মাহমুদ গণমাধ্যমে সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও প্রয়োজন উল্লখ করে বলেন, "সরকারের সমালোচনা হবে, কোনো জায়গায় দায়িত্বশীলরা যদি ভুল করে তারও সমালোচনা হবে। কিন্তু সমালোচনাটা যেন এমন না হয় যে, দুষ্কৃতকারী বা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হাতে কিংবা যারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে লালনপালন ও ব্যবহার করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাদের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।"
তথ্যমন্ত্রী বলেন, "সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমার কাছে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে যে সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত হওয়ার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি করে দিতে। সেক্ষেত্রে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো ডিগ্রি নির্ধারণ করে দেওয়া সমীচীন মনে করি না। কারণ অনেক সময় দেখা যায় মার্স্টাস ডিগ্রিধারী যেভাবে লেখেন, তার চেয়ে মাধ্যমিক পাস সাংবাদিক ভালো লেখেন। তবে এখন যে কেউ সাংবাদিক পরিচয় দেয়, আসল সাংবাদিকের চেয়ে নকল সাংবাদিকে উপজেলা পর্যায় সয়লাব। এ বিষয়ে শৃঙ্খলা আনার জন্য আমি প্রেস কাউন্সিলকে একটি মানদন্ড তৈরির নির্দেশনা দিয়েছি।"
সত্যিকার অর্থে সাংবাদিকদের জন্য কাজ করতে পারাটাই সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সার্থকতা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওয়েজবোর্ডে আছে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে সাংবাদিক ও কর্মচারিদের জন্য গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স করতে, কিন্তু তা হয়নি। এজন্য খুব বেশি টাকারও প্রয়োজন হয় না। এ বিষয়ে সংগঠনগুলো কাজ করতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছেন। একজন সাংবাদিক মারা গেলে তার স্বজনেরা সেখান থেকে ৩ লাখ টাকা পান । কিন্তু গ্রুপ ইন্স্যুরন্সে কাভারেজ বাবদ তার পরিবার যে পাঁচ বা দশ লাখ টাকা পেতো, সেটি না পাওয়া শুধুমাত্র উদ্যোগের অভাব।
চবিসাফের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিবিসি২৪ টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী।
সাংবাদিক আইয়ুব ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন চবিসাফের মহাসচিব শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী। চবিসাফের ১১ জেলার প্রতিনিধিদের মধ্যে চট্টগ্রামের সমীর বড়ুয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গিয়াস উদ্দীন, ফেনীর মোতাহার হোসেন, কুমিল্লার সাজ্জাদ হোসেন, নোয়াখালীর তরুণ তপন চক্রবর্তী, লক্ষ্মীপুরের খুরশিদ আলম প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।