দৃশ্যমান হলো ২০.১ কিলোমিটার মেট্রো রেলের সম্পূর্ণ ভায়াডাক্ট
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের পুরো ২০.১ কিলোমিটারের ভায়াডাক্টের শেষ স্প্যানের একটি অংশ স্থাপন হয়েছে আজ। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে শেষ অংশটি স্থাপন করা হয়।
সকাল ১১টায় প্রেসক্লাব এলাকায় মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের শেষ স্প্যানের শেষ অংশের কাজ শুরু হয়। প্রকৌশলীরা ১০ মিনিটের মধ্যে কাজটি শেষ করেন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (দিএমটিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা একটি মাইলফলক স্থাপন এবং সেগুলো অর্জনের লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছি।"
"এই মাইলফলক চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও এবং আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে," যোগ করেন তিনি।
উত্তরা সেক্টর-৩ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত 'ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ৬' নামের রেললাইনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই বছরের ডিসেম্বরে সেকশনটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার মেট্রো রেলের ভায়াডাক্ট স্থাপনের কাজ শেষ হয়। সেদিনের অনুষ্ঠানে চলতি বছরের ডিসেম্বরে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেল চালুর লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিটের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের মধ্যে পুরো রেললাইনটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকায় যানজটমুক্ত কার্যকর পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান (এসটিপি) এর আওতায় এবং জাপানের সহায়তায় ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট উন্নয়ন প্রকল্প (এমআরটি লাইন-৬) অনুমোদন দেওয়া হয় ২০১২ সালে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
এ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালের মধ্যে দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১০ কিলোমিটার মেট্রো রেল নির্মাণ করা হবে। তবে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম অংশ আগেবাগেই চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতিঝিল থেকে মেট্রোর এ লাইনটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে লাইনের দৈর্ঘ্য দাড়াবে ২১.৭০ কিলোমিটারে।
মাঠ পর্যায়ে মেট্রো রেলের সমীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই আগারগাঁও, তালতলা, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ফার্মগেইট, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগসহ প্রকল্প এলাকায় শুরু হয় ভোগান্তি। মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হলে যানজটের সাথে প্রকট আকার ধারণ করে শব্দদূষন ও বায়ু দূষন। বেচাকেনা কমে আসে মূল সড়কের আশেপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
তবে মেট্রো রেল নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে আসায় জনভোগান্তিও কমে আসছে, উল্টো এলাকাবাসী আশা দেখছে বাড়তি আয়ের।
পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মেট্রো রেল নির্মাণের কারণে যানজট, শব্দদূষণ, বায়ু দুষণসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় প্রকল্প এলাকার ৬৮ শতাংশ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
তবে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আয় বাড়বে বলে ৭৬ শতাংশ এলাকাবাসী দাবি করেছেন ওই সমীক্ষায়। যাতায়াত সহজ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ৬৭ শতাংশ বাসিন্দা।