দেশের সবচেয়ে দূষিত এলাকা গাজীপুর
দেশের ৬৪ জেলার বায়ুর মান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গাজীপুর জেলার বাতাস সবচেয়ে দূষিত। স্টামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর গবেষণায় জানা গেছে এ তথ্য।
গবেষণা থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার সর্বমোট ৩১৬৩টি স্থানের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম। দৈনিক আদর্শ মানের (৬৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি এটি।
পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৬৪ জেলার মধ্যে গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি দূষণ পরিলক্ষিত হয়। গাজীপুরের বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ক্ষুদ্র বস্তুকণা ছিল ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম।
গাজীপুরের পরেই রয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা ঢাকা (২য়) ও নারায়ণগঞ্জ (৩য়)। ঢাকার বায়ুতে বস্তুকণা ছিল ২৫২.৯৩ মাইক্রোগ্রাম। নারায়ণগঞ্জের বায়ুতে ছিল ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম।
উল্লেখিত সবচেয়ে দূষিত তিনটি শহরের বায়ুতে বস্তুকণার পরিমাণ বাংলাদেশের আদর্শমানের চেয়ে প্রায় ৪-৫ গুণ বেশি।
রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগা প্রকল্প, আশেপাশের ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো এই প্রধান তিনটি শহর দূষণের অন্যতম কারন হিসেবে পরিলক্ষিত হয়।
গবেষণার তথ্যানুযায়ী ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং ১০ম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম এবং কিশোরগঞ্জ।
অন্যদিকে সবচেয়ে কম দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুর; যার বায়ুমান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম। মাদারীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পটুয়াখালী এবং মেহেরপুর।
বায়ু দূষণ কম হওয়ার কারন হিসেবে সরোজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার রয়েছে। এছাড়াও, এসব এলাকায় রাস্তা সংস্কার কাজের পরিমাণও কম।
৭ ধরনের ভূমির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে, সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ ছিল মিশ্র এলাকায়; যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১১১.৯০ মাইক্রোগ্রাম।
পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাণিজ্যিক (১১১.৪ মাইক্রোগ্রাম), রাস্তার সংযুক্তি (১১০.৮ মাইক্রোগ্রাম), আবাসিক, শিল্প (১০৬.৭ মাইক্রোগ্রাম) এবং সংবেদনশীল এলাকা (৯৭.৩ মাইক্রোগ্রাম)।
এদিক থেকে তুলনামূলক কম দূষণ দেখা গেছে গ্রামীণ এলাকায়; যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৯৪.০২ মাইক্রোগ্রাম।
৬৪টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ১০টি (১৫.৬২ শতাংশ) জেলায় বায়ুর মান ভালো পাওয়া যায়। এসব এলাকায় প্রতি ঘনমিটারে বস্তুকণার পরিমাণ ৬৫ মাইক্রোগ্রামের নিচে। জেলাগুলো হলো কুড়িগ্রাম (৬৩.৩৩), জয়পুরহাট (৫৮.২৪) ও রাজবাড়ী (৫৮.২২)।