বায়ুদূষণ রোধে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, 'স্মগ ওয়ার রুম' স্থাপন
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে শিশুদের সুরক্ষা ও বায়ুদূষণ রোধে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ এবং অনলাইন ক্লাস নেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের ২৪ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এই প্রদেশে বসবাস করে। এর আগে, লাহোরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ, চলাচল সীমিত এবং কিছু বারবিকিউ রেস্টুরেন্ট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
"বাতাসের গতিবিধি ও এয়ার কোয়ালিটি সূচক বিশ্লেষণ করে, আমরা সকল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি," লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাবের সিনিয়র মন্ত্রী মরিয়াম আওরঙ্গজেব এ তথ্য জানান।
সুইস সংস্থা আইকিউএয়ারের সরাসরি র্যাংকিংয়ে লাহোরের বায়ুদূষণ সূচক ছিল ১,১৬৫, এরপর ভারতীয় রাজধানী দিল্লির সূচক ছিল ২৯৯।
আওরঙ্গজেব বলেন, "পাঞ্জাবে আজ সকালে দূষণের মাত্রা ১,১০০ অতিক্রম করেছে … আমি নাগরিকদের কাছে অনুরোধ করছি, ঘর থেকে বের হবেন না"।
রেকর্ড-উচ্চ বায়ু দূষণে লাহোরে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ লকডাউনের সতর্কবার্তা দিয়েছে যদি নাগরিকরা মাস্ক পরিধান ও অন্যান্য দিকনির্দেশনা না মানেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মানুষ কাশি কিংবা চোখ জ্বালাপোড়ার অভিযোগ করছেন।
"এক সপ্তাহে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত লক্ষাধিক রোগীকে হাসপাতালে ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে," অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন পাঞ্জাব পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সালমান কাজমি।
অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত শহরের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ফয়সালাবাদ, পাশাপাশি মুলতান ও গুজরানওয়ালা।
বায়ুদূষণ মোকাবেলায় পাঞ্জাবে একটি 'স্মগ ওয়ার রুম' চালু করা হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন দুটি সেশনের মাধ্যমে ডেটা ও পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দূষণ কমানোর জন্য পদক্ষেপ জানানো হবে এবং পরামর্শ দেওয়া হবে।
পাকিস্তান সরকার কৃত্রিম বৃষ্টির ঝরানোর মাধ্যমেও দূষণ কমানোর পরিকল্পনাও করছে।
তবে, লাহোরের বায়ু সূচক এখনও গত সপ্তাহের ১,৯০০ স্কোরের চেয়ে কম হলেও, তা সুপারিশকৃত সীমার চেয়ে অনেক বেশি ছিল। মন্ত্রী আওরঙ্গজেব বলেছেন, ভারত থেকে আসা দূষিত বাতাসের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এবং তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে।
প্রতিবছর শীতকালে দক্ষিণ এশিয়ায় তীব্র বায়ুদূষণ দেখা দেয়, যা শিশুসহ হাজার হাজার মানুষের জন্য বিপজ্জনক। ইউনিসেফ জানিয়েছে, প্রায় ৬০০ মিলিয়ন শিশু এই দূষণের মধ্যে বাস করছে।