পানির পুনর্ব্যবহারের জন্য সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে: বিজিএমইএ সভাপতি
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বিজিএমইএ গার্মেন্টস ভিলেজে পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর যাতে কমে না যায় বা তার উপর যাতে বেশি প্রভাব না পড়ে সেজন্য রি-ইউজের (পুনরায় ব্যবহারের) মাধ্যমে পানির ব্যবহার কমিয়ে আনবেন তারা।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের মিরসরাইতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের বিজিএমই গার্মেন্টস ভিলেজের জন্য তৈরীকৃত প্লটের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে কারখানায় পানি সরবরাহের বিষয়ে ফারুক হাসান আরো বলেন, "আমরা জিরো ওয়াটার ডিসচার্জ নিয়ে কাজ করছি। এই গার্মেন্টস ভিলেজে পানির ব্যবহার আরো কিভাবে কমানো যায় সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি। টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা কারখানাগুলোতে পানির ব্যবহার ৩ ভাগের ১ ভাগে নিয়ে এসেছি। পানিকে পুনর্ব্যবহার করে মিরসরাইয়ের কারখানাগুলোতে এই হার যাতে আরো কমিয়ে আনা যায়, তার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা চাই না পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাক। সেজন্য সেভাবে ওয়াটার রিজার্ভারেরও ব্যবস্থা করবো।"
ফারুক হাসান বলেন, "সমস্যা আছে সমস্যা থাকবে। আমি মনে করি অনেক টেকনোলজিও আছে। আমরা নতুন টেকনোলজির মাধ্যমে বেজা এবং সরকারের সাথে মিলে এসব সমাধান করবো।"
গার্মেন্টস ভিলেজে কারখানা নির্মাণ কতটুকু উপযোগী এ বিষয়ে বিজিএমই সভাপতি বলেন, "আমি এসে যেটা দেখলাম এখানে এখনো সব কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এখানে পাশ্ববর্তী প্লটের চেয়ে গার্মেন্টস ভিলেজে ভরাটকৃত জমির উচ্চতা কম রয়েছে। সাগরের পাশের সীমানায় প্রোটেকশন ওয়াল এখনো হয়নি। ভেতরের রোডগুলোও হয়নি। পুরো জায়গাটি আমরা এখনো ঠিকমতো বুঝে পাইনি। তাই সদস্যদের ডিস্ট্রিবিউট করে দিতে পারিনি। বিষয়গুলো নিয়ে ঢাকায় গিয়ে বেজার সাথে আমরা বসবো।"
তিনি আরো বলেন, "আমরা চাই প্লট বরাদ্দ পাওয়া গার্মেন্টস মালিকরা যাতে এখানে ইন্ডাস্ট্রির কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করতে পারে। বিজিএমইএ গার্মেন্টস ভিলেজে যারা প্লট পেয়েছে তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমরা মনে করি বিদ্যমান সমস্যাগুলো বেজার সাথে দ্রুত আলোচনা করে সমাধান করা হবে। আশা করি খুব দ্রুত গার্মেন্টস ভিলেজে কারখানা নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারবো।"
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, শিল্পনগর যেহেতু চট্টগ্রাম বন্দরের একেবারেই কাছে তাই আমদানি-রপ্তানি করতে সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, "গ্রিন ফ্যাক্টরির কারণে তৈরী পোষাক শিল্পে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতি একটি আত্মবিশ্বাস তৈরী হয়েছে। এই সময়ে ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ভালো অর্ডার পাচ্ছি। মিরসরাইতেও গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে তোলা হবে।"
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বিজিএমইএ গার্মেন্টস ভিলেজে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ ৫০০ একর জমি বরাদ্দের জন্য বেজা ও বিজিএমইএ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত ৪৮টি কারখানার অনুকূলে ২৯১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়। এই বাবদ বিজিএমইএ বেজা কর্তৃপক্ষকে প্রায় ২০৯ কোটি টাকা প্রদান করে।
২০২১ সালের ১৫ মার্চ ৪১টি কারখানা ১৯০ একর জমি বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছে। শিল্প মালিকরা সেখানে ১১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। এই ভিলেজ স্থাপিত হলে প্রায় ৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।