ইউক্রেনে এখনও আটকে আছে অন্তত ৩০০ বাংলাদেশি
রাশিয়ার আক্রমণে কোণঠাসা ইউক্রেনে এখনও আটকে রয়েছে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি। ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশগুলোয় পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন তারা।
পোল্যান্ডে বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তা অনির্বাণ নিয়োগি বৃহস্পতিবার বিকালে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "এই মুহূর্তে পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্তে আছি। আমরা বাংলাদেশি নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়তে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।"
"রাশিয়া আক্রমণ করার পর বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ জন বাংলাদেশি ইউক্রেন ছেড়েছেন। অধিকাংশই ইউক্রেন ছেড়ে পোল্যান্ডে আসছেন। পোল্যান্ডে পৌঁছানো বেশিরভাগ বাংলাদেশি তাদের নিজস্ব গন্তব্যে চলে গেছেন। এর বাইরে কিছু সংখ্যক অভিবাসী বাংলাদেশি দূতাবাসের ব্যবস্থা করা ডরমেটরিতে অবস্থান করছেন," বলেন তিনি।
নিজের দেখা অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, "পায়ে হেঁটে দূর-দূরান্ত থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা বাংলাদেশিদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।"
ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডের মেডিকা সীমান্তে আসা বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস৷ পাশাপাশি পোল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও স্বদেশিদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন৷
পোল্যান্ডের বাংলাদেশি দূতাবাস ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে প্রবেশকারী বাংলাদেশি অভিবাসীদের উদ্দেশ্যে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, "মেডিকা বর্ডার থেকে শেমিশেল শহরে নিয়মিত শাটল বাস চলছে। যারা বর্ডার পার হয়ে ঢুকছেন, তারা খাবার ও পানি খেয়ে অনুগ্রহ করে দ্রুত শাটল বাসে করে শেমিশেল শহরে চলে যাবেন। সেখান থেকে ট্রেনে করে ওয়ারশ যেতে পারবেন। আবার সেখানে পোল্যান্ড সরকারের শেল্টার হাউজ আছে, যেখানে অল্প সময়ের জন্য থাকা যাবে"।
ইউক্রেনে বর্তমানে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস বা কনস্যুলেট নেই। পোল্যান্ডের বাংলাদেশি দূতাবাস ইউক্রেনের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগে কাজ করে থাকে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে পালিয়ে দেশটি থেকে আসা লোকের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছেছে। ইউরোপীয় দেশগুলোও শরণার্থী নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
ইনফো-মাইগ্র্যান্টসের মতে, কঠোর অভিবাসন নীতির জন্য পরিচিত হাঙ্গেরি ও গ্রীসও এসব শরণার্থীদের আশ্রয় নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মতে, আট লাখ ৭৪ হাজারেরও বেশি শরণার্থী ইউক্রেনের সংঘাত থেকে বাঁচতে পালিয়েছে এবং অন্যান্য দেশে নিরাপত্তা চেয়েছে।
ইউএনএইচসিআর অনুসারে আরও ১০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বেশিরভাগ শরণার্থী বর্তমানে ইউক্রেনের পশ্চিমে অবস্থিত পাঁচ দেশ- পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, মলদোভা বা স্লোভাকিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে।
ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত নেই এমন ইউরোপীয় দেশ যেমন জার্মানি, ইতালি ও গ্রিসেও প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।