অবৈধভাবে ইউক্রেনে যাওয়ায় ৫ বাংলাদেশিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ইউক্রেনে আটক ৫ বাংলাদেশি নাগরিকের কাছে কোনো বৈধ ভিসা বা পাসপোর্ট না থাকায় তাদেরকে ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এবং পোলিশ সরকার, উভয় পক্ষ থেকেই আটককৃত বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ফুটবল ম্যাচ দেখতে রাশিয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন ওই পাঁচ বাংলাদেশি। কিন্তু একসময় বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ইউক্রেনে ঢুকে পড়েন এবং তাই ইউক্রেন পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
এর আগে অভিযোগ আসে যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে ইউক্রেনে এবং তাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্ত থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার দূরে জুরাভিসি নামক একটি জায়গায় নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন দেশের ১২০ নাগরিককে একটি সাবেক ডিটেনশন সেন্টারে(যা বর্তমানে ক্যাম্প) আটক অবস্থায় দেখা যায়।
এদের মধ্যে রবিবার গ্রেপ্তার হওয়া ঐ পাঁচ বাংলাদেশিও ছিলেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, আটকে পড়া বাংলাদেশিদের একজন, রিয়াদ মালিক বলেছেন, "এখানে আমাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে এবং তারা আমাদের ফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন। আমি কোনোমতে এই ফোনটি লুকিয়ে রেখেছিলাম এবং এর মাধ্যমেই আমি আপনাদের সাথে কথা বলতে পারছি। তারা আমাদের ফোন নিয়ে গেছে যেন আমরা গণমাধ্যমের কাউকে কিছু জানাতে না পারি। তারা আমাদের বন্দী করে রেখেছে এবং জিম্মি হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা আমাদের পর্যাপ্ত খাবারও দিচ্ছে না।"
গত ৩ মার্চ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশি কার্গো জাহাজ 'বাংলার সমৃদ্ধি'র নাবিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইউক্রেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, "আমরা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর এই আচরণের প্রতি ধিক্কার জানাই, যারা কিনা আন্তর্জাতিক নীতির বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের একটি কার্গো জাহাজকে সমুদ্রবন্দরে দিনের পর দিন আটকে রেখেছে, বন্দরে মাইন স্থাপন করেছে এবং বিদেশি বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।"
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে যুদ্ধাঘাতে বিপর্যস্ত ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ২৯ নাবিকসহ আটকা পড়ে ছিল বাংলার সমৃদ্ধি নামের কার্গো জাহাজটি।
গত ২ মার্চ বুহ নদীতে মিসাইল আক্রমণের মুখে পড়ে জাহাজে থাকা বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মৃত্যু হয়।
ওই হামলার পর জাহাজের ক্রু সদস্যরা এক ভিডিও বার্তায় তাতক্ষণিক সাহায্যের আবেদন জানান। গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে নিকটবর্তী একটি বাংকার থেকে উদ্ধার করা হয়।