বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। মার্চ মাসে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের এই পরিস্থিতিকে আবহাওয়াবিদরা বলছেন 'অস্বাভাবিক'। লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে 'অশনি'। শ্রীলঙ্কা এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড়ের কোনো বার্তা এখনো না দিলেও দেশের ও ভারতের একাধিক আবহাওয়াবিদ এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ নাথ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ভারত সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি ১৭ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১১টায় গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০ মার্চ এটি আন্দামান দ্বীপের পোর্ট ব্লেয়ার অতিক্রম করে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে শুরু করবে। ২২ মার্চ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে।"
"স্বাভাবিকভাবে এপ্রিল মাসে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এবার এই দুই সাগরের আবহাওয়ায় বেশ তারতম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মার্চ মাসে ঘূর্ণিঝড়ের এই পরিস্থিতি বঙ্গোপসাগরের ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা। এটি ঘূর্ণিঝড় হবে, তবে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরের সম্ভাবনা কম", বলেন অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ নাথ।
তিনি বলেন, "প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে এগোবে। এরপর সেটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিতে পারে। আগামী বুধবার (২২ মার্চ) নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলের স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। যদিও ঘূর্ণিঝড়ের মূল গতিপথ থাকবে মিয়ানমারমুখী। তবে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় দারুণ ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।"
তিনি জানান, নিম্নচাপের কেন্দ্রে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৪ দশমিক ৯২ কিমি। ২২ মার্চ উপকূলে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ৭৪ দশমিক ৮ কিমি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূলে ১ দশমিক ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে। মিয়ানমার উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা হবে ২ দশমিক ৬ ফুট পর্যন্ত।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২১ মার্চ নাগাদ এটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পরে তা উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে, যাবে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে।
তবে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে রাজি নন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ভারত মহাসাগরে একটা সিস্টেম ফর্ম করছে। আমরা সেটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছি। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিবে কিনা সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না।"