পুনরায় ইউ-টার্ন চালু করলেও কমছে না ঢাকার যানজট
যানজট নিরসনে গত বছরের ৩ এপ্রিল মহাখালী থেকে উত্তরা পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কে কয়েকটি ইউ-টার্ন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি রাজধানীর যানজট নিরসনে পরিস্থিতি সামাল দিতে কয়েকটি ইউ-টার্ন আবার খুলে দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।
রমজানের শুরুতে যানজট বেড়ে যাওয়ায় হাজার হাজার নগরবাসীকে ঢাকার রাস্তায় ইফতার করতে হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কাকলী মোড়ে একটি প্রধান ইউ-টার্ন খুলে দিয়েছে। এছাড়া, রাস্তার নির্মাণ কাজের কারণে বিমানবন্দর থেকে রাজলক্ষ্মী এলাকা পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কে আরও বেশ কয়েকটি ইউ-টার্ন আবার চালু করা হয়েছে।
ট্রাফিকের সহকারি কমিশনার (মহাখালী জোন) আশফাক আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "কাকলী ইউ-টার্নটি আবার চালু হওয়ার পর যানজট কিছুটা কমেছে। তবে মহাখালী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যানজট আগের মতোই রয়েছে।
বনানীর একটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাহিদ হাসান। অফিসের কাজে পল্টন এলাকায় যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলেন সাড়ে ১২ টার দিকে। প্রায় ৪০ মিনিট বসে থাকার পর তিনি মহাখালীর আমতলী এলাকা পার হন। কিন্ত মহাখালী বাস টার্মিনালের কাছে এসে ফের বসে থাকতে হয় তাকে।
বাসে এভাবে থেমে থেমে পল্টন যেতে অনেক সময় লেগে যাবে ভেবে তিনি বাস থেকে নেমে অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল ভাড়া করেন। এরপরও একাধিক এলাকায় দীর্ঘ সময় আটকে থেকে পল্টনে আসতে তার প্রায় ৩টা বেজে যায়।
জাহিদ হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে টিবিএসকে বলেন, "কাজ শেষ করে অফিসে ৪ টায় থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্ত পল্টনে আসতেই ৩টা বেজে গেলো। এভাবে একদিকে জ্যামের ভোগান্তি অন্যদিকে রোজা রেখে কড়া রোদে এভাবে জার্নি করে ধৈর্য হারা হয়ে যাচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদেরকে শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে।"
জাহিদ হাসানের মতো গতকাল শহরজুড়েই ছিলো বিভিন্ন গন্তব্যে বের হওয়া মানুষজনের ভোগান্তি।
পল্টন, গুলিস্তান, শাহবাগ, ধানমন্ডিসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পরিবহনের চাপ মূল সড়ক থেকে আশপাশের সংযোগ সড়কেও ছড়িয়ে পরেছে। ফলে এসব এলাকার সিগনালগুলোতে ১ মিনিট গাড়ি ছাড়লেও ১০ মিনিটের বেশি থেমে থাকতে হয়েছে।
অন্য এলাকাগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাবতলী, সায়দাবাদ কিংবা উত্তরা হয়ে গাজীপুরমুখী যাত্রীদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
এয়ারপোর্ট এবং উত্তরার যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান টিবিএসকে বলেন, "দুপুরের পর থেকে এই এলাকার চলাচল অনেকটাই আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে গুলশানমুখী পরিবহনের একটু চাপ আছে।"
তিনি বলেন, এই এলাকায় এমআরটি এবং বিআরটি প্রজেক্টের কাজ চলায় রাস্তা সরু হয়ে আছে। এছাড়া ঢাকায় আগের তুলনায় পরিবহন ব্যপকভাবে বেড়েছে যার কারণেই এই রুটে দীর্ঘ জট লেগে যায়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহাখালী, বনানী ও নতুনবাজার বাড্ডা এলাকায় গত কয়েক দিনের তুলনায় পরিবহনের চাপ অনেক বেশি। বনানী এলাকায় কাকলী ক্রসিং খুলে দেয়া এবং অপরিকল্পিত ইউটার্ন নির্মাণের কারণে এই অংশে পরিবহনের ধীরে চলছে বলে একাধিক চালকেরা জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক-গুলশান জোন) মুস্তাফিজুর রহমান টিবিএসকে বলেন, "সকাল থেকে কিছুটা সমস্যা হলেও এখন উত্তরার দিকেও স্বাভাবিক হয়েছে চলাচল। এছাড়া গুলশান থেকে উত্তরামুখী গাড়িগুলো দ্রুত ছেড়ে দিতে আপাতত কাকলী ক্রসিং খুলে দেয়া হয়েছে।"
তিনি বলেন, "গুলশান বনানী ঢাকার মিডেল পয়েন্ট হওয়ায় পরিবহনের চাপ বেশি। এছাড়া অন্য এলাকার তুলনায় এখানে ব্যাক্তিগত পরিবহনের চাপ বেশি হওয়ায় যানজট নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে বাড়তি চাপ মোকাবেলা করতে হয়।"