বিনা টিকিটের যাত্রীরা আমার আত্মীয়: অবশেষে স্বীকার করলেন রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন অবশেষে স্বীকার করেছেন, বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করা ওই তিন যাত্রী তার আত্মীয়।
রোববার ঢাকার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও বলেন, ট্রেনের টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করেন। তবে তিনি কাউকে বরখাস্ত করতে বলেননি।
মন্ত্রী বলেন, "গতকাল পর্যন্ত আমি জানতাম না যে তারা [যাদের জরিমানা করা হয়েছে] আমার স্ত্রীর আত্মীয়।"
"তবে সে কাউকে সাসপেনশন করতে বলেনি।"
"যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমার জন্য স্বভাবতই বিব্রতকর", বলেন তিনি।
এদিকে, আজ টিটিই শফিকুল আলমের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
এ ঘটনায় টিআইবির প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, "টিআইবির বিবৃতি দ্রুত সময়ে জারি করা হয়েছে। আমার সম্পৃক্ততা নিশ্চিতের আগেই তারা এটি করেছে।"
গত ৫ মে ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে তিন যাত্রী বিনা টিকিটে এসি কেবিনে চেপে বসেন। ট্রেনে কর্তব্যরত টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের টিকিট দেখতে চাইলে তারা রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন।
এসিওর পরামর্শ অনুযায়ী টিটিই শফিকুল ইসলাম ওই তিন যাত্রীকে এসি টিকিটের পরিবর্তে মোট ১ হাজার ৫০ টাকার জরিমানাসহ সুলভ শ্রেণির নন এসি কোচের সাধারণ আসনের টিকিট করে দেন।
এরপর যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে ওই ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) মো. শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। শুক্রবার (৬ মে) সন্ধ্যায় শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়।
তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন শফিকুল। তার দাবি, রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জরিমানা করায় তাকে বরখাস্ত করা হয়।
তিনি বলেন, "ঈশ্বরদী থেকে অল্পবয়সী তিন ট্রেনযাত্রী রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি কেবিনে ওঠেন।"
"মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়ায় আমি সম্মান দেখিয়ে এসিও স্যারের পরামর্শে তাদের সুলভ শ্রেণির নন-এসি কোচের সাধারণ আসনে বসিয়ে দিই। আমি তাদের সঙ্গে কোনো রকম অসদাচরণ করিনি।"
ওই তিন যাত্রী তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেনে লিখিত কোনো অভিযোগ না করলেও ঢাকায় পৌঁছে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে 'অসদাচরণে'র অভিযোগ করেন।
পুরো ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম হয় এবং অনেকেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।