বাবা ভালো নেই, হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সৌমিত্র কন্যা পৌলমী বসু
গভীর কোমায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রয়েছেন ১০০ শতাংশ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে। মিরাকলও বোধহয় আর শেষরক্ষা করতে পারবে না, জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শনিবার রাতেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছিল, হাজির ছিলেন তার কন্যা পৌলমী বসু।
এদিন গভীর রাতে কলকাতার বেলেভিউ হাসপাতালের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেল পৌলমী বসুকে। রোববার ভোরেই ফের হাসপাতালে হাজির হন পৌলমী। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যে জায়গাতে রয়েছেন, সেখান থেকে ফিরে আসবার আশা কার্যত ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতিতে লাগাতার অবনতি হয়েছে। সমস্ত অঙ্গকে সচল রাখতে যা কিছু করা প্রয়োজন সবই করা হয়েছে, তবে তাতেও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঠেকানো যাচ্ছে না। ৮৫ বছর বয়সী এই অভিনেতার স্নায়ু সক্রিয়তা তলানিতে, কোনো ওষুধেই কাজ হচ্ছে না।
'শেষ চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে কখনো কখনো মিরাকলও কাজ করে না; হয়তো মিরাকলও কম পড়বে ওনাকে এই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে', হতাশার সুরে জানিয়েছেন সৌমিত্রের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অরিন্দম কর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। সম্পূর্ণ অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে বর্ষীয়ান অভিনেতাকে।
গত ৬ অক্টোবর থেকে মিন্টো পার্ক লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সৌমিত্র।
চিকিত্সকরা স্বীকার করে নিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই অবস্থা থেকে ফিরে আসা কার্যত অসম্ভব। অরিন্দম কর জানান, প্রবীণ অভিনেতার স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে কোভিড এনসেফেলোপ্যাথি। তার জেরে 'সব চেষ্টা'-কে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। গত ৪০ দিন ধরে নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিয়োলজি, ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন, আইডি বিশেষজ্ঞ-সহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের একটি দল তার চিকিৎসায় যুক্ত ছিলেন।
ওই চিকিৎসকের কথায়, 'স্টেরয়েড, ইমিউনোগ্লোবুলিন (অ্যান্টিবডি), কার্ডিয়োলজি, অ্যান্টি-ভাইরাল থেরাপি, অনাক্রম্যতা- সবরকমের চেষ্টা করেছি আমরা।'
বাবার অবস্থা দেখে স্বভাবতই নিজেকে সামলাতে পারছেন না পৌলমী। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেও এ দিন নিজের আবেগ চেপে রাখতে পারলেন না সৌমিত্র কন্যা।