সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণে যাচ্ছেন অভিনেতা উইলিয়াম শাটনার
'স্টার ট্রেক'খ্যাত কানাডিয়ান অভিনেতা উইলিয়াম শাটনারের বয়স এখন ৯০ বছর। কিন্তু পরিস্থিতি বলছে, বয়স তার কোনো ইচ্ছাপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। কারণ জেফ বেজোসের প্রতিষ্ঠান, 'ব্লু অরিজিনে'র পরবর্তী স্পেসফ্লাইটে চড়ে তিনি এমন এক জায়গায় পৌঁছাবেন, যেখানে এর আগে কোনো ৯০ বছর বয়সী যেতেই পারেননি!
ধারাবাহিক সিরিজ ও ক্লাসিক টিভি শো 'স্টার ট্রেক'-এ জেমস টি কার্ক চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পান উইলিয়াম শাটনার।
আগামী অক্টোবরে 'নিউ শেফার্ড' পরবর্তী বেসামরিক ফ্লাইট চালু করবে। ১৫ মিনিটের সেই ফ্লাইটের যাত্রীদের একজন হবেন শাটনার। তবে ফ্লাইটের নির্দিষ্ট দিন-ক্ষণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
ব্লু অরিজিনের এই ফ্লাইটের আরেকটি বিশেষত্ব হলো, এটি একটি প্রামাণ্যচিত্রের কাজে লাগবে। প্রজেক্টটির জন্য এর আগে ডিসকভারিকে প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা প্রত্যাখ্যান করে।
এ মুহূর্তে শাটনারের টিম অন্য এক জায়গায় প্রজেক্টটির বিষয়ে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে।
ডেইলি মেইল শাটনারের টিম ও ব্লু অরিজিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও দুপক্ষের কেউই এই খবর নিশ্চিত করেনি।
বেজোসের ব্লু অরিজিন তাদের প্রথম বেসামরিক ফ্লাইট চালু করে গত ২০ জুলাই। ওই ফ্লাইটে বেজোস নিজে তার ভাই মার্ক, ডাচ টিনেজার অলিভার দিমেন ও পাইলট ওয়ালি ফাংককে নিয়ে মহাকাশ ভ্রমণ করেন।
এতদিন পর্যন্ত সবচেয়ে বৃদ্ধ ব্যক্তি হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণের রেকর্ড ছিল ৮২ বছর বয়সী পাইলট ওয়ালি ফাংকের দখলে। শাটনার এবার সেই রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, শাটনারকে ফ্লাইটের সিটটি বিনামূল্যেই দেওয়া হচ্ছে। তার সহযাত্রী নভোচারীদের নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
এর আগে বেজোসের ফ্লাইটের সহযাত্রী অলিভার দিমেনের বাবা হেস দিমেন নিলামে ২০ মিলিয়ন ডলারে ছেলের জন্য আসন কিনেছিলেন।
১৮ বছর বয়সী অলিভার এখন পর্যন্ত সর্বকনিষ্ঠ মহাকাশ ভ্রমণকারী এবং একবিংশ শতকে জন্মানো প্রথম মহাকাশচারী।
বেজোসের স্পেস লঞ্চ ও সম্প্রতিকালে বিলিয়নিয়ারদের 'মহাকাশ পর্যটন দৌড়ে' নামা প্রসঙ্গে শাটনারের মন্তব্য, 'জানি, মহাকাশ ভ্রমণকে সহজলভ্য ও জনপ্রিয় করে তোলা নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক রয়েছে। আমি এমন অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা মঙ্গলগ্রহে যেতে ইচ্ছুক।'
অবশ্য, বেজোসের মঙ্গলগ্রহ ভ্রমণের মিশনকে 'অদ্ভুত' বলে আখ্যা দিয়েছেন এই অভিনেতা।
"সেখানে (মঙ্গলগ্রহ) যেতে দেড় বছর সময় লাগে। মানুষ ভাববে, আমরা হইহুল্লোড় করে একটা ছুটি কাটাতে গিয়েছি। কিন্তু না! আপনি শূন্য মাধ্যাকর্ষণের একটা জায়গায় আছেন, যা কি না নরকের চাইতেও গরম এবং সেখানকার বাতাস বিষাক্ত। আপনি চিৎকার করবেন, 'বাঁচাও, বাঁচাও, আমি মারা যাচ্ছি!' কি দুর্ভাগ্যজনক!"
মহাকাশ ভ্রমণের বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন শাটনার। অবশ্য তিনি নৈতিকতা সম্পর্কে নিজের মনোভাব জানিয়ে কথার ইতি টানেন, "আপনারা তো আমার বয়স জানেনই, যে বয়সে মানুষ নৈতিকতা সম্পর্কে আরও সচেতন হতে থাকে। যেকোনো মুহূর্তে মনে হতে পারে, 'আমার একটু মাথা ঘুরাচ্ছে, ওহ, আমি কি তবে মারা যাচ্ছি?' এটা আসলে খুব মজার একটা প্রশ্ন!"
বলে রাখা ভালো, সম্প্রতি আরটি আমেরিকার সঙ্গে মিলে বৈজ্ঞানিক থিমভিত্তিক টকশো 'আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড' শুরু করায় সমালোচিত হয়েছেন শাটনার।
মার্কিন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিগুলোর ভাষ্যে, ক্রেমলিন-সমর্থিত এই চ্যানেলকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার একটি 'বিদেশি এজেন্ট' বলে মনে করে, যারা রাশিয়ান সরকারের 'প্রোপাগান্ডা মেশিন' হিসেবে কাজ করছে।
-
সূত্র: ডেইলি মেইল