সেলিব্রিটি হাদিদ পরিবারের সবচেয়ে ধনী হাদিদ কে?
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত সেলিব্রিটি পরিবারগুলোর মধ্যে একটি তারা। ২০১২ সাথে 'দ্য রিয়েল হাউসওয়াইভস অফ বেভারলি হিলসে'র তৃতীয় সিজনে ইয়োলান্ডা হাদিদ জায়গা করে নিলে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিকভাবে এই পরিবারের কেউ আলোচনায় আসেন।
সাবেক ডাচ মডেল ইয়োলান্ডার অনুপ্রেরণায় তার তিন সন্তান জিজি, বেলা এবং আনোয়ার কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে সফল এবং ধনী মডেলদের মাঝে জায়গা করে নেয়। একইসঙ্গে বিখ্যাত হাদিদ বংশের আর্থিক সাফল্যও মানুষের নজর কাড়তে শুরু করে।
চলুন ২০২১ সালে এসে হাদিদদের ব্যাংক-ব্যালেন্স কেমন যাচ্ছে, সেটা জেনে নেওয়া যাক-
ইয়োলান্ডা হাদিদ (৫৭)
আনুমানিক নেট মূল্য: ৪.৫ কোটি মার্কিন ডলার
নেদারল্যান্ডসের একটি ছোট কৃষক শহরে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ইয়োলান্ডা নিশ্চিতভাবেই অনেক দূর এসেছেন। প্রথম জীবনে প্যারিস, হামবুর্গ, মিলান, সিডনি, টোকিও এবং নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক মডেল হিসেবে কাজ করার পর ১৯৯৪ সালে লস এঞ্জেলেসে চলে আসেন তিনি এবং প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড মোহাম্মদ হাদিদের সঙ্গে সংসার শুরু করেন। রিয়েলিটি শো 'দ্য রিয়েল হাউসওয়াইভস অফ বেভারলি হিলসে' কাজ করার জন্যই সর্বাধিক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
২০১২ সালে তার লাইম রোগ ধরা পড়ে। রোগ ধরা পড়া থেকে চিকিৎসার সময়টুকু এই রিয়েলিটি শোতে ক্যামেরাবন্দী হন তিনি।
বৈচিত্র্যময় ক্যারিয়ারের অধিকারী এবং দুজন ধনাঢ্য পুরুষের সঙ্গে সংসার করা ইয়োলান্ডার ৪.৫ কোটি ডলারের মূল্যমান তাই কাউকেই অবাক করার কথা নয়।
জিজি হাদিদ (২৬)
আনুমানিক নেট মূল্য: ২.৯ কোটি মার্কিন ডলার
একজন টমবয় কিশোরী থেকে মায়ের রিয়েলিটি শো, এরপর সেখান থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন সুপারমডেলদের একজন হয়ে ওঠা জিজি হাদিদের উত্থান পর্ব আমরা দেখেছি চোখের সামনেই।
২০১৩ সালে একজন ফুল-টাইম মডেল হিসেবে নাম লেখানোর পর জিজি শুধু ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদেই জায়গা পেয়েছেন ৩৫ বার।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া মডেলদের একজন জিজি। তার বাৎসরিক আয়ই প্রায় ১ কোটি ডলারের মতো।
শুধু ক্যারিয়ার না, ব্যক্তিগত জীবনেও বড় শিরোনাম কুড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডের হার্টথ্রব জায়ন মালিককে বিয়ে করেছেন এই ২৬ বছর বয়সী, এবং তাদের একসাথে একটি মেয়েও রয়েছে।
বেলা হাদিদ (২৪)
আনুমানিক নেট মূল্য: ২.৫ কোটি মার্কিন ডলার
সুপার মডেল জিজির সাথে বিশ্ববাসী অভ্যস্ত হতে না হতেই মডেলিং জগতে নাম লেখান তার ছোট বোন বেলা হাদিদ।
জিজি নাম লেখানোর এক বছর পর, ২০১৪ সালেই আইএমজি মডেলসের সঙ্গে স্বাক্ষর করেন বেলা।
বড় বোনের মতোই দ্রুত সাফল্য অর্জন করা শুরু করেন তিনি। ২০১৮ সালে এসে তার আয় দাঁড়ায় ৮৫ লাখ মার্কিন ডলারে। পারিশ্রমিকের দিক থেকে বর্তমানে তিনি বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ উপার্জনকারী মডেল। জিজ্ঞেস করতে পারেন, তালিকায় সাতে কে? আর কেউ না, বেলার বোন জিজি।
মোহাম্মদ হাদিদ (৭২)
আনুমানিক নেট মূল্য: ৫০ লাখ মার্কিন ডলার
প্রপার্টি ডেভেলপার মোহাম্মদ হাদিদ পাঁচজনের বাবা। তিনি সংসার করেছেন মোট দুইবার। প্রথমে ম্যারি বাটলার নামে একজন নারীর সঙ্গে এবং এরপর ১৯৯৪ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইয়োলান্ডার সঙ্গে সংসার করেন তিনি।
২০১৫ সালে তার ভঙ্গপ্রায় মেগা-ম্যানশন সংস্কার না করায় লস এঞ্জেলস সিটি কাউন্সিল হাদিদের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা করে। জবাবে একসময়কার কোটিপতি হাদিদ আদালতে জানান, বিল্ডিংটি ভাঙার জন্য প্রায় ৫০ লাখ ডলার লাগবে, যা তার কাছে নেই। এরপর ২০২০ সালে তিনি দেউলিয়াত্ব ঘোষণা করেন। জানান, ম্যানশনের জন্যই প্রায় ছয় কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি, যার অর্ধেক তার নিজের টাকা এবং বাকি অর্ধেক ধার করা।
আনোয়ার হাদিদ (২২)
আনুমানিক নেট মূল্য: ৪০ লাখ মার্কিন ডলার
২২ বছর বয়সী আনোয়ার বিখ্যাত হাদিদ বংশের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য।
বড় বোন জিজি এবং বেলার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আনোয়ারও মডেলিংয়ে যোগ দিয়েছেন। নিজের মডেলিং কাজের জন্যই তিনি সর্বাধিক পরিচিত। তবে সংগীত জগতেও পদচারণা আছে তার। ২০১৯ সালে 'ব্লিচ' শিরোনামে নিজের অভিষেক অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন তিনি।
এই সুদর্শন হাদিদ পূর্বে কেন্ডাল জেনার এবং নিকোলা পেল্টজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে পপ সুপারস্টার দুয়া লিপাকে ডেট করছেন।
ম্যারিয়েল হাদিদ (৪০)
আনুমানিক নেট মূল্য: ১০ লাখ মার্কিন ডলার
হাদিদ ভাই-বোনদের মধ্যে ম্যারিয়েলই সর্বজ্যেষ্ঠ। ১৯৯২ সালে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া মোহাম্মদ ও ম্যারির প্রথম সন্তান তিনি।
মারিয়েল দুই সন্তানের মা, এবং হাদিদ আইওয়্যার নামে একটি চশমার ব্র্যান্ড রয়েছে তার। তার ছেলে-মেয়েকে তাদের খালা জিজির ইনস্টাগ্রাম পেজে নিয়মিত দেখা যায়।
ডেভিড ফস্টার (৭১)
আনুমানিক নেট মূল্য: ১৫ কোটি মার্কিন ডলার
ইয়োলান্ডার প্রাক্তন স্বামী ডেভিড ফস্টারের কথা উল্লেখ না করে হাদিদ পরিবারের অর্থকড়ি নিয়ে ঠিক আলোচনা করা যায় না।
২০১১ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ইয়োলান্ডার সঙ্গে সংসার করেছেন তিনি। এ সময়ে 'দ্য রিয়েল হাউসওয়াইভস অফ বেভারলি হিলস' রিয়েলিটি শোতে জিজি-বেলাদের স্নেহপূর্ণ সৎবাবার ভূমিকা পালন করেছেন ডেভিড।
হুইটনি হিউস্টন, সেলিন ডিওন এবং বার্বারা স্ট্রেইস্যান্ডের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করা ডেভিড সঙ্গীত জগতের একজন কিংবদন্তি। নন্দিত ক্যারিয়ারে ৪৭ বার মনোনয়ন পেয়ে মোট ১৬টি গ্র্যামি পুরস্কার হাতবন্দী করেছেন তিনি। এই প্রক্রিয়ায় আনুমানিক ১৫ কোটি ডলার অর্জন করেন তিনি। যার মানে, নিজে হাদিদ না হলেও, হাদিদ পরিবারের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিটির নাম ডেভিড!
- সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট