অনলাইনে পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পেইন চালিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে অ্যাম্বার হার্ডকে!
প্রাক্তন স্বামী জনি ডেপের আনা মানহানি মামলায় পরাজয়ের পর হলিউড অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ডের জীবনে নেমে এসেছে কালো ছায়া। মামলা-সংক্রান্ত বিতর্ককে কেন্দ্র করে বহুদিনের অর্জিত সুনাম হারিয়েছেন হার্ড। যদিও মামলার রায়ে ডেপ-হার্ড দুই পক্ষকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়, কিন্তু 'অ্যাকুয়াম্যান' অভিনেত্রীর দোষের পাল্লাই ছিল ভারি।
মামলার শুনানি চলাকালীন এবং রায় ঘোষণার পর থেকে এখনো পর্যন্ত অনলাইনে-অফলাইনে নানা রকমের হেনস্তা কটূক্তির শিকার হচ্ছেন এই মার্কিন অভিনেত্রী। সম্প্রতি নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে- মামলা চলাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'টার্গেট করে হেনস্তা'র শিকার হয়েছেন অ্যাম্বার হার্ড। তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। তবে এর পেছনে জনি ডেপের হাত ছিল নাকি ছিলনা, তা জানা যায়নি।
মামলার রায়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে জনি ডেপকে ১৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। তবে ভার্জিনিয়ার আইনের কারণে ক্ষতিপূরণের অংক কমতে কমতে এখন ১০.৩৫ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে অ্যাম্বার হার্ডকেও ২ মিলিয়ন ডলার প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
জনি ডেপ বনাম অ্যাম্বার হার্ড মামলাকে কেন্দ্র করে ঝড় ওঠে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। পক্ষ-বিপক্ষ, যুক্তি এবং পালটা যুক্তি দিয়ে কেউ কেউ জনি ডেপ, কেউবা অ্যাম্বার হার্ডের পক্ষ নিয়েছেন। তবে অ্যাম্বার হার্ডের পক্ষ নেওয়া লোকের সংখ্যা বিরল!
অনেকেই মনে করেন, অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর জন্য অনলাইনে একটি ক্যাম্পেইন চালানো হয়েছে এবং সেখানে কৃত্রিম বট ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু বট সেন্টিনেল এর প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টোফার বাউজি বলেন, অ্যাম্বার হার্ডকে হেনস্তা করার জন্য 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত ক্যাম্পেইন' চালানো হয়েছে। অর্থাৎ, যারা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন সত্যিকার মানুষই, বট নয়।
ক্রিস্টোফার বলেন, "একই জায়গায় বসে বা পরিচিত বন্ধুবান্ধবরা মিলেই অনলাইনে অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে তা নয়। একদল মানুষ যদি ঠিক করে যে তারা ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একযোগে অভিনেত্রীকে আক্রমণ করবে, তাহলে তারা এটা করতেই পারে!"
তিনি এটিকে সাইবারবুলিং ও সাইবারস্টকিং এর চরম পর্যায় বলে অভিহিত করেছেন। টুইটার তার ব্যবহারকারীদের যথেষ্ট বিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মামলার রায় ঘোষণার পর অ্যাম্বার হার্ডের বোন হুইটনি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, "আমি জানি আমি কী দেখেছি, কারণ সত্য সবসময়ই আপনার পাশে থাকবে। কিন্তু আমি দুঃখিত যে জুরিদের রায়ে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। কিন্তু আমি সবসময়ই তোমার এবং যারা তোমাকে সাহায্য করেছে, তাদের পাশে থাকবো।"
বলে রাখা ভালো, সম্প্রতি মামলার পুনঃশুনানি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন অ্যাম্বার হার্ড ও তার আইনজীবিরা। জুরিদের একজনের দিকে সন্দেহের তীর ছুঁড়েছিলেন তারা। কিন্তু তাদের সেই দাবি ধোপে টেকেনি এবং পুনরায় শুনানির সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছেন বিচারক।