'সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে বাঙালি খালি পেটে ঘুমিয়ে পড়ে', নওয়াজের বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্ক
জনপ্রিয় কোমল পানীয় স্প্রাইটের একটি বিজ্ঞাপনে বাঙালি সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে- এই অভিযোগ তুলে কোকাকোলা ইন্ডিয়ার সিইও এবং ভারতীয় অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবি। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপনের একটি 'ঠাট্টা' করা হয়েছে যা বাঙালি সম্প্রদায়ের প্রতি অসম্মানজনক।
"কোকাকোলার পণ্য স্প্রাইটের সেই মূল বিজ্ঞাপনটি ছিল হিন্দিতে। আমাদের সেটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এই বিজ্ঞাপনের বাংলা ডাবিং, যা বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে সম্প্রচারিত হচ্ছে; সেখানে অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী একটি বাক্যে ঠাট্টা করে বলেছেন- 'সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে বাঙালি খালি পেটে ঘুমায়'। এর অর্থ দাঁড়ায়, বাঙালি যদি সহজে কোনোকিছু হাতের নাগালে না পায়, তাহলে তারা ক্ষুধার্ত অবস্থায়ই ঘুমিয়ে পড়ে। আমাদের মনে হয়, এই বাক্যের মাধ্যমে বাঙালি সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে", বলেন দিব্যায়ন ব্যানার্জি নামের সেই আইনজীবী।
'সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করতে হয়'-এই বিখ্যাত বাংলা প্রবাদটির অর্থ হলো "সহজে কোনোকিছু অর্জন করা না গেলে, তোমার অন্য পন্থা অবলম্বন করে সেটা অর্জন করতে হবে"। এই প্রবাদটিই কিছুটা বদলে দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে স্প্রাইটের বিজ্ঞাপনের বাংলা ডাবিংয়ে।
ব্যানার্জি আরও বলেন, "হিন্দি বিজ্ঞাপনটিতে অবমাননাকর কিছু নেই। কিন্তু এটা আইটি অ্যাক্ট এর ধারা ৬৬এ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ১৫৩এ'র মধ্যে পড়ে। আমরা চাই এ ধরনের বিজ্ঞাপন তৈরি ও চটকদার কৌশল যেন ভবিষ্যতে আর না দেখা যায়।"
এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্প্রাইটের বিজ্ঞাপনটি সকল টিভি চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। টুইটারে স্প্রাইট ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বাংলায় লেখা হয়েছে, "সাম্প্রতিক সময়ে স্প্রাইটের একটি বাংলা বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য আমরা তীব্র অনুশোচনা অনুভব করছি। আমাদের অনিচ্ছাকৃত এই ভুলটা আমরা বাংলা প্রচার মাধ্যম থেকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করছি।
আমাদের কোম্পানি বাংলা ভাষাকে যথাযথ সম্মান প্রদান করে এবং কোক স্টুডিও বাংলার মতো প্ল্যাটফর্ম নিয়ে গর্ববোধ করে, যেখানে বাংলাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের সেবা, নতুন বিনিয়োগ, সিএসআর ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সংস্কৃতিকে সম্মান জানাতে দায়বদ্ধ।"