সন্তান লালন-পালনে কস্টনারকে দিতে হবে মাসিক ৬৩ হাজার ডলার! বামগার্টনার দাবি ছিল প্রায় তিনগুণ!
গত মে মাসেই অভিনেতা কেভিন কস্টনার ও ক্রিস্টিন বামগার্টনার যৌথ মতামতের ভিত্তিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর পরবর্তীতে গত জুন মাসে বামগার্টনার মার্কিন এই অভিনেতার কাছে সন্তানদের লালন-পালনের জন্য মাসিক ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার দাবি করেছিলেন।
তারই সূত্র ধরে গত শুক্রবার লস এঞ্জেলসের একটি আদালত তারকা দম্পতির সন্তানদের লালন-পালন ইস্যুতে রায় প্রদান করেছেন। রায়ে কস্টনারকে মাসিক ৬৩ হাজার ডলার প্রদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আপাতদৃষ্টিতে এই রায়ে বামগার্টনার নয় বরং কস্টনারই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। কেননা বামগার্টনার যেই পরিমাণ অর্থ চেয়েছিলেন, সেই তুলনায় আদালতের রায়ে ধার্য করা অর্থের পরিমাণ বেশ কম। এমনকি বর্তমানে সে লালন-পালন বাবদ ১ লাখ ২৯ হাজার ডলার লাভ করতেন; যা আদালত কর্তৃক নতুনভাবে ধার্য করা অর্থের তুলনায় দিগুণ।
৬৪ বছর বয়সী কস্টনার ও ৪৯ বছর বয়সী বামগার্টনার দীর্ঘ ১৮ বছর সংসার করেছেন। তাদের কেডেন (১৬), হেইস (১৪) ও গ্রেস (১৩) নামের তিন সন্তান রয়েছে।
আদালতের বিচারকাজ গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে মোট দুইদিন পর্যন্ত চলে। প্রথমদিকে বামগার্টনার ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলারের দাবি করলেও পরবর্তীতে তিনি সেটি ১ লাখ ৬১ হাজার ডলারে নামিয়ে আনেন।
এত বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবির পেছনে বামগার্টনারের আইনজীবী যুক্তি দেন যে, এই দম্পতির সন্তানদের বিলাসবহুল জীবন-যাপনের প্রতি ঝোঁক 'ডিএনএ' তেই রয়েছে। একইসাথে সন্তানেরা যেসব খেলাধুলার অনুশীলন করে, সেই তালিকাও বিচারকের কাছে তুলে ধরা হয়।
অন্যদিকে কস্টনার দাবি করেছিলেন, তার সাবেক স্ত্রী সন্তান লালন-পালনের জন্য যে অর্থ দাবি করেছেন সেটি 'অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক'। এছাড়াও বামগার্টনার শুধু প্লাস্টিক সার্জারিতেই প্রতি মাসে ১ লাখ ৮৮ হাজার ডলার খরচ করেন বলে জানান তিনি।
কস্টনার বলেন, "বামগার্টনার নিজের খরচের ৬০ ভাগই ব্যক্তিগত ট্রেইনার, অনির্ধারিত ক্রেডিট কার্ড ও কোনো ব্যাখ্যা বা ভিত্তি ছাড়াই নাবালক সন্তানদের প্লাস্টিক সার্জারিতে খরচ করেন।"
শুনানিতে উপস্থিত গণমাধ্যমের তথ্যমতে, বিচারকাজ চলাকালীন কস্টনার-বামগার্টনার একে অপরের দিকে ফিরেও তাকাননি। আদালতে কস্টনার তাদের সংসারের বিলাসবহুল জীবনযাপনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন।
ডেইলি মেইলের তথ্য অনুযায়ী আদালতে কস্টনার জানান, সংসারে প্রতি মাসে ফুল ও উপহার বাবদই ৪০ হাজার ডলার ব্যয় করতে হতো।
তবে বর্তমানে বামগার্টনার জানান, তাকে তার মায়ের ঋণ পরিশোধ করার জন্য বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার করতে হয়েছে। একইসাথে নতুন বাড়িতে ওঠার জন্য তার ভাইয়ের কাছে থেকেও ৮০ হাজার ডলার নিতে হয়েছে।
অন্যদিকে কস্টনারের আইনজীবী লরা ওয়াসের বলেন, "বিবাববিচ্ছেদের অংশ হিসেবে বিয়ের চুক্তি অনুযায়ী বামগার্টনার ইতিমধ্যেই ১.৫ মিলিয়ন ডলার লাভ করেছেন। এক্ষেত্রে যেহেতু তাদের পরিবার সিনেমার তারকার মতো জীবন যাপন করেন না, প্রাইভেট জেটের মালিকও নয় কিংবা সন্তানেরা ডিজাইনারদের পোশাকও পরে না, তাই এত বিপুল পরিমাণ অর্থের দাবি ভিত্তিহীন।"
আইনজীবী লরা ওয়াসের আরও বলেন, "লস এঞ্জেলসে সন্তানের লালন-পালনের জন্য এত বিপুল পরিমাণ অর্থের দাবি করতে আমি কাউকেই দেখিনি।"
অভিনেত্রী সিন্ডি সিলভার সঙ্গে ১৬ বছর সংসার করার পর ১৯৯৪ সালে তার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে কস্টনারের। এরপরে বামগার্টনারের সঙ্গে দ্বিতীয়বার গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি।
বিয়ের আগে বামগার্টনারের সঙ্গে ছয় বছর ডেট করেছেন কস্টনার। এরপরেই ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে বামগার্টনারকে বিয়ে করেন তিনি।