শাহরুখ খানের প্রতিবেশী কে এই বিলিওনিয়ার সুভাষ রুনওয়াল?
বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের সাফল্যের গল্প যেন এক অনুপ্রেরণার উৎস। তার মেধা, পরিশ্রম, ব্যক্তিত্ব বহু উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেতা-অভিনেত্রীকেও প্রেরণা যোগায়।
সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে শাহরুখ টেলিভিশন সিরিজ 'ফৌজি (১৯৮৮)' দিয়ে নিজের অভিনয় জীবন শুরু করেন। বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ভক্তদের উপহার দিতে থাকেন একের পর এক কালজয়ী সিনেমা।
গত তিন দশকে শাহরুখ শুধু মন্ত্রমুগ্ধ অভিনয়ই নয়, বরং গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার তথ্যমতে, বর্তমানে বলিউড বাদশাহর সম্পদের পরিমাণ ৬ হাজার ৩০০ কোটি রুপি।
অভিনয়ের পাশাপাশি শাহরুখ নিজেকে জড়িয়েছেন নানা ব্যবসা-বাণিজ্যে। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিবছর তার সম্পদের পরিমাণ হুহু করে বাড়ছে।
শাহরুখের মতোই যেন তার প্রতিবেশী রিয়েল এস্টেট টাইকুন সুভাষ রুনওয়ালের জীবনের গল্প। এই ধনকুবেরও উঠে এসেছেন মহারাষ্ট্রের ছোট শহর ধুলিয়ার অতি সাদামাটা এক পরিবার থেকে।
১৯৬৪ সালে রুনওয়াল পকেটে মাত্র ১০০ রুপি নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এরপর বছরের পর বছর জুড়ে আবাসন ব্যবসায় সফল হয়ে গড়ে তোলেন নিজের সম্পদের পাহাড়।
ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সুভাষের সম্পদের পরিমাণ ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১১,৫৬০ কোটি রুপি)।
সুভাষ রুনওয়াল বর্তমানে রুনওয়াল গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বান্দ্রায় শাহরুখের বাড়ির পাশেই সমুদ্রের একেবারে নিকটবর্তী একটি বাড়িতে থাকেন এই ধনকুবের।
রুনওয়াল একজন অভিজ্ঞ একাউন্টেন্ট ছিলেন। নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ১৯৭৮ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে নামেন আবাসন ব্যবসায়।
মুম্বাইয়ের শীর্ষ রিয়েল এস্টেট উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত রুনওয়ালের প্রথম প্রজেক্ট ছিল থানেতে; ১০ হাজার বর্গফুটের একটি হাউজিং সোসাইটি নির্মাণ। কয়েক বছর পর রুনওয়াল গ্রুপ নিজেদের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট 'রুনওয়াল নগর' নির্মাণ করেন। এতে ছিল মোট ১৬ টি টাওয়ার।
আবাসন ব্যবসায় সফলতা লাভ করে রুনওয়াল স্টিল ও ফার্মা ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের ব্যবসাকে সম্প্রসারিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আবাসন খাতের মতো সফলতা তিনি লাভ করতে পারেননি। তাই পরবর্তীতে তিনি মুম্বাইয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন।
রুনওয়ালের ছেলেরা পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেওয়ার পর গ্রুপটি মল নির্মাণে মনোযোগী হয়। প্রথমে তারা মুলুন্দে 'আর মল' নির্মাণ করেন; যেটি উদ্বোধন করে অমিতাভ বচ্চন। এরপর গ্রুপটি ঘাটকোপার এ 'আর-সিটি' মল নির্মাণ করেন; যার আয়তন ১.২ মিলিয়ন বর্গ ফুট।
শাহরুখের প্রতিবেশী হিসেবে শুধু রুনওয়ালই নয়, বরং সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন রণবীর সিং ও দিপিকা পাডুকোন। এ দম্পতি ২০২২ সালে ১১৯ কোটি রুপি দিয়ে মান্নাতের কাছে অবস্থিত একটি প্রিমিয়াম আবাসিক টাওয়ারে কোয়াড্রপ্লেক্স ফ্ল্যাট কিনেছেন। ফ্ল্যাটটি টাওয়ারের ১৬ থেকে ১৯ তলা পর্যন্ত বিস্তৃত এবং কার্পেট এরিয়ার আয়তন ১১,২৬৬ বর্গ ফুট।
এদিকে 'জিরো'র ব্যর্থতার পর লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের জগত থেকে লম্বা বিরতি নিয়েছিলেন শাহরুখ। তবে চলতি বছরে রূপকথার কামব্যাক করেন বাদশা। শুরুটা হয়েছিল 'পাঠান' দিয়ে, এরপর বক্স অফিসে ওঠে 'জওয়ান' ঝড়। শাহরুখ খানের এ বছরের তিন নম্বর ছবি 'ডাঙ্কি'।
প্রথম দুই দিনের বক্স অফিস কালেকশন বলছে, ১০০০ কোটির হ্য়াটট্রিকের রাস্তা বেশ কঠিন। পুরোনো সাফল্য রিপিট করতে ব্যর্থ হলেও সমালোচনা ভুলে সামনের দিকে তাকাচ্ছেন শাহরুখ। তবে এবার 'হিরোইজম' ভুলে তার বয়সের সঙ্গে খাপ খায় এমন ছবি করতে চাইছেন ৫৮ বছর বয়সী এই খান। রায়া আবিরচেদকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই ইচ্ছেই প্রকাশ করেছেন সুপারস্টার।
নিজের পরবর্তী প্রোজেক্ট নিয়ে শাহরুখ বলেন, "আমি আগামী বছর মার্চ-এপ্রিল নাগাদ শুরু করবো পরের কাজ। এবার আমি নিজের বয়সের সঙ্গে মানানসই চরিত্র করতে চাই। তারপরেও ছবির মূল চরিত্র হিসাবেই কাজ করতে চাই। আমার মনে হয় ভারতীয় ছবিতে একটা জিনিস আমরা মিস করি যে, নিজের বয়সের চরিত্র করেও আপনি ছবির হিরো হতে পারেন। ২০ বছর আগে আমি যেটা করতাম, সেই চার্মটা পর্দায় এখন তুলে ধরাটা বেশ মুশকিল। এখন আমার মধ্যে নতুন চার্ম রয়েছে, সেটা এই বয়সের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে। আমি এখনও অ্য়াকশন ছবি করতে চাই।"