২০২৩ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ কে-ড্রামা
২০২৩ সালে বিশ্বের বিনোদনপ্রেমীদের মাঝে কোরিয়ান (কে) ড্রামার ক্রেইজ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। কে-ড্রামার রোমান্টিক গল্প ও নির্মাণশৈলী বিশ্বের দর্শকদের বিনোদনের এক নতুন স্বাদের সন্ধান দিয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব অবশ্য নেটফ্লিক্সের। এটি কে-ড্রামার সাগরে সারা বিশ্বের বিনোদনপ্রেমীদের অবাধে বিচরণের সুযোগ দিয়েছে।
নেটফ্লিক্সের উত্থানের সাথে সাথে কে-ড্রামা বিশ্বের গ্লোবাল স্ট্রিমিংয়ে সকালের কফির মতোই সাধারণ হয়ে উঠেছে। এর হৃদয়স্পর্শী কাহিনি ও চোখ ধাঁধানো উপস্থাপনা দর্শকদের মনে কে-পপের মতোই আলাদা একটি জায়গা করে নিয়েছে।
এই ১০টি কে-ড্রামা বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল। আকর্ষণীয় কাহিনী, দক্ষ নির্মাণ ও বিষয়ের প্রাসঙ্গিকতা এই ড্রামাগুলোকে অনন্য করেছে।
ড্রামাগুলো দর্শকদের হৃদয় ও কল্পনার জগতকে আলোড়িত করেছে। এসব গল্পে গভীর জীবনবোধ ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ যেন রাঁধুনির হালকা নাশতা থেকে ক্রমান্বয়ে ভরপেট খাবার পরিবেশন করা।
এগুলো শুধু সময় কাটানোর অনুষঙ্গ নয়, তারা দর্শকদের এমন উপলব্ধি জাগাচ্ছে, যার প্রতিটি দৃশ্য ও ছবি শেক্সপীয়রের একেকটি উক্তির মতো গভীর।
আর অভিনয়? ভুলেই যাবেন আপনি স্ক্রিনে কিছু দেখছেন। মনে হবে আপনি দেয়ালের অন্য পাশ থেকে কারো জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত দেখছেন, তার জীবনের সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন এবং আবেগ তাড়িত হচ্ছেন। সেরা ১০ কে-ড্রামা-
মাস্কগার্ল
কিম-মো-মি একজন চাকুরজীবী নারী। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নিজের চেহারা নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। একসময় তিনি মুখে মাস্ক পড়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন নাচের ভিডিও আপলোড করেন এবং ক্রমেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। আস্তে আস্তে তিনি বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
এই থ্রিলারে মূলত বর্তমানের বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে দেখানো হয়েছে।
লাভ টু হেট ইউ
এই ড্রামায় ইও মি-রান একজন নো-ননসেন্স আইনজীবী এবং ন্যাম কাং হো একজন অভিনেতা। ন্যাম কাং হো নারীদের সম্পর্কে প্রাচীনপন্থী বিভিন্ন ধারণা পোষণ করেন। তারা একে অপরের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে প্রেমে পড়ে যান। এতে তাদের দারুণ রসায়ন এবং বিভিন্ন হাস্যরসাত্মক ঘটনা দেখানো হয়েছে।
ক্র্যাশ কোর্স ইন রোমান্স
সাবেক হ্যান্ডবল খেলোয়াড় ন্যাম হায়েং-সিওন কেয়ারটেকারের চাকরি নেন। অঙ্কের শিক্ষিকা চৈ চি-ইয়লের সঙ্গে চরম শত্রুতার পরে অবশেষে তাদের প্রেম হয়। পারিবারিক দায়বদ্ধতা ও শিক্ষাগত বাধা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে দারুণ রসায়ন জমে ওঠে।
ডিভোর্স অ্যাটর্নি শিন
সংগীতের অধ্যাপক শিন সাং-হান ঘটনাক্রমে বিবাহ-বিচ্ছেদ আইনজীবীতে পরিণত হন। এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সহযোগিতায় তিনি তার ক্লায়েন্টকে ডিভোর্স মামলা জিততে সাহায্য করেন। এই ড্রামায় বিবাহ-বিচ্ছেদকে সহজ করে দেখা হয়েছে এবং তিনজন মানুষের মধ্যকার আন্তরিক বন্ধুত্ব দেখানো হয়েছে।
বিহাইন্ড ইওর টাচ
পশু চিকিৎসক বং ইয়ে-বান কোনো কিছু স্পর্শ করে তার ইতিহাস সম্পর্কে জানার বিরল ক্ষমতা লাভ করেন। অন্যদিকে, গোয়েন্দা মুন জাং-ইওল তার শহরের একটি সিরিয়াল কিলিং সমস্যার সমাধান করেন। এই দুজনের মধ্যে একটি মিষ্টি সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বং ইয়ে-বানের অদ্ভুত ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনার ঘনঘটা দেখা যায়।
সেলিব্রেটি
সেও আহ-রি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। অনলাইনে তার এই বিপুল খ্যাতির পেছনের সত্য ও স্ক্যান্ডাল জনসম্মুখে প্রকাশ পায়। ফলে মুহূর্তেই সব খ্যাতি হারান তিনি। এই ড্রামায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেতিবাচক দিক এবং তথাকথিত ইনফ্লুয়েন্সার সংস্কৃতির স্বরূপ উন্মোচন করা হয়েছে।
কুইনমেকার
সাবেক ব্যবসায়িক কৌশল প্রণেতা হাং ডো-হী ঘটনাক্রমে একজন নির্বাচনী প্রচারক পদে নিযুক্ত হন। অহ কিয়ং-সুক নামের এক মানবাধিকার আইনজীবী একটি বড় ব্যবসায়িক গ্রুপের বিপক্ষে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন। হাং ডো-হী এই নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন।
এই ড্রামায় রাজনৈতিক সংকট ও শক্তিশালী নারী নেতৃত্বের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
ব্লাডহাউন্ডস
কিম গুন-ও এবং হং ও-জিন দুজন বক্সার এবং খুব ভালো বন্ধু। তারা একটি দুর্নীতিবাজ বিশাল চক্রের বিরুদ্ধে লড়তে শুরু করে। তারা শক্ত জালে জড়িয়ে পড়ে, তবে দুজনের বন্ধুত্বের মাধ্যমে সব জাল ছিন্ন করতে সক্ষম হন তারা।
দ্য গ্লোরি, পার্ট-২
এটি মুন ডং-ইউনের কাহিনী, স্কুলে তাকে বুলিকারীদের (উৎপীরণকারী) বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চান তিনি। এই ড্রামায় বুলিংয়ের মতো সামাজিক সমস্যা এবং প্রধান চরিত্রসমূহের বিরুদ্ধে করা লড়াইয়ের ছবি তুলে ধরা হয়েছে।
দ্য গুড ব্যাড মাদার
একটি দুর্ঘটনার পর থেকে চৈ কাং-হো নিজেকে ফের শিশু ভাবতে শুরু করেন। চৈ কাং-হো ও তার মা জিন ইয়াং-সুনের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়েই এই ড্রামা। এতে পারিবারিক পুনর্মিলন এবং কিছুটা রহস্যময়তা দেখানো হয়েছে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি