শতবর্ষে রাজকাপুর: ‘ভারতীয় সিনেমার সর্বকালের সেরা শোম্যান’
সম্প্রতি প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রযোজক ও অভিনেতা রাজ কাপুরের শতবর্ষপূর্তি হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতজুড়ে তার ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। রাজ কাপুরকে আদর করে 'ভারতীয় সিনেমার সর্বকালের সেরা শোম্যান' বলা হয়। খবর বিবিসির
এ উপলক্ষে গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি পাড়ি জমান পুরো কাপুর খান্দান।
এছাড়া, এ উপলক্ষে শনিবার ভারতের ৪০টি শহর এবং ১৩৫টি সিনেমা হলে তার ১০টি আইকনিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন। তার অভিনীত প্রথম দিককার চলচ্চিত্রগুলোতে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতা এবং দেশের আর্থসামাজিক চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।
কয়েক দশকের ফিল্মি ক্যারিয়ারে অগনিত ক্লাসিক ছবি থেকে সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন রাজ কাপুর। পূর্বসূরীর সেই লিগ্যাসি আজও স্বমহিমায় বহন করে চলেছে কাপুরদের বর্তমান প্রজন্ম।
রাজ কাপুরের কাজ এখনও ভারতীয় সিনেমাকে ঋদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে। তাইতো ১৯৮৮ সালে তার মৃত্যুর প্রায় চার দশক পরে, আজও তিনি ভারতের সবচেয়ে প্রিয় তারকাদের একজন।
২০১৫ সালে বিবিসি রেডিও ৪-এর সিরিজ 'ইনকারনেশন: ইন্ডিয়া ইন ৫০ লাইভস'-এ ইতিহাসবিদ সুনিল খিলনানি বলেন, 'রাজ কাপুর ভারতীয় সমাজবাদের মধ্যে রোমান্স, যৌনতা, গান এবং প্রাণ এনেছিলেন।'
প্রখ্যাত অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপূর এবং রামসরনী কাপূরের ঘরে ১৯২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর জন্ম হয় সৃষ্টি নাথ কাপূরের। পরে তিনি রণবীর রাজ কাপুর নাম গ্রহণ করেন এবং ১৯৩৫ সালে 'ইনকিলাব' ছবিতে শিশু অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
পর্দার সামনে নায়ক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর আগে তিনি পর্দার পেছনে একটু একটু করে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক কিদার শর্মার সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন, তার বাবার পৃথ্বী থিয়েটারে আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ছোটখাটো চরিত্রেও অভিনয় করেছেন।
তার ক্যারিয়ারের মাইলফলক ছিল ১৯৪৭ সালের 'নীল কমল' সিনেমাটি। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে তিনি নায়ক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ১৯৪৯ সালে 'বারসাত' সিনেমায় অভিনয় তাকে তারকাখ্যাতি এনে দেয়।
১৯৪৮ সালে কাপুর প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহাসিক আরকে ফিল্ম স্টুডিও, যার নাম বহু ব্লকবাস্টার সিনেমা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতির সঙ্গে যুক্ত।
তিনি ১৯৪৮ সালে 'আগ' সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং 'বারসাত' (১৯৪৯), 'আওয়ারা' (১৯৫১), 'শ্রী ৪২০' (১৯৫৫), এবং 'সঙ্গম' (১৯৬৪) মতো গুরুত্বপূর্ণ সিনেমায় অভিনেতা এবং পরিচালক হিসেবে তার বহুমুখী প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন।
তার অন্যান্য জনপ্রিয় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে- 'মেরা নাম জোকার' (১৯৭০), 'ববি' (১৯৭৩), 'সত্যম শিবম সুন্দরম' (১৯৭৮), এবং 'রাম তেরি গঙ্গা মেইলি' (১৯৮৫) প্রমুখ।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি