‘বঙ্গবন্ধু’ সিনেমা: আজ শেষ হচ্ছে বাংলাদেশ অংশের কাজ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র 'বঙ্গবন্ধু' সিনেমার শুটিং শেষ হচ্ছে আজ। গত ২১ নভেম্বর থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় শুরু হয় সিনেমাটির শুটিং। আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়া এবং সাভার এলাকায় শুটিংয়ের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে বাংলাদেশ অংশের কাজ।
এরপর ভারতের মুম্বাইতে আর ৭-৮ দিন কাজ করে শেষ হবে পুরো সিনেমার শুটিং। এমনটাই জানিয়েছেন এই বায়োপিকের বাংলাদেশ অংশের লাইন প্রডিউসার মোহম্মাদ হোসেন জেমী।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ও রেজিস্ট্রার ভবন এলাকায় শুটিংয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটির বাংলাদেশ অংশের দৃশ্যধারণ শুরু হয়। ঢাকা কলেজ মাঠে নির্মাণ করা হয় ৭ মার্চের ভাষণের সেট। সেখানে অভিনেতা আরিফিন শুভসহ অনেকেই অংশ নেন।
মোহাম্মদ হোসেন জেমী জানান, গত মাসের মাঝমাঝিতে চলচ্চিত্রটির পরিচালক শ্যাম বেনেগাল ঢাকায় আসেন। তারপরই শুটিং শুরু করেন।
গত শুক্রবার রাতে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে আলাপে মোহাম্মদ হোসেন জেমী বলেন, "চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের বেশি তথ্য দেয়ার অনুমিত নেই। যদি সবকিছু বলতে পারতাম খুব ভালো লাগতো। শুধু এতটুকু বলতে পারি, শুটিং শেষ হলেও পোস্ট প্রোডাকশনে অনেক কাজ বাকি আছে। শুটিংয়ের পাশাপাশি এই কাজও চলছে। পিরিয়ডিক্যাল শুটিংয়ের কারণে অনেক ভিএফএক্সের কাজ হচ্ছে।"
আজকের শুটিংয়ে শেষ দৃশ্যধারণ প্রসঙ্গে বলেন, "দুই-জায়গায় দুটি ইউনিট কাজ করছে। একটি টুঙ্গিপাড়ায়, আরেকটি সাভার। এখানে কোনো বড় তারকা নেই। ইন্ডিয়ান আর্মি, পাকিস্তান আর্মি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কিছু অ্যাকশন দৃশ্য করা হবে। আর টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর নিয়ে কিছু দৃশ্যধারণ করা হবে।"
লাইন প্রডিউসার হিসেবে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে জেমী বলেন, "এমন একটা প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর তাদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব ভালো। শ্যাম বেনেগাল অসাধারণ মানুষ ও পরিচালক। তারা সবাই খুব প্রফেশনাল।"
জানা গেছে, বাংলাদেশ অংশের শুটিংয়ের জন্য ভারত থেকে ১০৭ জন ক্রু এসেছিলেন। ১৫ জনের বেশি আর্টিস্ট এসেছিলেন। তারা অবশ্য আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে মুম্বাইয়ের দাদাসাহেব ফিল্ম সিটিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সিনেমার অর্ধেকের বেশি দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। বাকি কিছু অংশের শুটিং করা হচ্ছে বাংলাদেশে।
সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে শুটিংয়ের পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা পেছানো হয়েছিল।
এ সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকায় অভিনয় করছেন আরিফিন শুভ। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ আহমেদসহ আরও অনেকে এতে অভিনয় করছেন।
এরইমধ্যে নতুন করে বেশ কিছু চরিত্র যুক্ত হয়েছে। যেমন টিক্কা খানের চরিত্রে অভিনেতা জায়েদ খান, তোফায়েল আহমেদের চরিত্রে সাব্বির হোসেন, খালেদা জিয়ার চরিত্রে এলিনা শাম্মিসহ অনেকেই যুক্ত হয়েছেন।
ছবিতে যুক্ত অনেকেই জানিয়েছেন তাদের কাজের অভিজ্ঞতা। এরমধ্যে অভিনেতা আরিফিন শুভ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "এটা আমার জীবনের সেরা কাজ। জাতির পিতার চরিত্রে অভিনয় করার মাধ্যমে আমার অভিনয় জীবনের শ্রেষ্ট অর্জন হলো।"
উল্লেখ্য, এই ছবিতে আরিফিন শুভ মাত্র ১ টাকা পারিশ্রমিকে অভিনয় করেছেন।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বিগ বাজেটের চলচ্চিত্রটি আগামী বছরের মার্চে মুক্তি পাবে বলে জানা গেছে।