লতা যে কিংবদন্তি হবেন, আগেই বুঝেছিলেন তার সঙ্গীতগুরুরা
রোববার ভারতের মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে মারা যান উপমহাদেশের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কোভিড শনাক্ত হওয়ার পর গত মাসের ১১ তারিখ থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি, নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই উপমহাদেশে জ্ঞানীগুণীরা শোক প্রকাশ করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেয়ে গেছে তার প্রস্থানের শোকবার্তায়।
লতা যে একজন কিংবদন্তি হয়ে উঠবেন তা আগে থেকেই ধরতে পেরেছিলেন তার এক গুরু, ধরতে পেরেছিলেন হয়তো আরও অনেকেই। লতার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের ঘটনা এটি।
সবে ২২-২৩ বছর বয়স তখন লতার। ক্যারিয়ারের শুরুর ওই সময়ে অর্কেস্ট্রার ফাইনাল টেক দিতে চান, কিন্তু গানের শুরুতেই থেমে যান তিনি। থেমে গিয়ে বলছিলেন, কেউ একজন বেসুরো বাজাচ্ছে (সাব,কোই বেসুরা বাজা রহা হ্যায়)।
এ কথা শুনেই সুরকারের ধমক খেলেন তরুণী লতা। সেই সুরকারের নাম অবশ্য জানা যায়নি। রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কী বেশি জানো? এই পঞ্চাশ জন শিল্পীর মধ্যে কে বেসুরো বাজাবে? তুমি গাও," ("তুমহে জাদা পতা হ্যায়? ইস পঁচাশ মিউজিশিয়ান মে কোন বেসুরা বজায়েগা? তুম গাও")
কিন্তু আবারও গান শুরু করে থেমে যান লতা। থেমেই বললেন, "মাফ করবেন সাহেব, কেউ বেসুরো ভায়োলিন বাজাচ্ছে।"
এ কথা শুনেই চমকে যান সেই প্রবীণ সুরকার। অবাক হয়ে যান এই ভেবে, এতো বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে এতো নির্দিষ্ট করে লতা ধরতে পারছেন কীভাবে।
শেষে লতাকে জিজ্ঞেস করলেন, 'তুমিই বলো কে সে,"
এবার গানের শুরুতেই লতা একজনকে দেখিয়ে দিলেন। সুরকার তখন সেই ব্যক্তিকে একা বাজাতে বললেন। দেখা গেল, লতার কথাই ঠিক ছিল, ভায়োলিন বেসুরো বাজাচ্ছিলেন তিনি।
এরপর তিনি লতাকে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে দেন, সেইসাথে বলেছিলেন লতা হবেন বিশ্বসেরা গায়িকা।
উপরের এই ঘটনা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তোপসের নোটবুক, হোমসনামা বা জেমস বুক জমজমাটের মতো বইয়ের লেখক কৌশিক মজুমদার।