হারিয়ে গিয়েছিল লতার যে গান
নব্বইয়ের দশকে, তখন মাত্র সিনেমার জগতে প্রবেশ করেছেন বিশাল ভরদ্বাজ। সুরকার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পর একটি সিনেমা বানানোর পরিকল্পনাও করেন তিনি। সেই সিনেমায় জায়গা পায় প্রখ্যাত গীতিকার গুলজারের লেখা ও প্রখ্যাত গায়িকা লতা মঙ্গেসকরের গাওয়া গান 'ঠিক নাহি লাগতা'।
কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় আর আলোর মুখ দেখেনি ভরদ্বাজের সেই সিনেমা। ছবির সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যায় লতার সেই গানও।
তবে লতার মৃত্যুর কয়েকমাস আগে সেই গানটি খুঁজে পান ভরদ্বাজ। গত অক্টোবরে খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গানটি মুক্তি দেওয়ার জন্য লতার অনুমতি চান এই প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা।
"(ভরদ্বাজকে) আমি বললাম, 'কেন না? এতো সুন্দর একটি গান। তোমার অবশ্যই একে মুক্তি দেওয়া উচিত," সেসময় এক সাক্ষাৎকারে বলেন লতা।
এই গানের রচয়িতা গুলজার স্বয়ং লতারও প্রিয় গীতিকার। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই গানের প্রতি একটু বাড়তি ভালো লাগা কাজ করেছিল লতার।
গানটি প্রকাশ করার আগে গুলজারের কাছ থেকেও অনুমতি নেন ভরদ্বাজ।
গানের সরস্বতী হিসেবে পরিচিত লতা তার জীবদ্দশায় প্রায় ৩০ হাজারের মতো গান রেকর্ড করেছেন বাংলা, হিন্দিসহ বেশ কিছু ভাষায়।
ঠিক নাহি লাগতার মতো তার অনেক গানই কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি। গতবছর পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "যেটা হয়, কখনও কখনও একটি সিনেমার জন্য অনেক বেশি গান বানানো হয়ে যায়, যা সিনেমার ধারা নষ্ট করে দেয়।
"তাই তারা হয়তো একটি গানকে সরিয়ে ফেলে। বলে এই গান অন্য ছবিতে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু দেখা যায় অন্য ছবিতেও মানাচ্ছে না এই গান। তাই স্টোরেজের মধ্যেই থেকে যায় গানটি। এবং মানুষ ভুলে যায় এর অস্তিত্ব।
"এসব গানের মুক্তি দেওয়াটাও সবসময় সম্ভব হয় না। কখনও কখনও দেখা যায় প্রযোজক অনুমতি দিচ্ছেন না, বা ছবিটিই মুক্তি পাচ্ছে না, বা গীতিকার রাজি হচ্ছেন না। এরকম অনেক বাধা আছে।"
গত রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভারতের মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী। এর আগে, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন লতা। কোভিড শনাক্ত হওয়ার পর গত মাসের ১১ তারিখ থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই উপমহাদেশে জ্ঞানীগুণীরা শোক প্রকাশ করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেয়ে গেছে তার প্রস্থানের শোকবার্তায়।