বৈশাখের নাগরিকীকরণ
কৃষকের ছুটি নেই, কারণ তার তো চাকরি নেই। যেহেতু চাকরি নেই তার কোনো 'উইকেন্ড'ও নেই। সাময়িক ছুটি, অর্জিত ছুটি, চিকিৎসা ছুটি, শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি- তার এসব কিছুই নেই, তার ধরাবাঁধা কোনো বেতনও নেই, কোনো উপরি নেই, বৈশাখের কোনো ভাতা নেই, তার কোনো ব্যাঙ্ক একাউন্ট নেই, ন্যাশন প্লান্ডারিং ও মানি লন্ডারিং এসব সম্পর্কে তার কোনো ধারণাও নেই।
চাকুরিজীবী নারী যে প্রক্রিয়ায় গর্ভবতী হয়, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় কিষাণী কিংবা নারী কৃষক গর্ভবতী হয়, একই যাতনা ভোগ করার কথা থাকলেও তাকে বেশিই ভোগ করতে হয়, তার কোনো মাতৃত্বকালীন ছুটিও নেই।
গ্রামের মানুষ কখনও সরকারি ছুটির পরোয়া করেনি।
পহেলা বৈশাখের ছুটির দাবি ব্যবসায়ীরাও করেনি, হালখাতায় তাদের ব্যস্ততার শেষ নেই। এমন দিনে তারা ছুটি চাইলে ব্যবসা তো লাটে উঠবে।
শহুরে মানুষের ছুটি চাই, কারণ তারা চাকরিজীবী। তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য এমপিরা আছেন।
পহেলা বৈশাখ নববর্ষ উদযাপনের জন্য ছুটির আনুষ্ঠানিক দাবি পেশ করা হয় ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩০, বেঙ্গল লেসিজলেটিভ কাউন্সিলের অধিবেশনে।
সনৎ কুমার রায় চৌধুরী কাউন্সিলে প্রস্তাব করলেন: পহেলা বৈশাখ যথাযথভাবে নববর্ষ উপযাপনের জন্য বাংলা প্রদেশের সব সরকারি অফিস এবং কোর্ট-কাচারি বন্ধ ঘোষণা করার জন্য কাউন্সিল সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করুক। উল্লেখ্য, সে আমলে কাউন্সিল কার্যক্রম পুরোপুরি ইংরেজিতেই চলত। কাউন্সিলের কথোপকথন ভাষান্তর করে উপস্খাপন করছি।
সনৎ কুমার রায় চৌধুরী বললেন, পহেলা বৈশাখকে আমাদের কাউন্সিলের ইউরোপীয় সদস্যদের কাছে অন্য দশটা দিনের মতো কেবল একটা দিন মনে হতে পারে- কিন্তু বাঙ্গালিদের কাছে এটা সাধারণ একটা দিনের চেয়ে অনেক বেশি। দিনটাই একটি প্রতিষ্ঠান-কাজেই একে স্মরণ করা যায়, উদযাপন করা যায়।
বৈশাখ মাসের প্রথম দিন পুরনো বছরের হিসাবের খাতা টেনে দিয়ে নতুন খাতা খোলা হয়-খাতা খোলার উৎসব হয়। সেজন্যই বৈশাখের প্রথম দিন আমাদের ছুটি চাই।
মিস্টার প্রেসিডেন্ট (তখন স্পিকারের কাজটি করতেন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট), বৈশাখের প্রথম দিন আসাম প্রদেশে সাধারণ ছুটি। বাংলায়ও অনেক জেলা ছুটি পালন করে থাকে। কিন্তু তা নির্ভর করে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট জজ সাহেবের ইচ্ছার ওপর।
মিস্টার প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী মিস্টার এ. মার অবশ্য আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, আমি যদি প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নিই, তাহলে সরকার নিজে থেকেই বিষয়টি বিবেচনা করবে।
আমি সঙ্গে সঙ্গেই তাকে একটা জবাব দিতে পারতাম। কিন্তু তার সঙ্গে কথা বলে মনে হল পহেলা বৈশাখ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে- কিন্তু বিনিময়ে অন্য একটি ছুটি সমর্পণ করতে হবে।
তাই যদি হয় তাহলে এ প্রস্তাবে রাজি নন সনৎ রায় চৌধুরী- তিনি চান এই দিনটিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হোক তিনি বললেন, যদি সমর্পণ করতেই হয় তাহলে ১ জুলাই হোক সেই দিন। বাংলার অধিকাংশ মানুষের ব্যাংকের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। সুতরাং ব্যাংক হলিডের দরকারও নেই।
আর একটি বিষয় মিস্টার প্রেসিডেন্ট। বাংলা সাল কিন্তু হিন্দু ধর্মীয় কোন বর্ষ গণনা নয়। কাজেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়া নিয়ে কোন তর্ক-বিতর্ক হওয়ার সুযোগ নেই। এই দিনটিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে হিন্দু-মুসলিম কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। আমার বিশ্বাস আমার প্রস্তাবে হাউস বিভক্ত হবে না। কাজেই প্রস্তাবটি সার্বিক বিবেচনায় গ্রহণ করা হোক।
এবার মন্ত্রী মুখ খুললেন-মিস্টার প্রেসিডেন্ট, এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান আমি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই। প্রস্তাবের মোদ্দা কথা হচ্ছে বৈশাখের প্রথম দিন সব জেলায় ছুটি ঘোষণা করা। ছুটি এখনও স্থানীয়ভাবে পালিত হয়ে থাকে, নববর্ষের ছুটি হিসেবে ঢাকা, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ত্রিপুরা, নেয়াখালী, যশোর এবং ময়মনসিংহ জেলায়। আর কোন জেলা থেকে এই দিনটিকে সাধারণ ছুটি হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবি আসেনি। কিন্তু তারপরও আমি প্রস্তাবককে বলেছি তিনি যদি এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন, আমি বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের সঙ্গে আলাপ করব। হাইকোর্টের সঙ্গে আলাপ জরুরি। তাছাড়াও বাংলার সব জেলা প্রধানদের কাছ থেকে জানতে হবে- পহেলা বৈশাখকে সাধারণ ছুটি হিসেবে পাওয়ার প্রত্যাশা জনগণের রয়েছে কিনা। দাবিটি সার্বজনীন হলে এ দিনটিকে আঞ্চলিক সাধারণ ছুটি বিবেচনা করতে সরকারের কোন আপত্তি থাকবে না। তবে একটি বিষয় আগেই পরিষ্কার করে নেয়া দরকার। বিধান হচ্ছে কোন জেলা সাত দিনের বেশি স্থানীয় ছুটি ভোগ করতে পারবে না। বাংলার সাতটি জেলা এর মধ্যেই সাত দিনের কোটা পূর্ণ করে ফেলেছে। জেলাগুলো হচ্ছে- বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম। প্রস্তাবিত দিনটিকে প্রদেশের সাধারণ ছুটি হিসেবে ঘোষণা দিতে হলে এই সাতটি জেলাকে একদিন করে ছুটি সমর্পন করতে হবে। এই সাতটি বাদে অন্য জেলাগুলো যদি ছুটি চায় তাহলে এখনই ঘোষণা করতে কোন সমস্যা নেই। এ পর্যায়ে আমি প্রস্তাব উত্থাপনকারীকে অনুরোধ করব, তিনি যেন প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেন। তাহলে আমরা হাইকোর্ট ও জেলা অফিসগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সমর্থ হব।
সদস্য পিএন গুহ জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে বাংলার সচিবালয়ের কি হবে? সচিবালয় কি কোন জেলার আওতায় আসে?
মন্ত্রী বললেন, বাংলার সচিবালয়ও এই নীতি অনুসরণ করবে।
সৈয়দ মজিদ বক্স বললেন, আমিও বাঙালি, কেমন উৎসবের মধ্য দিয়ে এ দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে আমি জানি। মন্ত্রী মহোদয়ের কথা শোনার পর আমার মনে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় জেগেছে। আমার মনে হয়েছে প্রস্তাবক দিনটিকে চেয়েছেন সাধারণ ছুটির দিন হিসেবে। আর যদি ঘোষণা করাই হয় সরকার একে বলবে স্থানীয় ছুটি-সাধারণ ছুটি নয়। সাধারণ ছুটি হোক কি স্থানীয় ছুটি হোক, আমার কোনটাতেই আপত্তি নেই। কিন্তু মুসলমানদের ছুটির বিষয় যেন বিবেচনায় রাখা হয়।
মন্ত্রী পয়েন্ট অব অর্ডার উত্থাপন করলেন। বললেন, পহেলা বৈশাখ পাবলিক হলিডে হবে কি হবে না এ সম্পর্কে জনগণ কি চান তা-ই হচ্ছে আমাদের আলোচনার বিষয়। এর মধ্যে মুসলমানদের ছুটির বিষয় এলো কি করে?
সৈয়দ মজিদ বক্স বললেন, আমার কথাটা শেষ করার সুযোগ যদি মন্ত্রী দিতেন।
প্রেসিডেন্ট জিজ্ঞেস করলেন, আপনার পয়েন্ট কি মৌলভী সাহেব?
তিনি জবাব দিলেন, আমার কথা না শুনেই মন্ত্রী সাহেব ব্যাপারটাকে অন্যভাবে নিলেন।
এর মধ্যে মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট কথা বললেন।
সৈয়দ মজিদ বক্স বললেন, পহেলা বৈশাখ পাবলিক হলিডে ঘোষণায় আমার কোন আপত্তি তা নেই-্ই বরং আমি সিদ্ধান্তকে বিশেষভাবে স্বাগত জানাব। আগেই বলেছি যশোরে ছুটি এমনিতেই কম। মুসলমানদের কোন ছুটি বিসর্জন দিয়ে যেন এই নতুন ছুটির ঘোষণা দেয়া না হয় আমি সেই কথাটিই বলতে চেয়েছি। এটিই আমার পয়েন্ট।
প্রেসিডেন্ট বললেন, আমিও আপনার পয়েন্টটি বুঝতে পেরেছি।
সৈয়দ মজিদ বক্স বললেন, তাহলে স্যার, যদি আশ্বাস দেন এমন কিছু ঘটবে না, আমরা সবাই পহেলা বৈশাখের ছুটির জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি।
সদস্য জিতেন্দ্রনাথ ব্যানর্জি বললেন, মন্ত্রী সাহেব জানতে চেয়েছেন ছুটির ব্যাপারে জনগণের সায় রয়েছে কিনা। জি স্যার, এটা সর্বসাধারণের প্রত্যাশা- আমাদের মেজাজ ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের প্রত্যাশা সাধারণ ছুটি হোক। আমরা প্রতিবছর এই দিনে ছুটি চাই, তবে শর্ত একটাই-এই ছুটির কারণে বেতন ও ভাতা যেন কাটা না যায়।
সবশেষে প্রস্তাবক সনৎ কুমার রায় চৌধুরী বললেন, মাননীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে আশ্বস্ত হয়ে আমি আমার প্রস্তাবটিকে আর ভোটে দিচ্ছি না। আমি মন্ত্রীর আশ্বাস সত্য বলে ধরে নিয়েছি-তিনি যথাশিগগির সম্ভব হাইকোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে ফলাফল আমাদের জানাবেন। এরপর সনৎ কুমার রায় চৌধুরীর প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
দুই
এরপর এক বছর সাড়ে পাঁচ মাস কেটে গেল। ১৯৩১-এর তৃতীয় কাউন্সিল সেশনে মুকুন্দ বিহারি মল্লিকের একটি তারকা খচিত প্রশ্ন আলোচনায় এলো। তিনি মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলেন পহেলা বৈশাখ নববর্ষের ছুটি ঘোষণা সংক্রান্ত সনৎ কুমার রায় চৌধুরী একটি প্রস্তাব কাউন্সিলে আলোচনার পর সরকারের আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রত্যাহার করে নেয় হয়েছে- এ সম্পর্কে তিনি কি অবহিত? বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট ও জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার কথা ছিল? সরকার কি কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে? যদি হয়ে থাকে তাহলে সিদ্ধান্তটি কি?
বলাই বাহুল্য-মাননীয় মন্ত্রী সেই একই ব্যক্তি মিস্টার এ. মার। প্রথম দুটো প্রশ্নের উত্তরে সংক্ষেপে বললেন, হ্যাঁ। দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বললেন, এখনও সিদ্ধান্তে উপনীত হন নি।।
সুতরাং শেষ প্রশ্নের জবাবে বললেন, অতএব প্রশ্নটি অবান্তর।
সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। মুকুন্দ বিহারি মল্লিক জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ফলাফল জানতে চাইলে মন্ত্রী বললেন, তারা জানিয়েছেন ছুটির বিশেষ কোন দাবি নেই, তবে ছুটি ঘোষিত হলে আপত্তিও নেই।
তাহলে সরকার করে নাগাদ সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন বলে মন্ত্রী মনে করেন?
মন্ত্রী এই প্রশ্ন এড়িয়ে জবাব দিলেন-সাধারণ ছুটি সংক্রান্ত অন্য একটি প্রশ্নের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার বৈশাখী বিষয়টি ধরা হবে। তারপর কেটে গেল অনেকদিন। সাধারণ ছুটির ঘোষণা আর এলো না।
নোট : ১. সে সময় বাংলার গভর্নর স্যার ফ্রান্সিস স্ট্যানলে জ্যাকসন। চারজন মন্ত্রী (গভর্নরের নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য) নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী মিস্টার এ এন মোবারলে, মিস্টার এ. মার এবং স্যার প্রভাস চন্দ্র মিত্র। প্রেসিডেন্ট (কিংবা স্পিকার) ছিলেন সন্তোষের মহারাজা মন্মথ নাথ রায় চৌধুরী।
নোট: ২. পহেলা বৈশাখ নববর্ষে ছুটি হোক এ দাবি ছিল মূলত পূর্ববঙ্গের। বাংলার যেসব জেলা প্রস্তাবনার আগে থেকেই এ দিনটিতে ছুটি ভোগ করছিল তা হচ্ছে ঢাকা, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, ত্রিপুরা ও নেয়াখালী।
নোট : ৩. পহেলা বৈশাথ এখন সাধারণ ছুটি। নববর্ষ এখন উৎসব। নববর্ষ নিয়ে বাংলা মায়ের দোহাই যতোই দিই না কেনো নববর্ষেও উৎসবটি এখনও শহরের এবং উপশহরের, যারা ছুটি পান বৈশাখী ভাতা পান তাদের। উৎসবটির সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে, বিশেষ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে মনে করা হয়। ১৯১৭ সালের বৈশাখের প্রথম দিন প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে হোমকীর্তন ও অর্চনার আয়োজন করা হয়েছিল। একই আয়োজন ১৯৩৮ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়ও করা হয়।
১৯৬৫ থেকে ঢাকা নগরভিত্তিক এই সাংস্কৃতিক যাত্রার সূচনা, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে নগর কেন্দ্র থেকে সকল উৎপাদন কেন্দ্রে (গ্রৌথ সেন্টার) ছড়িয়ে পড়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ আশংকা সব ধরনের উৎসবের রাশ টেনেছে, চীনারা নববর্ষের প্রাপ্য ছুটিরও বেশি ছুটি পেয়েছে এই শর্তে যে তারা ঘর থেকে বেরোবে না।
রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুলের পঙ্ক্তি টেনে নয়, এই সঙ্কটে এই বিপন্ন বৈশাখে বরং জীবনানন্দের ক্ষেতে প্রান্তরে থেকে উদ্ধৃতি দিই:
অনেক রক্তের ধ্বকে অন্ধ হয়ে তারপর জীব
এইখানে তবুও পায়নি কোনো ত্রাণ;
বৈশাখের মাঠের ফাটলে
এখানে পৃথিবী অসমান।
আর কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
কেবল খড়ের স্তূপ প'ড়ে আছে দুই-তিন মাইল,
তবু তা সোনার মতো নয়;
কেবল কাস্তের শব্দ পৃথিবীর কামানকে ভুলে
করুণ, নিরীহ, নিরাশ্রয়।
আর কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।