ফাঁসি নিয়ে বিতর্ক ও মানবাধিকার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন ২০০৬ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল অধ্যাপক তাহেরের মৃতদেহ। দীর্ঘ সতেরো বছর পর তার হত্যার বিচারের সর্বশেষ ধাপ হিসেবে, যখন দুই খুনিকে ফাঁসি দেয়া হলো, তখন অনেকেই ফাঁসির বিরুদ্ধে তাদের মতামত দিয়েছেন, বিশেষ করে শিক্ষিত, সুশীল সমাজ ও সচেতন জনগোষ্ঠী। তারা মনে করেন, ফাঁসি মানবাধিকারের পরিপন্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'জন শিক্ষক মিলে আরেকজন সিনিয়র শিক্ষককে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছে, যারা সেই খুনিদের জন্য মায়া দেখাচ্ছেন, তাদেরকে অনুরোধ করছি, দয়া করে তারা যেন একবার নিজের পরিবারের কোন সদস্যের হত্যার শিকার হওয়ার কথা ভাবেন। ব্যক্তিগতভাবে অনেকের সাথে এই ইস্যুতে আমার মতবিরোধ আছে। আমি তাদের অনুরোধ করেছি নিজেকে একবার অধ্যাপক তাহেরের কন্যার স্থানে ভাবার জন্য।
ড. এস তাহেরের কন্যা, শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পিতৃহত্যার বিচার নিশ্চিতে লক্ষ্য পরিবর্তন করে আইন বিভাগে ভর্তি হন। পড়াশুনা চলাকালীন ৭ বছর এবং পরবর্তী আরও ৯ বছর, মোট ১৬ বছর লড়াই করে পিতার খুনিদের বিচার নিশ্চিত করেছেন তিনি। কেন তাবাসসুম আহমেদ এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমণ করলেন, কেন ১৬টি বছর ধরে নানাধরণের যুক্তি তর্ক ও আইনী প্রক্রিয়া চর্চা করেছেন? কারণ তার এই লড়াইটি ছিল পিতৃহত্যার বিচার, লড়াইটি ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠার।
প্রিয়জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে সেই পরিবারে নরকের যন্ত্রণা নেমে আসে। ছোট ত্বকীর মা-বাবা এখনও অপেক্ষায় আছেন, একদিন বিচার পাবেন। মনে করেন আপনার বা আমার পরিবারের কন্যাশিশুকে কেউ ধর্ষণ করার পর হত্যা করলো। হত্যা না করলেও ধর্ষণ করলো, সেই অপরাধীর বিচার কী হলে আপনি বা আমি শান্তি পাবো? আমি চাইবো আমার সন্তানকে হত্যাকারী অপরাধীর যেন ফাঁসি হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাইবো না পৃথিবীর আলো-বাতাসে সেই অপরাধী বেঁচে থাকুক।
আমরা জানি টাকার জোরে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অনেকেই মামলা থেকে, যাবজ্জীবন হাজতবাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। আবার অনেকেই হত্যাকাণ্ডের আসামী হওয়া সত্ত্বেও কারাগারের ভেতরেই সাহেবী জীবনযাপন করতে পারেন। এরকম বহু নজির আছে।
যেমন রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১৫ সালে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম ফকিরের ফাঁসির সাজা মওকুফ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৭ সালে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে ফিরে আসেন বিপুল বিক্রমে। এবার মুক্ত হওয়ার তিন বছর পর আবারও আরেকটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি হয়েছেন আসলাম ফকির। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী জাফরউল্যাহর সহযোগিতায় আসলাম ফকির শুধু ফাঁসির সাজা থাকে রক্ষা পাননি, মুক্তি পেয়েছেন কারাগার থেকেও। (সূত্র: রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ফাঁসি থেকে মুক্ত আসলাম ফকির আবার খুনে জড়ালেন, প্রথম আলো, ২০২০)
এভাবেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ফাঁসির সাজা মওকুফ করা হয়। যারা নির্যাতিত ও ভুক্তভোগী তারা প্রতিবাদ করলেও অপরাধীই জয়ী হয়। যখন প্রমাণিত হয় অপরাধীর অনেক ক্ষমতা, শক্তিশালী মানুষ তার সঙ্গে আছেন, তখন ওই সাহসই তাকে আরেকটি খুন করতে উৎসাহিত করে। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেছিলেন, একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রযোজ্য নয়। আইন তা বলে না। প্রভাব খাটিয়ে এ ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার করা লজ্জাজনক। দোষী যেন এবার শাস্তি পান, তা নিশ্চিত করে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনা উচিত।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত মহাজোট সরকার আমলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়েছেন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ২৬ জন, এর মধ্যে বহুল আলোচিত নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এ এইচ এম বিপ্লবও রয়েছেন। ২০০৯ থেকে এই পর্যন্ত মোট ২৯ জনের সাজা মওকুফ হয়েছে, এর মধ্যে লক্ষীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ নিয়ে আওয়ামী লীগকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরা টুকরা করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছিল। ওই মামলায় বিপ্লবকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল বিচারিক আদালত। (সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৪)
আদালতে দণ্ডিত কাউকে ক্ষমা করার অধিকার সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামল মিলিয়ে তার আগের আট বছরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পান চারজন, যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত মহিউদ্দিন ঝিন্টুর নাম ব্যাপকভাবে আলোচিত। চারদলীয় জোট সরকার আমলে ক্ষমা পাওয়া ঝিন্টু ছিলেন সুইডেন বিএনপির নেতা।
সূত্রাপুরের দুই ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে এরশাদ আমলে সামরিক আদালতে তিনিসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। এর মধ্যে আবুল হাসনাত কামাল নামে একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ঝিন্টু ২০০৫ সালে দেশে ফেরার পর রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পান।
মহাজোট সরকার আমলে নাটোরের সাব্বির আহমদ গামা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ২০ জনকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করে দেয়াও বেশ আলোচিত হয়েছিল। চারদলীয় জোট সরকার আমলে ২০০৪ সালে নাটোর নলডাঙ্গা রামশার কাজিপুর বাজারে খুন হন ওই সময়ের উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ভাতিজা গামা। এরপর বিচারিক আদালত যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়, তারা সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী। আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ ছিল, তার দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ওই রায় ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আবার এমনও দেখা গেছে বিচারিক আদালতে ফাঁসির আদেশ পাওয়ার পর হাইকোর্ট অপরাধীদের শাস্তি কমিয়ে দিয়েছেন। নোয়াখালীতে ২০০৭ সালে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী ও তার কর্মচারীকে হত্যার দায়ে বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির ৮ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাক্ষ্যপ্রমাণের যথাযথ বিচার-বিশ্লেষণ না করে 'খেয়ালের বশে' গণহারে ফাঁসির রায় দেওয়ায় উচ্চ আদালত উষ্মাও প্রকাশ করেছেন। (সূত্র: যুগান্তর, ২০২২)
এবার যুদ্ধাপরাধী এবং বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের খুনিদের প্রসঙ্গে কিছু কথা বলছি। যখন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসি দেয়া হয়, তখনো দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ের অনেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। অথচ তারা একবারও কি ভেবেছেন সেই শহীদ পরিবারগুলোর কথা, যাদের বাবা বা ভাই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। পরিবারের মানুষটি নিহত হয়েছিলেন বলে সেই পরিবারটি পরবর্তীতে কতটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে। কতটা দুঃখকষ্ট সহ্য করে সেই পরিবারের সন্তানদের বড় হতে হয়েছে।
বড় হওয়ার পর যখন তারা দেখেছেন তাদের বাবা-ভাইয়ের হত্যাকারী দোসররা, অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমহানির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও শিশু হত্যার খলনায়করা উচ্চপদে আসীন হয়ে পতাকা শোভিত গাড়িতে চড়ে রাজ্য শাসন করছেন, বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দিচ্ছেন, তখন সেই শহীদ পরিবারের মনোভাব কী হয়েছিল, একবার ভেবে বলুন তো! ঠিক এই অবস্থায় আমার-আপনার প্রতিক্রিয়াও হয়তো হতো পিতৃহত্যার প্রতিশোধ।
যারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নির্বংশ করার লক্ষ্যে হত্যা করেছে এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করে রেখেছিল, আমরা কি সেই দুরাচারদের ফাঁসি হওয়াতে মুষড়ে পড়বো, নাকি পড়া উচিৎ? 'মানবাধিকারের দোহাই' দিয়ে এখনো বিশ্বের আধুনিক রাষ্ট্রগুলো এইসব আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয় দিয়েই যাচ্ছে।
আমি শুধু ভাবি যে আমার মা-বাবা, ভাই-ভাইয়ের বউ, অসংখ্য আত্মীয়-স্বজনকে কোন গোষ্ঠী যদি নির্বিচারে হত্যা করতো, তাহলেও কি আমি সেই অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ চাইতাম না? আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতাদের যারা হত্যা করেছে, দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের যারা হত্যা করেছে, তাদের কতটা অধিকার আছে এই বাংলার মাটিতে শ্বাস নেয়ার?
ভয়াবহ এই অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলে হয়তো একদিন ঠিকই এরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে গরাদের বাইরে বের হয়ে এসে আবার শাসন শুরু করতো। ঠিক একইভাবে এরশাদ শিকদার, বাংলা ভাইসহ অন্যান্য জঙ্গিদের মৃত্যুদন্ডাদেশ কায়েম না করলে, আবার হয়তো তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করতো। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ৩০ বছরের জেল। এই ৩০ বছরের হিসাব যখন-তখন কোন ফাঁকে হ্রাস হয়ে যায়, তাতো আমরা জানি না।
কেন এখনো আমার মতো অনেকেই বাংলাদেশে ফাঁসির পক্ষে, এই নিরিখে আমি ধর্ষণ, গণধর্ষণ এই বিষয়ে আলোচনা করতে চাই। বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভের পর রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ জারি করেছেন। বাংলাদেশের আইনে কিছু অপরাধ আছে যেগুলোর কোন আপোস-মীমাংসার সুযোগ নেই। ধর্ষণের ঘটনা তেমনি একটা-যেখানে কোন আপোসের সুযোগ নেই। বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণের পরে হত্যা ঘটনায় কোন আপোস-মীমাংসার প্রশ্নই আসে না। ২০১৪ সালে প্রকাশিত 'Landmark judgements on violence against women of Bangladesh, India and Pakistan' শীর্ষক বইটিতে বিচারপতি গোলাম রাব্বানী মন্তব্য করেছিলেন যে, ধর্ষণ এমন একটি অপরাধ যা শুধু ভিকটিমকে নয়, পুরো সমাজকে আঘাত করে।
কাজেই সেইরকম একটি অপরাধ করে ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে বিয়ে করার মাধ্যমে অপরাধী যদি ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশের হাত থেকে পার পেয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে শুধু অপরাধ বা শাস্তির হাত থেকে বাঁচার জন্যই অপরাধী বিয়েকে 'অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে সমাজে একটা ভুল বার্তা যায়। কারণ যারা ধর্ষক, তারা মনে করে আমি ধর্ষণ করলাম এবং যাকে ধর্ষণ করলাম, তাকে বিয়ে করার মাধ্যমে মুক্তি পেয়ে গেলাম।
কোন কন্যাশিশু, ছেলেশিশু বা কোন নারী যদি ধর্ষণের শিকার হন, সেক্ষেত্রে তার জীবনে যে ভয়াবহ পরিণতি নেমে আসে, তা অকল্পনীয়। যখন একজন ধর্ষক বিচারে দণ্ডিত হওয়ার পরেও কোন ক্ষমতাবলে ছাড়া পেয়ে যায়, অথবা জেলখানা থেকেই ভিকটিমকে ও ভিকটিমের পরিবারকে চাপ প্রযোগ করতে থাকে, তখন মনে হয় এই অপরাধীকে ফাঁসিতেই ঝুলানো উচিৎ। কারণ খুনের আসামি ও ধর্ষক বেঁচে থাকা মানে সমাজকে কলুষিত হতে দেয়া। এইসব পিশাচদের জন্য মানবাধিকারের কথা বলার কোন মানে হয়না। মানুষের জন্য মানবাধিকার, কোন খুনি বা ধর্ষকের জন্য নয়।
লেখাটি শেষ করছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফাঁসি দেয়ার রেকর্ডধারী জল্লাদ শাহজাহানের একটি উক্তি দিয়ে। তিনি দেশের বিভিন্ন কারাগারে জল্লাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশের আলোচিত ২৬ জন আসামীকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করেছেন। এরমধ্যে আছেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামী বজলুল হুদা, মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, আবদুল মাজেদ। আছেন যুদ্ধাপরাধের মামলায় ছয় বিরোধীদলীয় নেতা- আব্দুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী।
আলোচিত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানের মৃত্যুদণ্ড তিনিই কার্যকর করেছেন। শাহজাহান ভুঁইয়া মোট ৪২ বছরের সাজা পেয়েছিলেন। সে হিসেবে তিনি দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন ৩১ বছর ০৬ মাস ০২ দিনের মতো।
মুক্তি পাওয়ার পর, ফাঁসি কার্যকরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, "প্রতিটা ফাঁসিতে একটা আবেগ থাকে। কারণ মানুষ যতোই অপরাধ করুক না কেন যখন মৃত্যুর মুখে পতিত হয়, তখন সবার একটু না একটু মায়া লাগে। কিন্তু সেই মায়া আমার লাগলেও আদালত তো মায়া করবে না।"
- লেখক: যোগাযোগকর্মী
বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফল। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।