তুরাগ নদে মাখোঁর সাথে ৩০ মিনিটে ৩ জলবায়ু দফা
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁর সাথে আমার দেখা হবে এটা প্রথম জানতে পারি শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে। ফ্রেন্ডশিপ বোট নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নিজেকে আবিষ্কার করলাম। যে গ্রæপে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জানালেন, সোমবার দুপুরে আমিও প্রেসিডেন্টের সহযাত্রী হিসেবে নৌ-বিহারে সাওয়ার হচ্ছি। নিরাপত্তাজনিত কারণে খবরটি গোপন রাখতে হলেও ভেতরে ভেতরে দারুণ উদ্দীপনা কাজ করছিল।
তারপর এলো সেই আকাঙ্খিত দিন। ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম, প্রেসিডেন্টের ভিআইপি প্রোটকল আর আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ভোর সকালেই বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য মিরপুর বড় বাজার ইকো-পার্ক। ১২ টায় উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সকাল ১০টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম।
সেখানে মানিকগঞ্জ থেকে আসা বাইচের নৌকা ভিড়েছে খেয়া ঘাটে। স্থানীয় মানুষের মধ্যে তুমুল আগ্রহ প্রেসিডেন্টের সফর ঘিরে। মানুষজন বলাবলি করছে।ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে গতকাল প্রধানমন্ত্রী অর্ভ্যথনা জানিয়েছেন তা তারা পত্রিকায় পড়েছে। সুর্দশন, লম্বাটে আর বয়সে তরুণ প্রেসিডেন্ট! আর আমি মনে মনে ভাবছি আর কিছুক্ষণ পরেই তার সাথে আমার দেখা হতে যাচ্ছে। পাশের বাজারের দোকানে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছি। আমাদের ফ্রেন্ডশিপ বোট গ্রুপে আবহাওয়া নিয়ে আপডেট বিনিময় করতে করতে নামল ঝুম বৃষ্টি।
আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর জলবায়ু বিজ্ঞানী অধ্যাপক সালিমুল হক স্যার গ্রুপে আপডেট করলেন যে, উনি (মাখোঁ) ইকো-পার্কের ঘাটে পৌঁছে গেছেন। এই তথ্য পেয়ে আমি দুরুদুরু পায়ে ইকো-পর্কের ভেতরে প্রবেশ করলাম। এরপর আটকে দিল নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন। সিকিউরিটি পাস না থাকায় কিছুটা বিপত্তির মুখে পড়ে যাই। আয়োজক ফ্রেন্ডশিপের নির্বাহী পরিচালক রুনা আপা আমাকে দেশীয় নিরাপত্তা বৈতরণী পার করান। এরপর ফ্রেঞ্চ নিরাপত্তা কর্মীদের প্রশ্নবান থেকেও উদ্ধার করে রুনা আপা আমাকে আর সালিমুল হক স্যারকে নৌকার অন্দরে নিয়ে যান।
আমাদের বসার জায়গা ঠিক করে দিল ফ্রেঞ্চ নিরাপত্তা কর্মীরা। আমি ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্টের ডান দিকে বসার জায়গা পেলাম। আমি আর সালিমুল হক স্যার তখন প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু দূত সাবের হোসেন চৌধুরীর জন্য অপেক্ষা করছি। বেলা ১২টার কিছু আগে তিনি আমাদের নৌকায় প্রবেশ করলেন। তারপর সাবের চৌধুরী, সালিমুল হক স্যার, রুনা খান আপা আর আমি মিলে আমাদের নিজ নিজ অবস্থান ঠিক করে নিলাম।
সাড়ে বারোটার কিছু পরে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্টের গাড়িবহর ইকো পার্কে এসে থামল। নিরাপত্তা বেষ্টনির বাইরে তখন স্থানীয় উৎসুক জনতার ভিড়। প্রেসিডেন্ট পানশীর মাঝির সহায়তা নিয়ে নৌকায় উঠলেন। এসময় মাঝির সাথেও হাত মেলাতে ভোলেন নি তিনি। প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু দূত সাবের হোসেন চৌধুরী ফেঞ্চ প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানালেন। ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্টের হাতেগোণা কয়েকজন উচ্চপদস্থ সফরসঙ্গীর সাথে নৌকায় প্রবেশ করেন তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ ও বাংলাদেশে ফ্রেঞ্চ রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপেই।
আমার জলবায়ু এক্টিভিজমের প্রশংসা করে দেশসেরা তরুণ জলবায়ু কর্মী আখ্যা দিয়ে তার প্রেসিডেন্টের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন রাষ্ট্রদূত ম্যারি। এরপর আমি ও প্রেসিডেন্ট করমর্দন করলাম। এরপর পানসি নৌকাটির উদ্বোধন করেন ও ঘুরে দেখেন প্রেসিডেন্ট। তুরাগ নদীতে যাত্রা করে 'ফ্লেচেডি অর'' নামের বৃহত্তম এ পানসি নৌকাটি। আমাদেরও সুযোগ হল জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা শুরু করার।
২০১৫ সালের গৃহীত প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বলা পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক শিল্প বিপ্লবের সময়ের ১.৫ ডিগ্রিতে ধরে রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু দূত সাবের হোসেন চৌধুরী। ১.৫ ডিগ্রি আমাদের লক্ষ্য নয়, সীমারেখা। অধ্যাপক সালিমুল হক স্যার অভিযোজন ও জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কথা বলেন। খুবই ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিকভাবে আলোচনা চলছে। মাঝে মাঝে তুরাগ নদীতে বাইচের নৌকা আসা যাওয়া করছে। জেলেরা জাল টেনে মাছ ধরছেন। তাদের হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানালেন প্রেসিডেন্ট মাখোঁ।
রুনা আপা হয়ে আলোচনার সুযোগ এল আমার কাছে। আগেই জানতাম ৩ মিনিটে আমার কথা শেষ করতে হবে। আমি জলবায়ু নিয়ে আমাদের তরুণদের উদ্বিগ্নতা নিয়ে বলা শুরু করলাম। জলবায়ু সংকট যেভাবে ঘণীভূত হচ্ছে এতে বৃহদাকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। আমি তাকে বললাম, আপনি যে ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা ডেঙ্গু প্রার্দুভাবে মৃত্যু উপত্যকা। জলবায়ু পরির্বতন এই পতঙ্গবাহী রোগটিকে মহামারির পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমি তখন প্রেসিডেন্টকে বললাম, তেল, গ্যাস, কয়লার মত বিপদকজনক জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসতে হবে। বরং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসার এবং এতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আর শুধু মাইলকে মাইল সোলার পার্ক করলেই হবে না, জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়া ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক হতে হবে যাতে কেউ পেছনে পড়ে না থাকে, মানবাধিবার যেন লঙ্ঘিত না হয়। কেউ, বিশেষ করে তরুণরা যেন কাজ না হারায়। মাটির কাপে ব্ল্যাক কফিতে চুমুক দিতে দিতে তিনি আমার কথায় মাথা নাড়লেন।
এই সুযোগে আমি তরুণদের জলবায়ু কার্যক্রম নিয়ে বলতে শুরু করলাম। আমরা শুধু জলবায়ু পরির্বতনের প্রভাব নিয়েই চিন্তা করে সময় পার করছি না। আমরা তৃণমূল পর্যায়ের তরুণদের সাথে কাজ করি। তাদের নেতৃত্ব বিকাশ ও ক্ষমতায়নে কাজ করি। তারাই যেন তাদের এলাকার জলবায়ু পরিবর্তন সমাধানে ভূমিকা নিতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করি। আমরা গতানুগতিক এক্টিভিস্টেদের মত নই। শুধু আন্দোলন সংগ্রাম করেই আমাদেও কাজ শেষ কওে দেই না। আমারা বিপদাপন্ন এলাকার মানুষের পাশে থাকি। তাদের বিপদের সময় হাত বাড়িয়ে দেই।
আমার কথা শুনে প্রেসিডেন্টের আগ্রহ আরো বাড়ল। উনি আমাদের কাজগুলো সর্ম্পকে আরো জানতে চাইলেন। আমি তখন আমাদের জলবায়ু শিক্ষা, অ্যাডভোকেসি ও প্রচারাভিযান সম্পর্কে বললাম। তাকে এও বললাম, আপনারা বিশ্বনেতারা বৈশ্বিক পর্যায়ে যে প্রভাব ফেলতে চান বা অর্জন করতে চান, তা শুরু করতে হয় স্থানীয় পর্যায় থেকে। স্থানীয় উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে বৈশ্বিকভাবে প্রভাব ফেলাই আমাদেও কাজ। আমি তখন আমাদের কাজ নিয়ে বিপদাপন্ন এলাকার মানুষ বিশেষ করে কুড়িগ্রামের চরইয়ুথনেটের কথা তুলে ধরলাম। উনি প্রশ্ন করলেন, এই কাজগুলো অ্যাডপটেশনের (অভিযোজনের) জন্য?'' আমি বললাম হ্যাঁ, অভিযোজনের জন্যই, তবে স্থানীয় নেতৃত্বে অভিযোজন। আমরা জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি (লস এন্ড ড্যামেজ) মোকাবিলায়ও কাজ করি। ওনাকে আরো বললাম, আমরা আলাদা হয়ে কাজ করিনা, একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করি। যেমন বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের পেছনে আমরা আছি, তেমনি সংসদ সদস্য ও নীতি-নির্ধারকদের সাথে নিয়েও কাজ করি। আমাদের কাজের সাথে উন্নয়ন সংস্থা ও দূতাবাসগুলোও সম্পৃক্ত থাকে।
প্রেসিডেন্ট একনাগারে আমার কথা শুনলেন। শুধু অভিযোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তরুণদের নেতৃত্বে পরিচালিত জলবায়ু কার্যক্রমের প্রশংসাও করলেন। আমন্ত্রিত আমরা যারা অতিথি ছিলাম তারা চার জনই জুন মাসের ২১ ও ২২ তারিখে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ আয়োজিত নিউ গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল প্যাক্ট সামিটে প্যরিসে গিয়েছিলাম। জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে সেই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা আমরা বিনিময় করলাম। এরপর প্রেসিডেন্ট জলবায়ু নিয়ে তার অগ্রাধিকারের কথা বললেন।
মাখোঁ প্রথমেই আমাদের বললেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ও প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে জীবাশ্ম জ্বালানি, বিশেষ করে কয়লা ও তেল থেকে সরে জীবাশ্ম জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে। এই রুপান্তর প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে 'জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন পার্টনারশিপ'- এর আওতায় তিনি বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চান। তিনি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে একের পর এক কথোপকথন করেছেন; যেখানে জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন পার্টনারশিপে কাজ করার জন্য ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর পাশাপাশি ফ্রান্স ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সাথে এই ধরনের উদ্যোগে সম্পৃক্ত হয়েছে। যেখানে ফ্রান্স এই দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে নবায়নযোগ্য সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে কয়েক মিলিয়ন ইউরো প্রদান করেছে।
ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের পাশাপাশি প্রকৃতি ও বাস্তুসংস্থান মাখোঁর অন্যতম অগ্রাধিকার। বাংলাদেশের সুন্দরবন, যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ, ও এর স্থলজ ও জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা প্রদানের জন্য একটি সংরক্ষণ চুক্তি (কনজারভেশন প্যাক্ট) চালু করতে যাচ্ছেন বলে প্রেসিডেন্ট জানান। দারিদ্র্য মোকাবিলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে (এডাপটেশন) নিতে ফ্রান্স বাংলাদেশকে তার কৌশলে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
তৃতীয়ত, তিনি অনুভব করেছিলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন পরিকল্পনা এবং বাস্তাবায়ন প্রতিটি দেশের জাতীয় পর্যায়ে করা উচিত, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নয়। অবশ্যই প্রতিটি দেশের দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে বিপদাপন্ন মানুষকে সহায়তা করতে হবে। অভিযোজন বাইরে থেকে চাপিয়ে দিলে হবে না। যখন আমরা তাকে বাংলাদেশে অভিযোজন এবং বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজনে নেতৃত্ব দেয়ার কথা বলেছিলাম, তখন তিনি মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন আমাদের বাস্তব গল্প।
সরকারকে সম্পৃক্ত করে সত্যিকারের 'বটম-আপ অ্যাডাপ্টেশন প্রোগ্রাম'কে সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশের সাথে একটি 'অভিযোজন চুক্তি বা অ্যাডাপ্টেশন প্যাক্ট' করার প্রস্তাব করেছেন তিনি। যে চুক্তিতে বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরো সক্ষম করার জন্য নাগরিক সমাজ, নারী ও বিশেষ করে তরুণ সমাজকে সম্পৃক্ত করা হবে। তিনি চুক্তিটি সমর্থনের জন্য প্রতি বছর ফ্রান্সের উন্নয়ন সংস্থা এএফডি'র মাধ্যমে বাংলাদেশ যে তহবিল গ্রহণ করে তা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দেন এবং অন্যান্য উন্নত দেশগুলোকেও জলবায়ু তহবিল সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।
আসন্ন ডিসেম্বরে দুবাইতে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ২৮-এর মাধ্যমে একটি অভিযোজন চুক্তিতে প্রবেশের প্রস্তাব নিয়ে রাষ্ট্রপতি মাখোঁর কাছে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এই ধরনের একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল হয়ে উঠতে পারে যাতে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবগুলো মোকাবিলায় সহায়তার জন্য একটি উন্নত দেশের সাথে নিজেদের প্রস্তুত করতে এবং সম্পৃক্ত হতে পারে।
ততক্ষণে সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কর্ণাতলী নদীতে প্রবেশ করে আমাদের পানসি নৌকা। কথার ফাঁকে ফাঁকে প্রেসিডেন্ট উপভোগ করেন নদীমাতৃক বাংলাদেশের রূপ বৈচিত্র্যকে। তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বাংলাদেশের সোলার হোমস সিস্টেমের অর্জন তুলে ধরে দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ফ্রান্সকে বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। চলতে চলতে আমাদের নৌকা আবার ঘাটের দিকে ফিরছে।
শেষ মুহুর্তে আমি প্রেসিডেন্টকে বললাম আমার একটা কথা আছে। তিনি আমার কথা শুনতে মনোযোগী হলেন। আমি বললাম, বাংলাদেশের এখন একটা বড় সংখ্যক জনসংখ্যা তরুণ। জনসংখ্যার সুফল বা পপুলেশন ডিভিডেন্ট পেতে হলে আমাদেও তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন জরুরী। বিশেষ করে জলবায়ু বিজ্ঞান ও সবুজ কর্মদক্ষতা উন্নয়নে আরো বেশি বিনিয়োগ দরকার। সরকারের মুজিব সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ও জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব থাকলেও আর্থিক যোগান প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর আমরা তরুণরা নীতি-নির্ধারক প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠতে চাই। তরুণবান্ধব একটি পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স অংশীদারিত্বেও মাধ্যমে কাজ করতে পারে। 'আপনি কি মনে করেন প্রেসিডেন্ট?'- প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম। উনি উত্তর করলেন, 'তুমি যেটা বলেছ তার সাথে আমিও একমত।'
- লেখক: ক্লাইমেট অ্যাক্টিভিস্ট