মোহাম্মদ শোয়েব: একজন রঙিন ছবির কারিগরের প্রস্থান
সিনেমার বিলবোর্ড আঁকিয়ে শিল্পী মোহাম্মদ শোয়েব ভাই মারা গেছেন গত ১৭ মার্চ ২০২৪। খবরটা প্রথম পেলাম আরেক শিল্পী বড় ভাই শাওন আকন্দের কাছে। তিনি শোয়েব ভাইয়ের মৃত্যুর আগপর্যন্ত নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁর সাথে। বিভিন্ন সময়ে কিছু ওয়ার্কশপ, এক্সিবিশনে শোয়েব ভাইকে দেখেছি, যেগুলোর পেছনে শাওন আকন্দই মূল উদ্যোক্তা ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর একটা পোস্ট চোখে পড়েছিল স্টার সিনেপ্লেক্সের ফেসবুক পেজে। এছাড়া তেমন কোনোকিছু চোখে পড়েনি। তিনি জীবনের শেষ প্রান্তে ঢাকাই সুশীল সমাজের নিকটবর্তী হতে পেরেছিলেন। এরজন্য রিকশা পেইন্টিংয়ের জনপ্রিয়তা ও বাজারকাটতি একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। যদিও রিকশা পেইন্টারদের সাথে তাঁর কাজের দূরত্ব অনেক। বলা যায়, ফর্মটাই আলাদা।
শোয়েব ভাইয়ের সাথে আরেকজন আছেন, পাপ্পু ভাই। উনিও সিনেমার বিলবোর্ড আর্টিস্টদের মধ্যে প্রবীণ একজন। তাঁকেও শোয়েব ভাইয়ের সাথে একসাথে কাজ করতে দেখেছি বিভিন্ন সময়ে। সাম্প্রতিক সময়ে তারা দুজন একসাথে বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন, ফেসবুক মারফত তা জানতে পারলাম।
পাপ্পু ভাই আর শোয়েব ভাই দুজনই অবাঙালি। এদের দুজনের সাথেই আমার দীর্ঘদিনের সখ্য। শোয়েব ভাইকে আমি অনেক আগে থেকে চিনি। বলা যায়, আমার স্কুলে পড়ার সময় থেকে। সম্ভবত সিক্স-সেভেনে পড়ার সময় থেকে। আমাদের পাড়ায় তখন 'মুন আর্ট' নামে একটি ফিল্মের বিলবোর্ড পাবলিসিটির কারখানা ছিল। সেখানে বিশাল বিশাল বিলবোর্ড হাতে আঁকা হতো। সেই কারখানায় তাঁর সাথে আমার পরিচয়। তিনি অবাঙালি ছিলেন, কিন্তু চমৎকার বাংলা বলতেন। তাঁর ওস্তাদ ছিলেন গিরিন দাস। গিরিন দাস নারিন্দা ঋষিপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। গিরিন দাসের সাগরেদদের মধ্যে আরও দুজন ছিলেন, যাদের সাথে আমি কমবেশি পরিচিত—একজন বিদেশ কুমার ধর, অপরজন শ্রী হরিদাস। হরিদাস সম্প্রতি মারা গেছেন, তবে বিদেশ ধর বেঁচে আছেন বলেই জানি।
পরিচয়ের শুরু থেকেই শোয়েব ভাই আমাকে পুত্রসম স্নেহ করতেন। আমার কলেজে পড়াকালীন(১৯৯৮) সময়ে পর্যন্ত তাঁর সাথে আমার দিবারাত্রির সম্পর্ক ছিল। তার বাসায় যাওয়া, সুফিজম, আধ্যাত্মবাদ, শিল্প-সাহিত্যবিষয়ক আড্ডা হতো। এসব নৈমিত্তিক বিষয় ছিল আমাদের। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। তবে তিনি সব বিষয়েই কৌতূহলি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে সেই সময়েই মারা যান। সাংসারিক জীবনে এক পুত্র আর তিন কন্যা ছিল তাঁর। পরবর্তীকালে মেজ মেয়েটাও মারা যায় কী এক অসুখে। শোয়েব ভাইকে দেখেছি একা একাই তাঁর এই চার সন্তানকে নিয়ে বেশ কঠিন নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করতে। তিনি ভীষণ স্পষ্টভাষী এবং অল্প কথার মানুষ ছিলেন। আকৃতিতে বেশ খাটো আর মুখভর্তি ছিল বসন্তের দাগ। তাঁর সেন্স অব হিউমার ছিল অনবদ্য।
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমার পাড়ার গলিতে ফিল্ম বিলবোর্ডের নায়ক-নায়িকাদের বিশাল বিশাল ফিগার আর রঙিন জগত দেখে আচ্ছন্ন ছিলাম। এত বড় বড় রঙিন আকৃতি সেই কিশোর বয়সে ঘোর তৈরি করত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে শোয়েব ভাইয়ের মতো অনেকের আঁকা দেখতাম, নানা প্রশ্ন করতাম। বাড়ি ফেরার পর মায়ের বকা খেতাম, কখনো মারও খেতাম।
আমার অদম্য কৌতূহল আর প্রশ্নবাণের জন্য একদিন শোয়েব ভাই আমাকে অঘোষিত সাগরেদ বানিয়ে ফেললেন। আমি পড়া শেষ করে দৌড় দিতাম মুন আর্টের দিকে। আমিও বিলবোর্ড আর্টিস্টদের মতো বিশাল বিশাল ছবি আঁকা শিখে ফেললাম শোয়েব ভাইয়ের কাছ থেকে একদিন। অবিশ্বাস্য! তিনি তখন টপ আর্টিস্ট এসব সেক্টরে। আমাকে এতটা আগ্রহ নিয়ে ছবি আঁকা শেখাতেন যে অন্য অনেকে ঈর্ষা করত আমাকে।
এই সময়টা আমার জীবনের অনেক বড় একটা অধ্যায় বলেই আমি মনে করি। আমি সারাজীবন স্কুল কলেজ বিশ্ববদ্যালয়ে যা শিখিনি, তা এই সময়টায় এইসব শিল্পীদের সংস্পর্শে এসে শিখেছি। হিন্দু, মুসলমান, বিহারি, বাঙালি সব ধরনের জনগোষ্ঠী এখানে কারিগর হিসেবে ছিল। তারা নিজেদের কারিগর বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত। শিল্পী শব্দটা ঠিক যেন তাদের নিজস্বতাকে প্রকাশ করে না। একদিকে শ্রমজীবী সত্তা আরেকদিকে শিল্পী সত্তা। তারা আমাকে তাদের মতই একজন কারিগর ভাবত এবং আমি অল্প বয়সেই মিশে গিয়েছিলাম তাদের সাথে আমার সবকিছু জানা-অজানা নিয়ে।
সে সময়ে বামপন্থী সাংবাদিক মন্টু খানের ছেলের সাথে পরিচয় হয়। যার কাছ থেকে মাও সেতুংয়ের লং মার্চের ওপর ইলাস্ট্রেশনের বই ধার করে বাসায় এনে সেসব কপি করতাম। রাশিয়ান শিশুবিষয়ক বইয়ের ইলাস্ট্রেশন কপি করতাম। স্বপ্ন দেখতাম, একদিন এরকম ছবি আঁকব। সেইসাথে চলছিল নায়ক-নায়িকাদের মস্তবড় মুখচ্ছবি আঁকার চেষ্টা।
সেই সময়ে শোয়েব ভাই-ই আমাকে রাস্তা দেখালেন। আমি কোনো আর্ট স্কুলে ভর্তি হইনি কোনোদিন, তবে এই কারখানাই তখন আমার আঁকার স্কুল। সবার মাঝে শোয়েব ভাই-ই আমার ওস্তাদ হয়ে উঠলেন। আমি একটু একটু করে শিখতে লাগলাম তাঁর কাছ থেকে।
আমার মনে আছে, আমি এই শিল্পীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিলাম আরেকটি কারণে। সময়টা ১৯৯৮ সাল। আমার মেট্রিক পরীক্ষার পর পর সম্ভবত। ততদিনে ডিজিটাল বিলবোর্ড আসেনি। তবে কারখানা মালিকদের নিপিড়ন চলছে কারিগরদের ওপর। তারা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। ছোটখাটো আন্দোলনও শুরু হয়ে গেছে। কারিগরদের একটাই দাবি, তারা ন্যায্য মজুরি চায়, নিরাপত্তা চায়। ফলে তারা ইউনিয়ন করার উদ্যোগ নিল। আমি যেহেতু একমাত্র শিক্ষিত (একাডেমিক) কারিগর সেখানকার, ফলে আমাকে লিডার করার প্রস্তাব করা হলো। আমার বয়স কম। আমি মাত্র ছাত্র ইউনিয়ন স্কুল শাখাগুলোতে নানা কার্যক্রমে যাওয়া-আসা করি। এরকম প্রস্তাবে ঘাবড়ে গেলাম। এদিকে বাবা-মা এসব কোনোভাবেই মানবে না। আমি চারুকলায় ভর্তি হয়ে শিল্পী হব, এমন বাসনাও মাত্র দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এরকম সময়েই একসময় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমার কলেজের পড়াশোনা নিয়ে। অনেকটা স্বার্থপরের মতোই চলে এলাম এসব কিছু থেকে ইস্তফা দিয়ে। ইন্টারমিডিয়েটের রেজাল্ট হলো, তারপর ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ঢুকে পড়লাম চারুকলায়।
২০০৯ সালে আমি যখন চারুকলায় ভর্তি হলাম, খবরটা শুনে শোয়েব ভাই ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। প্রথম বর্ষেই একটা লাইফ সাইজ ফিগার স্কেচ করেছিলাম বাবাকে মডেল করে। সেটি তাঁকে দেখাতে নিয়ে গেলাম তাঁর দক্ষিণ মৈশুন্ডির বাসায়। আমার ডিটেইলস দেখে তিনি এত মুগ্ধ হয়েছিলেন যে মনে হয়েছিল তিনি ওস্তাদ হিসেবে নিজেকে সার্থক মনে করেছিলেন সেদিন। একজন যোগ্য সাগরেদ হিসেবে আমাকে আশীর্বাদ করে দিয়েছিলেন সেদিন।
শোয়েব ভাই এরপর আস্তে আস্তে ডিজলভ হয়ে গেছেন আমার জীবন থেকে। সিনেমার বিলবোর্ড ততদিনে ডিজিটাল হয়ে গেছে। আর আঁকার অর্ডার পাচ্ছেন না। বিড়ির ব্র্যান্ডিংয়ের কাজে নিয়মিত শেরপুর যেতেন কাজ করতে। কখনো-বা শৌখিন কারও পোর্ট্রেইট এঁকে দিচ্ছেন। এসব করেই জীবন ধারণ করতেন তিনি। আমি আর তেমন খোঁজ রাখতে পারিনি তার। দক্ষিণ মৈশুণ্ডি থেকে তিনি যখন কামরাঙ্গীরচরে চলে গেলেন, তখন যোগাযোগ প্রায় স্তিমিত হয়ে গেল। মাঝে মাঝে নারিন্দায় আসতেন তার মেয়ের বাড়িতে, তখন যদি দেখা হতো, আড্ডা হতো।
শোয়েব ভাই যে ধারায় কাজ করতেন, সেটি পুরোপুরি পপ ধারা নয়। তার কাজে একাডেমিক ধারার ছাপ ছিল। এই প্রভাবটা কোত্থেকে এসেছে আমার জানা নেই। তবে বিশেষ করে পেইন্টিংয়ে উনি রিয়ালিস্টিক কালার পছন্দ করতেন। অতি রঙচঙা কাজ তার পছন্দ ছিল না। সিনেমার বিলবোর্ড আঁকার সময় তিনি সেই প্রথাগত কালারফুল ট্রিটমেন্টে পেইন্টিং করতেন। সিনেমার বিলবোর্ড আর্টিস্টদের পেছনের ইতিহাসটা যদি তাদেরই ভাষ্য অনুযায়ী বলি, তাতে দেখা যায়, এ অঞ্চলে অবাঙালি আর হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু শিল্পীর নামডাক ছিল এই পেশায়। শিল্পী গুলফাম, লাডলা, দুলারা—এরা ছিলেন অবাঙালি শিল্পী। গিরিন দাস হিন্দু সম্প্রদায় থেকে উঠে আসেন; তাঁর ওস্তাদ ছিলেন গুলফাম। মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী সময়ে এই পেশার একটা রমরমা অবস্থা ছিল। তারা নিজেদের লোকশিল্পী মনে করতেন না, কারণ এই পেশায় সুভাষ দত্ত, নিতুন কুণ্ডুর মতো আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত লোকজনও জড়িত ছিল। রিকশা পেইন্টারদের কাজের থেকে নিজেদের কাজকে সবসময় আলাদা করে বিচার করতেন তারা।
বিলবোর্ড শিল্পীরা অনেকেই আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন এবং এরা অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের সন্তান ছিলেন। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বিহারিদের অবস্থা আবার আগের জায়গায় ফিরে গেলে অনেকেই আর মাথা তুলে দাড়াতে পারেননি। আর্থিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন অনেকে। বাংলাদেশে আবার যখন বাণিজ্যিক সিনেমার কাটতি শুরু হলো, তখন এই অঞ্চলে এই পেশা আবার আগের জায়গায় ফেরে। শোয়েব ভাই নিজে অবাঙালি হয়েও পাকিস্তান-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে এই পেশায় নিজেকে নিযুক্ত করেন। কাজ শেখেন গিরিন দাসের কাছে।
এই শিল্পীরা যে কেবল সিনেমা হলের বিলবোর্ড আঁকতেন, তা নয়; পাশাপাশি ফিল্ম পোস্টারও আঁকতেন। গিরিন দাস, বিদেশ কুমার ধর—এরা সবাই-ই ফিল্ম পোস্টার ডিজাইনারও ছিলেন। বিদেশ কুমারের প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল বিকেডি। গিরিন দাসের প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল রূপায়ন পাবলিসিটি, যেটি ঢাকার রথখোলায় অবস্থিত ছিল। শোয়েব ভাই পোস্টার ডিজাইনে আর যাননি। বিলবোর্ড আর পোর্ট্রেট আঁকাতেই ছিল তাঁর ধ্যান।
আমাদের বিলবোর্ড আর্টিস্টদের মধ্যে তিনি ভীষণ রকমের ব্যতিক্রম ছিলেন। তার ফ্রি হ্যান্ড ড্রয়িং প্রপরশন অসম্ভব ভালো ছিল। গ্রাফ পদ্ধতিতে তিনিও আঁকতেন, তবে ফ্রি হ্যান্ড মেমোরি ওয়ার্ক তার ভীষণ পছন্দ ছিল। আমি একটা সময়ের পর তার সাথে আড্ডা দিতেই ভীষণ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম কারণ, তিনি একমাত্র ব্যাক্তি ছিলেন যিনি নিজেকে সবসময় আপডেট রাখতে চাইতেন।
শেষ আড্ডায় আমার সাথে তাঁর কথা হয়েছিল বিমূর্ত আর্ট ফর্ম নিয়ে। তিনি ইজম বুঝতে চাইতেন। আমাকে জিজ্ঞেস করতেন, তোমরা যে ছবি আঁকো, সেসব আমরা কেন বুঝি না? কী এর গূঢ় রহস্য? কারণ তার কাছে ছবি মানেই রিয়ালিস্টিক। এর বাইরের ফর্মগুলো কীভাবে বুঝব। তার তরিকাই বা কী। এসব জিজ্ঞাসা ছিল তার আমৃত্যু।
ধর্মতত্ত্ব নিয়েও আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ হতো। তিনি তার ঈশ্বর ভাবনা জগতের সব রহস্যের কূল-কিনারা নানা-আধ্যাত্মবাদ নিয়ে তার নিজস্ব ভাবনার কথা বলতেন। কখনো কখনো চমকে গেছি তার অবজারভেশন শুনে।
শোয়েব ভাইয়ের তেমন বন্ধু ছিল না যার সাথে তিনি এসব আলাপ করতে পারেন। শেষবার দেখা হবার সময় বলেছিলেন, গান-বাজনা করো ভালো কথা, ছবি আঁকো না কেন? আমি বলেছিলাম, এখন আর আঁকতে ইচ্ছা করে না, শোয়েব ভাই। তিনি উত্তরে হেসেছিলেন।
শেষবার দেখায় শিল্পকলা থেকে রিকশায় নারিন্দায় এসেছিলাম আমরা একসাথে। এরপর আমাদের আর দেখা হয়নি। এর মধ্যে মাঝে মাঝেই ভেবেছি একদিন হুট করেই কামরাঙ্গীরচরে চলে যাই, শোয়েব ভাইয়ের সাথে একবেলা কাটিয়ে আসি। কিন্তু নানা বাস্তবতা তা হতে দেয়নি। কলকাতায় বসে তার মৃত্যুসংবাদ পেলাম। শেষবারের মতো কদমবুচিও করা হলো না।
তিনি ছিলেন আমার আঁকার গুরু। কীভাবে আম্বার্ড কালারের সাথে বার্ন্ট সিনাহ মেশাব, ফ্লুরোসেন্ট কালার কেন ব্যবহার করার দরকার নেই, মানুষের শরীরের রঙ কী রঙ দিয়ে বানাব, ড্রয়িংয়ে পারফেকশনের চেয়ে বিউটি কত জরুরি—এসব তিনিই শিখিয়েছেন। বকা খেয়ে কান্না পেলে হাত থেকে ব্রাশ পড়ে যেত, তিনি আবার সস্নেহে কাছে ডেকে নিতেন।
রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে একদিন গুরু খুঁজে পেয়েছিলাম, যিনি আমার অদম্য কৌতূহলকে ভালোবেসে হাতে একটা হকিয়ার ব্রাশ ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, নিজের পৃথিবীটা নিজের মতো আঁকো। কখনও থেমে যেও না। নিজের আসলিয়াতকে এস্তেমাল করো।