বিবর্ণ জীবন: নারী পাচারের খাতায় যোগ হলো পাহাড়ের মেয়েরা
বাংলাদেশ থেকে মেয়ে ও নারী পাচার নতুন কিছু না। চাকুরি দেয়া, বিয়ে করে উন্নত জীবন, টিকটক তারকা বানানো ইত্যাদি নানা প্রলোভন দেখিয়ে নানাভাবে এই পাচার চলছে। পাচারের ঘটনায় নতুন যোগ হয়েছে বাংলাদেশের পাহাড়ি তরুণীরা। এদের চীনে পাচার করা হচ্ছে। অবশ্য 'নতুন যোগ হয়েছে' কথাটা ঠিক নয়, বলা যায় প্রকাশ্যে এসেছে। প্রায় ৬-৭ বছর আগে বেসরকারি একটি সংস্থা এই তথ্য পেয়ে পাহাড়ে একটি গবেষণা চালিয়েছিল। গবেষণাতেও এই তথ্য উঠে এসেছিল, কিন্তু স্পর্শকাতর ইস্যু মনে করে তা আর প্রকাশ করা হয়নি।
কিন্তু 'আজকের পত্রিকা'র বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত সাত বছরে ৮ হাজারের বেশি কিশোরী-তরুণীকে চীনে পাচার করা হয়েছে। তাদের কাউকে কাউকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেককে বাসায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। জীবন বাঁচাতে কেউ কেউ পালিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে। চীনে নারীদের ব্যাপক চাহিদা আছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, এক সন্তান নীতির কারণে দেশটিতে এখন নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক পুরুষ বিয়ের জন্য নারী পাচ্ছেন না। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে মাঠে সক্রিয় পাচারকারী চক্র। বাংলাদেশের পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চীনাদের চেহারার মিল আছে। চক্রের সদস্যরা উন্নত জীবনযাপনের লোভ দেখিয়ে পাহাড়ি পরিবারগুলোকে রাজি করাচ্ছে।
এরপর তরুণী-কিশোরীদের পাচার করা হচ্ছে চীনে। এ কাজে সুবিধার জন্য অনেক সময় এ দেশেই চীনাদের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বা বিয়ের জাল কাগজ তৈরি করা হচ্ছে। একজন নারীকে পাচারের জন্য সর্বনিম্ন ৮ লাখ টাকা লেনদেন করে চক্রটি। তবে এ টাকা কমবেশি হয় বয়স আর চেহারার ওপরে। কমবয়সি মেয়েদের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা পর্যন্তও লেনদেন হয়। এই টাকার অধিকাংশ চলে যায় চক্রের হাতে। কিছু টাকা ব্যয় হয় পাসপোর্ট, ভিসা ও ঢাকায় থাকা-খাওয়ার জন্য। ভুক্তভোগী পরিবারও এখান থেকে এক-দেড় লাখ টাকা পায়। পাহাড়ি নারী-পুরুষদের একটা অংশ এই পাচার চক্রের সদস্য। তারা পাহাড়ের দরিদ্র মেয়ে ও পরিবারকে টার্গেট করে। অন্যান্য নারী ও মেয়েরা যেভাবে পাচারের শিকার হয়ে হারিয়ে যাচ্ছেন, এরাও সেই একইভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন।
পরিবারের অভাব, মা-বাবার অসচেতনতা, বিয়ের প্রলোভন, চাকরি ও চীনে নাগরিকত্বের লোভে পড়ে মেয়েরা চীনাদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন। এখানে বাড়তি যোগ হয়েছে আরেকটি কারণ, তা হচ্ছে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকায় মূল সমাজের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরেও অনেকে এ পথে পা বাড়াচ্ছেন। চীনে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসা এক নারীর সঙ্গে কথা হয়েছে আজকের পত্রিকার। তিনি জানান, চীনে নিয়ে তাদের একপ্রকার নিলামে ওঠানো হয়। তাদের মধ্যে থেকে খুব কমসংখ্যক মেয়েকে বউ করে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অধিকাংশকেই বাসাবাড়ি বা যৌনপল্লিতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।
একইভাবে বিদেশে উন্নত জীবনের কথা বলে প্রতি বছর হাজারো মেয়েকে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয় ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে। এদের প্রথমে সড়কপথে ভারতের সীমানায় নেয়া হয়, এরপর পাচার করা হয় মুম্বাই, পুনে, দিল্লি ও আগ্রায়। যে মেয়েগুলো দেখতে ভালো বা কমবয়সি, তাদের দুবাইতেও পাঠিয়ে দেয়া হয়। ভারতীয় পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর যাদের কপাল ভালো তারা সেইফ হোমে যেতে পারেন। আবার কারো কারো বিরুদ্ধে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা করে দেন আশ্রয়কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। বাণিজ্যিকভাবে যৌন নির্যাতনের জন্য পাচারের শিকার হওয়া সত্ত্বেও কেন এই মেয়েগুলোর বিরুদ্ধে আবার মামলা করা হয়, তা বোধগম্য নয়। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন উদ্ধারকারী সংস্থা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনেক মেয়েকেই ফিরিয়ে আনতে পারে। এরপরেও নানান প্রশাসনিক ও আইনী জটিলতায় অসংখ্য মেয়ে আটকা পড়ে থাকেন।
যদিও আমরা জানি যে ভারত সরকারের আইন অনুযায়ী যৌনকর্মী হিসেবে কাউকে নিয়ে আসা বা প্ররোচিত করা এবং যেখানে যৌনপল্লি পরিচালিত হয়, সেখানে কাউকে আটকে রাখা আইনত দণ্ডনীয়। মানবপাচার প্রতিরোধের লক্ষ্যে এই আইন করেছে ভারত। আইনের বিধানগুলো অভিযান পরিচালনা, তল্লাশি, নারীদের আটক ও আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার অনুমতি দেয়। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই এটা মানা হয় না। হেনস্থা হতে হয় পাচারকৃত নারীদের। পাচার ও একাধিক স্থানে জোরপূর্বক যৌনকাজে বাধ্য করার কারণে মেয়েদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন শারীরিক ও মানসিকভাবে। ধরেই নেয়া হয়, এই মেয়েগুলো যেহেতু পাচার হয়ে এসেছে, তাই প্রতিটি স্পটে তাদের হেনস্থা ও যৌন হয়রানি করারটা আইনসিদ্ধ।
যে মেয়েরা একবার পাচার হয়ে যান, তারা অনেকেই আর গৃহে আসতে চান না লোকলজ্জা ও সম্মানহানির ভয়ে। অনেকেই নিজেকে ঘৃণ্য ভাবতে শুরু করেন। বিয়ে করে বা প্রেমিকের হাত ধরে ঘরের বাইরে এসে পাচার হয়ে যান যারা, তাদের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হয়। অনেকেই পালিয়ে এসেছেন, কিন্তু দেশে ফিরে বুঝতে পেরেছেন তিনি এইডস আক্রান্ত। তখন তার পক্ষে পরিবারের সাথে থাকা অসম্ভব হয়ে ওঠে। ভয় দেখানোর জন্য পাচারের শিকার মেয়েদের নানাভাবে অত্যাচার করা হয়, যেমন: মারপিট, যৌন নির্যাতন, খেতে না দেয়া, কম খেতে দেয়া, পর্নোগ্রাফি করিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা ইত্যাদি। পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের সহায়তাকারী এনজিও 'জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার'-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. তরিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এনজিওটি ভারতে ১৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সি প্রায় ৮০০ নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছে।
বিদেশে উন্নত জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতি বছর হাজারো মেয়েকে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও পাচার রোধ করা যাচ্ছে না, বরং দিনে দিনে নতুন নতুন ধরন বের হচ্ছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেয়েদের বিভ্রান্ত করে ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। যেমন যোগ হয়েছে চীন। এরপর থাইল্যান্ড যোগ হলেও বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। সেক্স ট্রেড এখন দুনিয়াজুড়ে অন্যতম লাভজনক ব্যবসা। সাথে যোগ হয়েছে অনলাইন সেক্স। পর্নোগ্রাফির ব্যবসা তো রয়েছেই। ক্রেতাদের সবচেয়ে আগ্রহ কিশোরী মেয়ে ও শিশুদের প্রতি। সেই কারণে ভয়াবহভাবে বাড়ছে পর্নোগ্রাফি ও অনলাইন ভিডিওতে কিশোরী মেয়ে ও শিশুর ব্যবহার।
ভারতে নারী পাচার করা সবচেয়ে সহজ। চীনে পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে যাওয়ার মতোই দালালরা বিভিন্ন জেলার দরিদ্র পরিবারের কমশিক্ষিত ও নিরক্ষর নারী বা স্কুল থেকে ঝরে পড়া কিশোরীদের প্রস্তাব দেয় যে তাদের দিল্লি ও মুম্বাইয়ে ভালো ও সম্মানজনক চাকরি দেয়া হবে। মেয়েগুলোকে কলকাতায় দালালের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও সীমান্তে অনেকধরনের ফাঁকফোকর থাকে, কিন্তু মেয়েদের বিয়ে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বা আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছে, এমন দেখিয়ে পাচার করা হয়। 'ওই নারীদের কলকাতার বিভিন্ন লজ বা হোটেলে কয়েকদিন আটকে রাখে দালালরা। এ সময় জাল ও বানোয়াট নথি জমা দিয়ে তাদের প্যান কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করা হয়। রেসকিউ ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ত্রিবেণী আচার্য বলেন, তারা বছরে প্রায় ৫০০ মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং তাদের মধ্যে ২০ শতাংশই বাংলাদেশি। এমনকি মুম্বাইয়ের যৌনপল্লিতে অনেক বাংলাদেশি "গুরু মা" (যৌনপল্লি ম্যানেজার) আছেন।' অনেক বাংলাদেশি যৌনকর্মী এখন এসব যৌনপল্লির ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেন। তারাও একসময় ছিলেন এই দুষ্টচক্রের ভুক্তভোগী। তারা বাংলাদেশি নারীদের নিয়োগ করেন, যারা পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে নতুন নতুন মেয়েকে এসব যৌনপল্লিতে নিয়ে আসার জন্য পাচারকারী হয়ে ওঠেন। (সূত্র: দ্য ডেইলি স্টার)
চীনে যে পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেই পাচারকারী চক্রে অনেক পাহাড়ি মেয়ে ও ছেলে জড়িত। এদের কাজ দুস্থ মেয়েদের খুঁজে বের করা, পটিয়ে দালালের হাতে তুলে দেয়া। প্রথমে ঢাকায় এনে মেয়েদের সাজগোজ, কায়দা-কানুন, চুলের স্টাইল, ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়। এরপর চীনে পাঠানো হয়।
বছর দুয়েক আগে ভারতের বেঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি তরুণীর ওপর নির্যাতনের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর এমন সংঘবদ্ধ নারীপাচার চক্রের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল, যারা 'টিকটক তারকা' বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে বছরে দেড় হাজার নারী পাচার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অগোচরে। টিকটক, লাইকির মতো ফান প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীপাচারকারীরা বহু বছর যাবত সক্রিয় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের পুলিশবাহিনী এ কথা জানতই না, যদি না বেঙ্গালুরুর ভিডিওটা প্রকাশিত হতো। পাচারের শিকার তরুণী জানিয়েছেন অনেক বাংলাদেশি মেয়ে পাচার হয়ে ভারতের বিভিন্ন শহরে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। চাকরি দেওয়ার নাম করে তাদের যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
নারী পাচারের সঙ্গে আরও অনেক চক্র জড়িত। তাদের খুঁজে বের করতে না পারলে বিচ্ছিন্ন অভিযান কোনো ফল দেবে না। চীনে পাচার রোধে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে বিদেশিদের সাথে বিয়ে বন্ধে। কেমন করে অসংখ্য পাহাড়ি মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন? দেশে কি কোনো আইন নেই? পরিবারগুলো কেন প্রশাসনকে জানাচ্ছেন না? কেন পুলিশের সহযোগিতা চাইছেন না? হুট করে চীনা নাগরিকের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে কীভাবে? সরকারের উচিত বিদেশিদের বিয়ে করার বিষয়ে আইনে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা। তাহলেই এ ধরনের পাচার বন্ধ হবে।
পাশাপাশি পাহাড়িদের সচেতন করতে হবে, তারা যেন মেয়েদের বিপদ সম্পর্কে অবগত হন এবং সন্তানকে জানান। এদেশের প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে রয়েছেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। তারা শিক্ষা, সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি, অর্থ উপার্জন, চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ অনেকটাই পিছিয়ে আছেন। সামাজিক সুরক্ষা সেভাবে পান না তারা। অবহেলিত এই জনগোষ্ঠীর মেয়েদের বাঁচানোর দায়িত্বটা সরকারকেই নিতে হবে। যেসব বেসরকারি সংস্থা পাহাড়ে কাজ করছে, তাদেরও কর্মসূচিতে এই ইস্যুটি যোগ করতে হবে।
ট্রানজিটের সময় নারী ও মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে কঠোর দৃষ্টি দিতে হবে। একবার কোনো মেয়ে রেড লাইট এরিয়া বা যৌনপল্লিতে নাম লেখালে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। সেখানে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করার কয়েক বছর পর তাকে উদ্ধার করতে যাওয়ারও কোনো মানে হয় না। তাছাড়া অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মেয়েরা ভাষা সমস্যার কারণে নিজের বিপদের কথা ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারেন না। তারা ভালো আইনজীবীও পান না বিদেশ-বিভুঁইয়ে। তাদের কথা অনেকে বিশ্বাস করতে চায় না, সেইসাথে টাকা-পয়সার অভাব তো রয়েছেই। ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটাও খুব একটা সহজ নয়।
নারী পাচার মানবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ। অন্য দেশে গিয়ে আমাদের কন্যাসন্তানরা যৌনকর্মী হয়ে থাকছে, এ কথা ভাবতেও বুকের ভেতরটা শুকিয়ে যায়। ২০২০ সালের মানবপাচার তথা টিআইপি বা বৈশ্বিক ট্রাফিকিং ইন পারসন (টিআইপি) সূচকে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়েছিল। টায়ার মাইনাস টু থেকে টায়ার টুতে উন্নীত হয়েছিল। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত প্রায় ১২ বছরে বাংলাদেশ থেকে দুই লাখ নারী-পুরুষ ও শিশু পাচার হয়েছে। প্রতি বছর ২০ হাজার নারী ও শিশু ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হয়ে যায়। অপর এক হিসাবে দেখা যায়, ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে ৫০ হাজার নারী পাচার হয়ে গেছেন। (সূত্র: প্রথম আলো) এবার প্রকাশ্যে এসেছে চীনে নারী পাচার হয়ে যাওয়ার খবর।
এভাবে বিয়ের নামে পাহাড়ি নারীদের পাচারের বিষয়ে জানতে চেয়ে ঢাকায় চীনা দূতাবাসে ১৫ এপ্রিল আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ই-মেইল করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো জবাব আসেনি। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, চীনে নারী পাচারের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই, তবে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়গুলো লোকাল পুলিশ জানে।
সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, ভিকটিমদের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকেও কোনো কারণে কখনও কোনো অভিযোগ আসে না। তারা তথ্য গোপন করেন। হয়তো তারা ভয় পান, হয়তো মনে করেন আরও বড় ঝামেলায় পড়বেন। এছাড়া সামাজিক লজ্জা তো আছেই। পাহাড়ের মানুষগুলো যেহেতু প্রান্তিক অবস্থানে আছেন, তাই নারীপাচার বন্ধে সেখানে বিভিন্ন পর্যায় থেকে জোর তৎপরতা চালাতে হবে।
শাহানা হুদা রঞ্জনা: যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক
- বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফল। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।