রাশিয়া-তুরস্কের ‘সহযোগিতামূলক সম্পর্কে’ উদ্বিগ্ন পশ্চিম
ন্যাটো মিত্র ও সম্ভাব্য ইইউ সদস্য তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফিনান্সিয়াল টাইমস এমনটিই জানিয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সোচিতে বৈঠক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুর্কি নেতা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এ সময় বাণিজ্য ও জ্বালানি সহযোগিতাসহ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছয় পশ্চিমা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাণিজ্য ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতার যে আলোচনা হয়েছে রাশিয়া ও তুরস্কের মাঝে, তা নিয়ে পশ্চিম 'চিন্তিত'। এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আঙ্কারা ও মস্কোর মধ্যকার সম্পর্ককে 'আরও ঘনিষ্ঠভাবে' পর্যবেক্ষণ করছে ব্রাসেলস।
গেল শুক্রবার (৫ আগস্ট) রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা বৈঠক করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। জানা যায়, এ সময় তুরস্কে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়া সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে; রাশিয়ার এমন ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন এরদোয়ান।
এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্য নির্ধারণসহ সন্ত্রাস দমন এবং লিবিয়া ও সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হয়েছেন দুই নেতা।
প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, গত বছর তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৭ শতাংশ এবং চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে তা দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখতে কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই তুরস্ককে তেল, গ্যাস এবং কয়লাসহ সব ধরনের শক্তি সংস্থান সরবরাহ করবে রাশিয়া।
সেইসঙ্গে, রাশিয়ার গ্যাসের দাম কিছু অংশে ডলারের পরিবর্তে রুবলে পরিশোধ করার ব্যাপারেও তুরস্ক সম্মত হয়েছে বলে জানান রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক।
১৯৫২ সাল থেকে তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য এবং ১৯৮৭ সাল থেকে ইউরোপীয় জোট ইইউ'র সদস্যপদ প্রার্থী। এরপরেও বিভিন্ন ইস্যুতে উভয় ব্লকের বিরুদ্ধে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে তুরস্ককে। সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ অভিযানের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মতে, কিয়েভ এবং মস্কোর সঙ্গে একটি 'ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি' বজায় রাখছে তুরস্ক। মূলত এ কারণেই ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে অস্বীকার করেছে দেশটি। তুরস্কই একমাত্র ন্যাটোভুক্ত দেশ, যারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে এখনও এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
- সূত্র: রাশিয়া টুডে