ট্রায়াল শেষে ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ স্থায়ী হবে যুক্তরাজ্যে
চলতি বছরের জুনে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কর্মীদের জন্য সপ্তাহে ৪ কর্মদিবসের ট্রায়াল শুরু করেছিল। ৬ মাসের সেই ট্রায়ালের মাঝামাঝি এসেই প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক ট্রায়ালের সময়সীমা শেষ হতেই ৪ কর্মদিবসের সপ্তাহ স্থায়ীভাবে চালু করবে তারা।
যুক্তরাজ্যের ৭০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান এই পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছে, যেখানে কর্মরত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী তাদের স্বাভাবিক কর্মঘণ্টার ৮০ শতাংশ সময় কাজ করে শতভাগ বেতন পাচ্ছেন।
৬ মাসের ট্রায়ালের ৩ মাসের কিছু বেশি সময় পেরিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সংস্থাগুলোতে কাজের স্বাভাবিক প্রবণতা বা উৎপাদনশীলতা বজায় আছে। কিছু কিছু সংস্থায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে উৎপাদনশীলতা আরও বেড়েছে।
যদিও ট্রায়ালে অংশ নেওয়া কিছু পুরনো ধাঁচের সংস্থা ৪ কর্মদিবসের সপ্তাহ বাস্তবায়ন 'কঠিন' হবে বলে মনে করেছিল। তবে এখন ট্রায়াল শেষ হতেই তারা কাজের এই ধারাকে স্থায়ী করতে চায়।
এ বিষয়ে ফোর উইক গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী জো ও'কনর বলেন, "অনেকের জন্য এই পরিবর্তন অনেকটাই সহজ; আবার কারো কারো কাছে এটি কিছুটা কঠিন, বিশেষ করে যারা অভ্যাস, সংস্কৃতি এবং প্রথার ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে স্থির বা অনমনীয় স্বভাবের।"
তবে, পরিবর্তনের এই ধারা কর্মোৎপাদনশীলতাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং বোস্টন কলেজের গবেষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই প্রোগ্রামটি অলাভজনক ফোর ডে উইক গ্লোবাল (থিঙ্ক ট্যাঙ্ক) ও ফোর ডে উইক ইউকে ক্যাম্পেইন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সপ্তাহে ৪ কার্যদিবসের স্কিম পরিচালনা করছে ফোর উইক গ্লোবাল নামের এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
ট্রায়ালে থাকা ৭৩টি সংস্থার মধ্যে ৪১টি সংস্থা স্কিমের অধীনে একটি সমীক্ষায় অংশ নিয়েছে। জরিপে তাদের ৮৬ শতাংশই বলেছে, পরীক্ষামূলক ট্রায়াল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ স্থায়ীভাবে চালু করবে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই দাবি, এটি তাদের ব্যবসার জন্য ভালো কাজ করছে। ৯৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক এই সময়ের মধ্যে কর্মঘণ্টা ২০ শতাংশ কমে আসলেও কর্মোৎপাদনশীলতা স্বাভাবিক সময়ের মতো একই ছিল বা ক্ষেত্রবিশেষে তারচেয়েও উন্নত ছিল।
৩ হাজার ৩০০জনেরও বেশি কর্মী বর্তমানে এই ট্রায়ালের অংশ হিসেবে সপ্তাহে ৩ দিন ছুটি এবং ৪ দিন অফিসের কাজে সময় দিচ্ছেন। তবে তাদের বেতনে কোনো ধরনের কাটছাঁট করা হচ্ছে না। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ সময় কম কাজ করেও এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মীরা শতভাগ বেতন ভোগ করছেন।
- সূত্র: বিবিসি