ফ্রান্সে জ্বালানি সংকট ও জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ফ্রান্সে। রোববার (১৬ অক্টোবর) রাজধানী প্যারিসে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সরকারের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনে অংশ নেন। খবর আল জাজিরার।
ফ্রান্সের একটি শোধনাগারে গত তিন সপ্তাহ ধরে চলছে ধর্মঘট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছে জ্বালানি সংকট। সেইসঙ্গে, বেড়ে চলেছে জীবনযাত্রার খরচ।
এসব ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের বামপন্থী রাজনৈতিক বিরোধীরা রোববার বিক্ষোভের ডাক দেন। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন দেশটির আনবোড (এলএফআই) পার্টির প্রধান জঁ-লুক মেলেনচন।
বিক্ষোভ চলাকালীন মেলানচন বলেন, "আমরা এমন একটি সপ্তাহ দেখতে যাচ্ছি, যা প্রায়শই দেখা যায় না।"
"সবকিছু ঠিক পথে এগোচ্ছে। আমরা এই মিছিল দিয়ে এটি শুরু করছি; আশা করছি, এটি বিশাল সাফল্য বয়ে আনবে," যোগ করেন মেলানচন।
আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভটিকে 'জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় এবং জলবায়ু ইস্যুতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আয়োজকদের দাবি, রোববার সমাবেশে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। এর আগে পুলিশ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল ৩০ হাজার লোকের বেশি উপস্থিত হবে না ওই সমাবেশে।
জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি, জীবনযাত্রার খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বিক্ষোভাকারীরা। এরমধ্যে জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের খরচ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং দেশের বড় কর্পোরেশনগুলোর বাড়তি লাভের ওপর কর আরোপেরও দাবি জানান তারা।
এ সময় কিছু বিক্ষোভকারী হলুদ ফ্লোরোসেন্ট ভেস্ট পরেছিলেন। ২০১৮ সালে সরকারবিরোধী সহিংস আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে আলোচিত এই হলুদ ফ্লোরোসেন্ট ভেস্ট। সে সময়ের ওই আন্দোলন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর ব্যবসা-বান্ধব মধ্যপন্থী সরকারকে নাড়া দিয়েছিল।
জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বমুখীতার পরিপ্রেক্ষিতে সেপ্টেম্বরের শেষে শোধনাগারে শুরু হয় ধর্মঘট। এর ওপর ভিত্তি করেই ম্যাখোঁ বিরোধীরা নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করার আশা করছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার দেশটিতে ডাকা হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। শোধনাগারের মজুরি ধর্মঘটের সঙ্গে নতুন এই ধর্মঘটের হুমকি সরকারের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শোধনাগার বন্ধ থাকায় জ্বালানি ডিপোগুলো ইতোমধ্যেই সংকটে পড়েছে। দেশে গ্যাসোলিনের ব্যাপক ঘাটতি তৈরি হয়েছে। জ্বালানি শিল্পের ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ শ্রমিক এবং গাড়িচালকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন, জ্বালানি নিতে পেট্রোল স্টেশনগুলোতে তৈরি হয়েছে লম্বা লাইন।