সিনেটের চেয়ে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা কঠিন হবে, সমাপনী ভাষণে বাইডেন
শুরু হচ্ছে আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন। আজ মঙ্গলবারের (৮ নভেম্বর) এই ভোটযুদ্ধের ফলাফল প্রভাবিত করবে মার্কিন পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ– কংগ্রেস ও সিনেট'কে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মনে করছেন– নির্বাচনে এবার ডেমোক্রেট দলের জন্য উচ্চকক্ষ সিনেটের চেয়ে কঠিন হবে কংগ্রেসে (প্রতিনিধি পরিষদে) সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার লড়াই। খবর ব্লুমবার্গের
সোমবার রাতে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের কাছে– ভোটের লড়াইয়ে ডেমোক্রেট দল কেমন করবে, সে বিষয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি ।
এসময় তিনি বলেন, 'লড়াইটা কঠিন হবে, তবু মনে করি- আমরাই পারব। আমি মনে করি, আমরা সিনেট (সংখ্যাগরিষ্ঠতা) জিতব। তার চেয়ে কঠিনতর হবে হাউজ (কংগ্রেস) ধরে রাখা'।
'আমি আশাবাদী। আমি সবসময়ই বেশ আশাবাদী'- যোগ করেন তিনি।
মেরিল্যান্ডে গভর্নর পদে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী ওয়েস মোরের পক্ষে এক জনসভায় যোগ দেওয়ার পর বাইডেন এসব কথা বলেছেন।
এদিন ভোটারদের উদ্দেশ্যেও নির্বাচন প্রচারণার সমাপনী ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট। সমর্থকদের প্রতি ভোটকেন্দ্রে এসে ব্যালটের মাধ্যমে তাদের রায় দিতে বলেছেন। ভোটারদের সতর্ক করে তিনি বলেন, রিপাবলিকানদের হাতে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ চলে গেলে– আমেরিকানদের অর্থনৈতিক অর্জনগুলি বিপন্ন হবে।
এর আগে ওয়েস মোরের পক্ষে প্রচারণা সভায় তিনি বলেছিলেন, 'সব ধরনের প্রগতির জন্য এ লড়াই। অনেক পরিবার টিকে থাকার সংগ্রাম করছে– তা আমাদের অজানা নয়। কর্মজীবী ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করার মতো শক্ত অবস্থানে আছি আমরা (ডেমোক্রেটরা) – যারা মহামারি এবং ইউক্রেনে পুতিনের আগ্রাসী যুদ্ধের ক্রসফায়ারের শিকার'।
হোয়াইট হাউসের সূত্র জানায়, ওই সভায় প্রায় এক হাজার ৭০০ জন যোগ দিয়েছিল।
বাইডেন মূল্যস্ফীতি হ্রাস আইন, ডেমোক্রেট দলের জলবায়ু, জনস্বাস্থ্য ও কর বিষয়ক পদক্ষেপগুলিকে উল্লেখ করেন। সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজেটের ঘাটতি কমানোকে। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, রিপাবলিকানরা শক্তিশালী হলে তারা এসব কর্মসূচিকে সীমিত করার উদ্যোগ নেবে।
'শুধুমাত্র আমরাই (ডেমোক্রেটরা) বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনছি। পুরো জাতি পাচ্ছে তার সুফল। এতে কর্মঠ সাধারণ আমেরিকানরা একটু (করের চাপ থেকে) নির্ভার হতে পারছেন'।
এসময় বাইডেন তার পূর্বসূরি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিও বাক্যবাণ হানেন। ট্রাম্পকে উল্লেখ করেন, 'হার্বার্ট হুভারের পর সবচেয়ে বাজে প্রেসিডেন্ট' বলে। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন বলেও জানান।
এদিকে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ কংগ্রস বা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ- এবার ডেমোক্রেটদের হাত ফস্কে যাবে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তাদের বিচারে, কংগ্রেস দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছে রিপাবলিকান দল। অন্যদিকে, সিনেট নিয়ে দু'দলের লড়াই হয়ে উঠেছে চরম উত্তপ্ত।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগেই অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়ে ডেমোক্রেট দলের সরকার। এসবের প্রভাব ব্যালটে পড়বে বলেও আশঙ্কা করছে দলটি।
মধ্যবর্তী নির্বাচনকে আমেরিকায় বরাবরই প্রেসিডেন্টের পক্ষে জনসমর্থন যাচাই এবং আগামী নির্বাচনে তার দল কতোটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে– তার নির্ণায়ক ভূমিকা রেখে আসছে।