বিশ্বকাপে কাতারে আগত পর্যটকদের সেবা দেবে প্রায় ৮০০০ বাংলাদেশি চালক
ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ উপলক্ষে কাতারের রাজধানী দোহায় প্রবাসী বাংলাদেশি গাড়ি চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, খবর আরব নিউজের। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ বিশ্বকাপ উপভোগ করতে কাতারে আসবেন বলে প্রত্যাশা আয়োজক দেশটির। আর যদি তা হয়, তাহলে বিশ্বকাপ মৌসুমে কাতারের জনসংখ্যা বেড়ে যাবে ৫০ শতাংশ!
ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে আগত পর্যটকদের সেবা দিতে সম্মুখ সারিতে থাকবেন যেসব পেশার মানুষেরা, গাড়ি চালকেরা তাদের মধ্যে অন্যতম। বিভিন্ন ট্যাক্সি কোম্পানি ও রাইড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের আওতায় কর্মরত চালকদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ৮০০০ বাংলাদেশি। তাই দোহায় অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই চালকদের জন্য তিন সপ্তাহের একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় তাদেরকে ইংরেজি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা অর্জন ও সুন্দর আচার-ব্যবহারের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) ডা. মুহম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান আরব নিউজকে বলেন, "গাড়ি চালকেরা যদি পর্যটকদের ভালো সেবা দিতে পারে, তাহলে তা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং এর মাধ্যমে আমাদের দেশের ইতিবাচক ব্র্যান্ডিং করা হবে।"
কাতারের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাংলাদেশি শিক্ষকরা এসে ১৫টি পরিবহন কোম্পানির ৪২০ জন অংশগ্রহণকারীকে প্রশিক্ষণ দেন। যেসব চালক সরাসরি প্রশিক্ষণে যোগ দিতে পারবে না, তারা অনলাইনেও এ প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।
প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারী চালকদের একজন আবদুল মোতালেব। প্রায় এক দশক ধরে কাতারে কাজ করছেন তিনি। মোতালেব বলেন, "যাত্রীদের সাথে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এখানে এসে আমরা ভাষা ব্যবহারের ব্যাপারে কিছু পরামর্শ পেয়েছি। কিভাবে যাত্রীদেরকে সুন্দর করে অভিবাদন জানাতে হবে এবং এই দেশ সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্য দিতে হবে, সেগুলো শেখানো হয়েছে আমাদের। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের খুবই উপকার হয়েছে।"
আরেকজন গাড়িচালক সাইদুল ইসলাম জানান, বিদেশিদের সাথে কথপোকথনের ব্যাপারে তার যে জড়তা ছিল, তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে এই প্রশিক্ষণ। তিনি বলেন, "আগে আমি বিদেশিদের সাথে কথা বলতে ভয় পেতাম। কিন্তু এই প্রশিক্ষণের পর সেটা সহজ মনে হচ্ছে।"
অদূর ভবিষ্যতে কাতারে অভিবাসী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার একটি বড় প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এই মুহূর্তে কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা ৪০০,০০০। এদের মধ্যে অনেকেই স্বাস্থ্যসেবা, ভবন নির্মাণ কাজ ও বিভিন্ন সেবা খাতে নিযুক্ত আছেন।
মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, "আমরা অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। আগামীতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে অন্যান্য খাতে কর্মরতদের জন্যও এ ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে।"