জেড-লাইব্রেরির সঙ্গে যুক্ত দুই রুশ নাগরিককে গ্রেপ্তার
গত সপ্তাহেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফ্রি ই-বইয়ের সবচেয়ে বড় অনলাইন সংগ্রহশালা জেড-লাইব্রেরি। এবার জানা গেল, তার আগেই, এ মাসের শুরুর দিকে, জেড-লাইব্রেরির পেছনের দুই কারিগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর আর্সটেকনিকা ডটকমের।
গতকাল ইউএস ডিপার্টমেন্ট অভ জাস্টিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুই রুশ নাগরিক আন্তন নাপোলস্কি ও ভ্যালেরিয়া এরমাকোভার বিরুদ্ধে জেড-লাইব্রেরি চালানোর মাধ্যমে কপিরাইট আইন ভঙ্গ, অনলাইন অপরাধ ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, অভিযুক্তরা 'চুরি করা' কাজ থেকে বেআইনিভাবে লাভবান হয়েছেন। তারা প্রায়ই কোনো বই বা লেখা প্রকাশ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেগুলো অনলাইনে আপলোড করে দিয়েছেন। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লেখক, প্রকাশক ও বইবিক্রেতারা।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুরোধে নাপোলস্কি ও এরমাকোভাকে গত ৩ নভেম্বর আর্জেন্টিনায় গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্র সরকার জেড-লাইব্রেরির ২৪৯টি পরস্পরসংযুক্ত ওয়েব ডোমেইন জব্দ করে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এরপরই বন্ধ হয়ে যায় জেড-লাইব্রেরি। তার সঙ্গে হারিয়ে যায় অনলাইন লাইব্রেরিটির ১১ মিলিয়ন বইয়ের সংগ্রহও। তবে অনেকেই বলছে, ডার্ক ওয়েবে জেড-লাইব্রেরি এখনও চালু আছে—এবং লাইব্রেরিটি আবার ফিরে আসতে পারে।
টরেন্টফ্রিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তি প্রথম থেকেই জেড-লাইব্রেরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
নাপোলস্কি ও এরমাকোভা দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিপুল জরিমানা গুনতে হতে পারে।
আর্জেন্টিনা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দুই বন্দিকে প্রত্যাবাসনের অনুরোধ পায়নি। তবে শিগগিরই সে অনুরোধ পেতে পারে।
এদিকে জেড-লাইব্রেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও বইপোকারা। অনেকে এই ঘটনাকে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রেট লাইব্রেরি পুড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গেও তুলনা করেছেন।
বহু পাঠকেরই দামি কিন্তু প্রয়োজনীয় বই ও গবেষণা নিবন্ধ কিনে পড়ার সামর্থ্য নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের মতো দেশগুলোতে শিক্ষার্থী, পাঠক, গবেষকদের সামর্থ্য সীমিত। এসব দেশের পাঠকরা তাই নিরুপায় হয়েই জেড-লাইব্রেরির মতো অনলাইন লাইব্রেরিগুলোতে বিনামূল্যে দামি সব বই ও গবেষণা নিবন্ধ ফ্রিতে পড়ার সুযোগ খোঁজেন।