ইউক্রেন যুদ্ধ: সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে, কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/01/12/_128265922_gettyimages-1246091126.jpg)
ইউক্রেনে সামরিক সাফল্য অর্জনে গত কয়েক মাস ধরে প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে রুশ সেনারা। পূর্বাঞ্চলে বাখমুত ও তার আশেপাশের এলাকায় চলছে প্রচণ্ড লড়াই। খবর বিবিসির
বাখমুতের কাছেই অবস্থিত সোলেদার শহর। সেখানেও রক্তক্ষয়ী লড়াই অব্যাহত। এ জনপদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে চলতি শীতকালেই যুদ্ধের মোড় তাদের দিকে ঘুরে যাবে বলে আশা করছে ক্রেমলিন।
সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে?
এর আগে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধাদের নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন জানান, তার ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা সোলেদারের সব এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে এ ঘোষণার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাছাড়া, ওয়াগনারের যোদ্ধারা নিয়মিত রাশিয়ান সেনাবাহিনীর অংশও নয়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোলেদারের দখল নিয়ে লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
আবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কিও বলেছেন, লড়াই চলছে এবং তা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর কিয়েভ। শহরটি দখলে রুশ বাহিনীর চেষ্টা সফল হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
সোলেদার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সোলেদার দখলে নিতে পারলে, এখান থেকে সংগঠিত হয়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনীয় শহর বাখমুতে অভিযান জোরদার করতে পারবে রুশ বাহিনী। বাখমুত সোলেদার থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থিত। ফলে এখান থেকে বাখমুতে কামানের গোলাবর্ষণের স্থানও পেয়ে যাবে তারা।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2023/01/12/_128265919_42ee4bd3-a3f9-4dd6-8681-b9fe99d2188c.jpg)
সোলেদারে আরো রয়েছে গভীর লবণ খনি, যেখানে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেনীয় মিসাইল হামলা থেকে নিরাপদে রাখা যাবে।
সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রিগোঝিনকে সোলেদারের একটি লবণ খনিতে তার সেনাদের সাথে দেখা গেছে। তবে বিষয়টির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।
লবণের এই খনিগুলো বিস্তৃত ভূগর্ভস্থ সূড়ঙ্গের একেকটি বিশাল নেটওয়ার্ক। ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অনুপ্রবেশে রাশিয়ার জন্য এসব সুড়ঙ্গ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
তবে সবগুলো সুড়ঙ্গ ব্যবহার উপযোগী কিনা, বা সেগুলো দিয়ে কোনখানে যাওয়া যাবে– সে সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2023/01/12/_128265926_31f6d8b5-248b-486e-b27f-2b0a52e024cd.jpg)
শহরটির খনিগুলোয় মূল্যবান খনিজ লবণ ও জিপসাম রয়েছে। ফলে এই সম্পদের নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে থাকবে, তারা আর্থিকভাবেও লাভবান হবে।
তবে শহরটি নিয়ে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো– এর প্রতীকী তাৎপর্য।
ইউক্রেনে অবস্থান করা বিবিসির প্রতিবেদক জেমস ওয়াটারহাউস বলেন, 'তারা এখানে সর্বশক্তি ব্যয় করছে, কারণ জয় তাদের প্রচারযুদ্ধে কাজে লাগবে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য যা হবে বড় পুরস্কার, তিনি নিজ দেশের যুদ্ধ সমালোচকদের সামনে সোলেদারের বিজয়কে উপস্থাপন করবেন'।
বাখমুতের গুরুত্ব
সোলেদারের অন্যান্য গুরুত্ব বাদ দিলেও, এখান থেকে বাখমুত দখলের গুরুত্বটা খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ, নিকটবর্তী বাখমুতের দখল রুশ বাহিনীর জন্য বড় অর্জন হবে।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট (রুসি)'র ইউরোপীয় নিরাপত্তা গবেষক এডওয়ার্ড আর্নল্ড বলেন, 'বাখমুতের দখল পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনীকে চাঙ্গা করবে, যা তাদের এখন খুবই দরকার। গত সেপ্টেম্বর থেকে তারা এখানে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে'।
তবে বাখমুতের দখল যুদ্ধের সামগ্রিক কৌশলগত তাৎপর্য খুব একটা বদলাবে না বলেও মনে করেন তিনি।